কেমুসাস বইমেলা উপলক্ষে কবি সাহিত্যিকদের র্যালী
বই মানুষকে মহৎ করে তোলে। বই সভ্যতার চেতনার দুয়ার খুলে দেয়। মহান স্বাধীনতার মাসে দেশের প্রাচীনতম সাহিত্য প্রতিষ্ঠান কেন্দ্রীয় মুসলিম সাহিত্য সংসদ আয়োজন করেছে সপ্তাহ ব্যাপী সপ্তম কেমুসাস বইমেলা‘১৪কে স্বাগত জানিয়ে সিলেটের কবি সাহিত্যিকরা নগরীতে একটি র্যালী বের করে। র্যালীতে বক্তারা বলেন, পরিবর্তিত সময়েও বইয়ের বিকল্প নেই। বই মানুষের সর্বশ্রেষ্ঠ বন্ধু। মননশীল সমাজ গঠনে বইপাঠের বিকল্প নেই। বই মানুষকে শুধু আনন্দ দেয় না, মনে শক্তি জোগায়। অতি অল্প খরচে বই পড়ে জ্ঞান অর্জন করা যায়। বই ছাড়া অন্যকোনভাবে আর জ্ঞান অর্জন সম্ভব নয়। নেশা মাত্রই ক্ষতিকর হলেও বইয়ের নেশা হিতকর। বই না পড়ার কারণে ক্ষতিকর নেশার কবলে পড়ে যুব সমাজ বিপথে পরিচালিত হয়। সমাজ অসুস্থ হয়ে পড়ে। এই অসুস্থ সমাজকে সুস্থ করার জন্য বই পড়তে হবে।
কেন্দ্রীয় মুসলিম সাহিত্য সংসদের উদ্যেগে ও সিলেট সিটি কর্পোরেশনের সহযোগিতায় সাহিত্য সংসদের সাবেক সভাপতি দার্শনিক দেওয়ান মোহাম্মদ আজরফের স্মৃতির উদ্দেশ্যে উৎসর্গকৃত বইমেলাকে স্বাগত জানিয়ে আয়োজিত র্যালী অনুষ্ঠিত হয়।
মঙ্গলবার বিকালে ২০ থেকে ২৬ শে মার্চ পর্যন্ত সপ্তাহব্যাপী সপ্তম কেমুসাস বইমেলা‘১৪ কে স্বাগত জানিয়ে নগরীর দরগাগেইটস্থ কেমুসাস সাহিত্য প্রাঙ্গন হতে কবি ,সাহিত্যিক,ঔপনাসিক, ছড়াকার, শিল্পী ও লেখকদের এক র্যালী বের হয়। আনন্দঘন এ র্যালীতে কেমুসাসের সহ-সাধারণ সম্পাদক গল্পকার সেলিম আউয়ালের পরিচালনায় সভাপতিত্ব করেন সপ্তম কেমুসাস বইমেলা‘১৪ এর আহবায়ক প্রবীণ সাংবাদিক আফতাব চৌধুরী। এছাড়াও অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন ও উপস্থিত ছিলেন, সপ্তম কেমুসাস বইমেলা‘১৪ এর সদস্য সচিব কবি মুহিত চৌধুরী, প্রবীণ আইনজীবি আজিজুল মালিক চৌধুরী, কেমুসাসের সহ-সভাপতি সইফুল করিম চৌধুরী হায়াৎ, পাঠাগার সম্পাদক কাউন্সিলর সৈয়দ মিসবাহ উদ্দিন, সাহিত্য ও সংস্কৃতি বিষয়ক সম্পাদক গবেষক সৈয়দ মবনু, মাসিক ভিন্নধারা সম্পাদক জাহেদুর রহমান চৌধুরী, প্রভাষক কবি বাসিত ইবনে হাবীব, শাবির সহকারী রেজিষ্ট্রার আহমদ মাহবুব ফেরদৌস, প্রভাষক দেওয়ান মাহমুদ রাজা চৌধুরী, এডভোকেট কবি আবদুল মুকিত অপি, এডভোকেট আব্দুস সাদেক লিপন, গোলাপগঞ্জ প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মাহফুজ আহমেদ চৌধুরী, রোটারিয়ান আব্দুল মুহিত দিদার, প্রভাষক আলমগীর হোসেন, মানবাধিকার কর্মী মোঃ শাহ আলম, গল্পকার রিমা বেগম পপি, ছড়াকার মাহমুদ পারভেজ, সৈয়দ কামরুল ইসলাম, আদনান আহমদ প্রমুখ।
উল্লেখ্য, কর্মসূচীর মধ্যে রয়েছে ১৮ মার্চ মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে ৪টায় বইমেলা সফলের লক্ষে র্যালীর আয়োজন। ২০ মার্চ বৃহস্পতিবার বেলা ৩টায় বইমেলার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন, ২১ মার্চ শুক্রবার, বিকেল ৪টায় ক ও খ গ্রু“পের চিত্রাংকন প্রতিযোগিতা, সন্ধ্যে সাড়ে ৬টায় স্বরচিত কবিতা পাঠের আসর, ২২ মার্চ শনিবার বিকেল ৪টায় ক ও খ গ্রু“পের আবৃত্তি প্রতিযোগিতা, সন্ধ্যে সাড়ে ৬টায় গ্রন্থ প্রকাশনা উৎসব ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, ২৩ মার্চ রোববার বিকেল ৪টায় গ গ্রু“পের চিত্রাংকন প্রতিযোগিতা, সন্ধ্যে সাড়ে ৬টায় গ্রন্থ প্রকাশনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, ২৪ মার্চ সোমবার বিকেল ৪টায় গ ও ঘ গ্রু“পের কবিতা আবৃত্তি প্রতিযোগিতা, সন্ধ্যে সাড়ে ৬টায় গ্রন্থ প্রকাশনা অনুষ্ঠান ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, ২৫ শে মার্চ মঙ্গলবার বিকেল ৪টায় ক ও খ গ্রু“পের হাতের লেখা প্রতিযোগিতা ও সন্ধ্যে সাড়ে ৬টায় প্রকাশনা অনুষ্ঠান ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, ২৬ শে মার্চ বুধবার বিকেল সাড়ে ৪টায় মহান স্বাধীনতা দিবসের আলোচনা সভা, সন্ধ্যে সাড়ে ৬টায় সমাপনী অনুষ্ঠান ও পুরস্কার বিতরণী।
প্রতিযোগিতকার বিষয় হচ্ছেÑচিত্রাংকন প্রতিযোগিতাঃ ‘ক’ গ্রু“প (প্রথম থেকে তৃতীয় শ্রেণীর শিক্ষার্থী বিষয় : ইচ্ছে মতো মাধ্যম : ইচ্ছে মতো ‘খ’ গ্রু“প ( চতুর্থ থেকে ষষ্ঠ শ্রেণীর শিক্ষার্থী ) বিষয়: আমাদের ছোট গ্রাম
মাধ্যম : জল রং ‘গ’ গ্রু“প (সপ্তম থেকে দশম শ্রেণীর শিক্ষার্থী বিষয়: মুক্তিযুদ্ধ মাধ্যম : পেন্সিল স্কেচ আবৃত্তি প্রতিযোগিতা ‘ক’ গ্রু“প ( প্রথম থেকে তৃতীয় শ্রেণীর শিক্ষার্থী) কবিতা : আমি হব (আমি হব সকাল বেলার পাখি ) কবি কাজী নজরুল ইসলাম ‘খ’ গ্র“প ( চতুর্থ থেকে ষষ্ঠ শ্রেণীর শিক্ষার্থী) কবিতা: আমাদের ছোট নদী, কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ‘গ’ গ্রু“প ( সপ্তম থেকে এসএসসি পরীক্ষার্থী ) কবিতা: তোমাকে পাবার জন্য হে স্বাধীনতা, কবি শামসুর রাহমান, ‘ঘ’ গ্রু“প ( কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ) কবিতা: পাঞ্জেরী, কবি ফররুখ আহমদ, ক ও খ গ্র“প হাতের লেখা প্রতিযোগিতা বিষয় : প্রতিযোগিতার সময় জানানো হবে। বিস্তারিত তথ্যের জন্যে প্রতিদিন বেলা ৩টা থেকে রাত ৯টার মধ্যে সাহিত্য সংসদ কার্যালয়ে যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে।
বক্তারা আরো বলেন, বই পড়া হচ্ছে জ্ঞান অর্জনের উৎকৃষ্টতম উপায়। বিন্দুর মধ্যে সিন্ধু খুঁজতে হলে বই পড়ার কোন বিকল্প নেই। বর্তমানে ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার যুগে বই পড়ার প্রবণতা অনেক কমে গেছে। কিন্তু প্রকৃত জ্ঞান অর্জনের জন্য বই পড়া ছাড়া আর কোন উপায় নেই। তাই বই পড়ার অভ্যাসকে উৎসাহিত করতে বিভিন্ন পদক্ষে গ্রহণ করতে হবে। বই না পড়লে মানুষের দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন হয় না। মনের মাঝে কুসংস্কার থেকে যায়। বই পড়লে প্রগতিশীল চিন্তা চেতনার বিকাশ ঘটে। বই পড়ে জীবনকে সহ্য করার মতো ক্ষমতা অর্জন করা যায়। বক্তারা বই পড়ার আন্দোলন গড়ে তোলার উপরও গুরুত্বারোপ করেন।