৮ এপ্রিল সাংবাদিকদের মহাসমাবেশ ও কর্মবিরতি

সরকার ঘোষিত অষ্টম ওয়েজবোর্ড’র অসংগতি দূরীকরণ ও বাস্তবায়ন, গণমাধ্যমে ছাঁটাই বন্ধ ও বন্ধ মিডিয়াগুলো খুলে দেয়ার দাবীতে আগামী ৮ এপ্রিল জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে মহাসমাবেশের ডাক দিয়েছে সাংবাদিক শ্রমিক-কর্মচারী ঐক্য পরিষদ। একই সাথে ওইদিন সারাদেশের প্রতিটি ইউনিয়ন ও প্রেস ক্লাবে একযোগে বিক্ষোভ সমাবেশসহ ৪ ঘন্টার প্রতীক কর্মবিরতি পালন করা হবে।  এর আগে আজ ২৩ মার্চ থেকে ৫ এপ্রিল পর্যন্ত ঢাকার সকল সংবাদপত্র ও সংবাদ সংস্থায় সমাবেশ ও ঢাকার বাইরে প্রতিটি ইউনিয়নে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। গতকাল শনিবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে ঐক্য পরিষদ আয়োজিত পূর্ব ঘোষিত বিক্ষোভ সমাবেশে নেতৃবৃন্দ এ কর্মসূচির ঘোষণা করে সরকারসহ সংশ্লিষ্টদের উদ্দেশ্যে বলেন, আমাদের দাবি ন্যয়সংগত। এগুলো মেনে মর্যাদার সাথে বাঁচতে দিন। অন্যথায় সাংবাদিক সমাজ আন্দোলন সংগ্রাম করেই দাবি পূরণে বাধ্য করবে।
বিক্ষোভ সমাবেশের সভাপতি হিসেবে কমসূচি ঘোষণা করেন বাংলাদেশ ফেডারেল সংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) সভাপতি ও সাংবাদিক শ্রমিক কর্মচারী ঐক্য পরিষদের কো-কনভেনর রুহুল আমিন গাজী।  কর্মসূচি ঘোষণা দিয়ে তিনি বলেন, অষ্টম ওয়েজবোর্ডের যে অসঙ্গতি রয়েছে তা দূর করা ও পাঁচদফা দাবিতে ৮ এপ্রিল মহাসমাবেশ হবে।  এদিন সারাদেশের ইউনিয়নগুলোতেও সমাবেশ করা হবে।  একইদিন বেলা ১১টা থেকে ৩টা পর্যন্ত  চার ঘণ্টা কর্মবিরতি পালন করবেন সাংবাদিকরা। এছাড়া, আজ ২৩ মার্চ থেকে ৫ এপ্রিল পর্যন্ত প্রতিটি গণমাধ্যমের সামনে ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন (ডিইউজে) ও বিএফইউজের নেতৃত্বে সমাবেশ করা হবে।
বিএফইউজে সভাপতি রুহুল আমিন গাজী আরও বলেন, অষ্টম ওয়েজবোর্ডে মালিকদের সুবিধা দেয়া হয়েছে।  সাংবাদিক ও কর্মচারীদের সুবিধা দিতে মালিকরা ব্যর্থ হয়েছেন। প্রতিবারই ওয়েজবোর্ড ঘোষণার আগে খসড়া প্রকাশ করে সকলের মতামত নেয়া হয়। কিন্তু এবারই তা করেনি সরকার। আমাদের সকল দাবিকে উপেক্ষা করে মালিকদের দাবী মেনে নিয়েই সরকার নতুন তামাশার জন্ম দিয়েছে। এতে মালিকদের আয় বাড়িয়ে সাংবাদিক-কর্মচারীদেরকে লোকসানের মধ্যে ফেলা হয়েছে।
তথ্যমন্ত্রীকে উদ্দেশ করে তিনি বলেন, আপনি সাংবাদিক মহলে আগুন জ্বালিয়ে দিয়েছেন। তাই সাংবাদিকদের দাবি মানা না হলে কিভাবে বিদায় নেবেন তা চিন্তা করুন। তিনি বলেন, ৮ম ওয়েজ বোর্ডের সংশোধনী যতক্ষন পর্যন্ত না হবে ততক্ষণ আন্দোলন-সংগ্রাম চলবে। তিনি অবিলম্বে বন্ধ মিডিয়াগুলো খুলে দেয়ার জন্য সরকারের কাছে দাবি জানান।
বিএফইউজের সভাপতি মঞ্জুরুল আহসান বুলবুল তথ্যমন্ত্রীকে উদ্দেশ করে বলেন, কয়েকজনের কথায় গণমাধ্যমের বিরুদ্ধে অবস্থান নেবেন না।  যদি গণমাধ্যমের উন্নতি করতে হয় তাহলে সাংবাদিক নেতাদের সঙ্গে কথা বলে সিদ্ধান্ত নিন।  তিনি আরো বলেন, সরকারের দায়িত্ব গণমাধ্যমকে সমৃদ্ধ করা।  কিন্তু বর্তমান তথ্যমন্ত্রী সাংবাদিক মহলে অরাজকতা বাড়াচ্ছেন। তিনি বলেন, এই সরকারকেই সংবাদ পত্রের অরাজকতা দূর করতে হবে। তানা হলে আমরা এত সহজে ছেড়ে দেবনা। সাংবাদিকদের প্রাপ্য মর্যাদা সঠিকভাবে দিতে হবে। যারা ওয়েজবোর্ড বাস্তবায়ন করবে না তাদের সরকারী সুযোগসুবিধা বঞ্চিত করতে হবে।
বিএফইউজে মহাসচিব আব্দুল জলিল ভুঁইয়া বলেন, ওয়েজবোর্ডে সাংবাদিকদের বেতন বৃদ্ধি হয়ে থাকে।  কিন্তু এই প্রথম বেতন কমানো হয়েছে। তিনি আরো বলেন, এবারই প্রথম ওয়েজবোর্ড সংশোধনের জন্য আন্দোলন করতে হচ্ছে।  তিনি অবিলম্বে সরকারকে দাবি মেনে নেয়ার আহবান জানান।
বিএফইউজের মহাসচিব শওকত মাহমুদ বলেন, বর্তমান মাসের মধ্যে ওয়েজ বোর্ড সংশোধন না করলে তথ্যমন্ত্রীকে গণমাধ্যমের শুক্র হিসেবে চিহ্নিত করা হবে।
ডিইউজের সভাপতি আলতাফ মাহমুদ বলেন, সাংবাদিক-কর্মচারীদের রাস্তায় নামানো হয়েছে। এবার অফিসে অফিসে আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।
মতিউর রহমান তালুকদার বলেন, আজ গণতান্ত্রিক সরকারের দাবিদার এই সরকার যে ওয়েজ বোর্ড দিয়েছে, তাতে বৈষম্য সৃষ্টি করা হয়েছে।
খায়রুল ইসলাম বলেন, খসড়া দেখানো ছাড়া ওয়েজ বোর্ডের গেজেট করে এ সরকার লুকোচুরি করেছে। তাতে কোন লাভ হবেনা। অসংগতি দিয়ে আমাদের সাথে প্রহসন করেছে এই সরকার।
সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন, ডিইউজে সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম প্রধান, কুদ্দুস আফ্রাদ, প্রেস শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি আলমগীর হোসেন, সাধারণ সম্পাদক খায়রুল ইসলাম, মতিউর রহমান তালুকদার, এম এ আজিজ, ওমর ফারুক, শাবান মাহমুদ, ফয়জুল আলম, দীপক চন্দ্র রায়, ফারুক হাওলাদার গোলাম সরওয়ার আজাদ, কামাল উদ্দিন প্রমুখ, সিইউজের সভাপতি শহীদুল ইসলাম।

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও দেখুন...
Close
Back to top button