রাশিয়া-ইউরোপ উত্তেজনায় উদ্বিগ্ন পুঁজিবাজার
জ্বালানিসহ অনেক ক্ষেত্রেই রাশিয়া সঙ্গে ইউরোপের নিবিড় অর্থনৈতিক সম্পর্ক। চলমান ইউক্রেন সঙ্কটের জের ধরে মস্কোর উপর আরও কড়া অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা চাপানো হলে ইউরোপেরও ক্ষতি হতে পারে। প্রায় তিন সপ্তাহ পর গত সোমবার ইউরোপের পুঁজিবাজার এক ধাপে অনেকটা চাঙ্গা হয়ে উঠেছিল। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে উৎপাদন বেড়ে চলায় এবং কোনো হিংসা ছাড়াই ক্রিমিয়ায় গণভোট সম্পন্ন হয়েছে বলে বাজার সন্তুষ্ট ছিল। তবে গত মঙ্গলবারই আবার দরপতন ঘটেছে। রাশিয়ার উপর ইউরোপ ও আমেরিকার নিষেধাজ্ঞা এখনও তেমন কড়া না হলেও ধাপে ধাপে তার মাত্রা বাড়ানো হতে পারে। উত্তেজনা আরও বাড়লে ইউরোপের অর্থনীতির উপর নতুন করে চাপের আশঙ্কা থেকে যাচ্ছে। তবে ইউরো এলাকার সামগ্রিক পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। মূল্যস্ফীতির হার কমেই চলেছে। ফেব্রুয়ারি মাসে তার হার ছিল মাত্র ০.৭ শতাংশ। ১৯৯৯ সালে ইউরো চালু হওয়ার পর মূল্যস্ফীতির হার কখনো এত কমেনি। অনেকে মনে করছেন, আপাতত এমনটাই বজায় থাকবে।
এদিকে ইউরোপীয় বেলআউট তহবিল ইএসএম-কে কেন্দ্র করে সম্প্রতি যে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছিলো, গত মঙ্গলবার জার্মান সাংবিধানিক আদালতের এক রায়ে তা কেটে গেছে। ৫০ হাজার কোটি ইউরো মূল্যের এই তহবিলে জার্মানির অংশগ্রহণ বৈধ কিনা, তা নিয়ে আদালতে প্রশ্ন তোলা হয়েছিলো। আদালত সরকারের পক্ষেই রায় দিয়েছে। ফলে বাজারে স্বস্তির নিঃশ্বাস পড়ছে। আসন্ন ইউরোপীয় পার্লামেন্ট নির্বাচনের আগে ব্যাংকিং ইউনিয়ন নিয়ে অগ্রগতির চেষ্টা চলছে। কিন্তু জার্মান ব্যাংকিং সংগঠন বিষয়টি নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছে। তাদের মতে, কোনো ব্যাংক নির্ধারিত কিছু স্ট্রেস টেস্ট পাশ করলেই তার অস্তিত্ব নিশ্চিত এমনটা সব ক্ষেত্রে মনে করার কারণ নেই।
উল্লেখ্য, অক্টোবর মাসে এই পরীক্ষার ফল প্রকাশিত হবে। নভেম্বর থেকে ইসিবি ইউরোপীয় ব্যাংকিং তত্ত্বাবধায়ক হিসেবে নতুন ভূমিকা শুরু করবে। গত শুক্রবার মুডিস রেটিং এজেন্সি সামগ্রিকভাবে ইউরোপীয় ইউনিয়নের অর্থনীতিকে স্থিতিশীল হিসেবে মূল্যায়ন করেছে। এতকাল রেটিং ছিল নেতিবাচক। জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল ইটালির নতুন প্রধানমন্ত্রী মাটেও রেনসি-র সাহসি উদ্যোগের প্রশংসা করেছেন। একদিকে সংস্কার, অন্যদিকে অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে স্টিমুলাস প্যাকেজের দাওয়াই প্রতিযোগিতার বাজারে ইটালির অবস্থান আরও শক্তিশালী করবে বলে জার্মানি আশা করছে। পরবর্তী কিস্তির আর্থিক সহায়তা পেতে গ্রিস এখনো আন্তর্জাতিক দাতাদের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে। স্পেন অতীতের দুর্বলতা ঝেড়ে ফেলে চলতি বছরের প্রথম ৩ মাসে কমপক্ষে ০.২ শতাংশ প্রবৃদ্ধির আশা করছে। এএফপি, রয়টার্স।