বিমান এমডির পদত্যাগ

Kevin Steeleএক বছরে প্রায় সাত শ’ কোটি টাকা লোকসানের বোঝা মাথায় নিয়ে পদত্যাগ করতে বাধ্য হলেন বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ব্রিটিশ নাগরিক কেভিন জন স্টীল। তবে বিমানের মুখপাত্র খান মোশাররফ হোসেন জানান, কেভিন স্বাস্থ্যগত সমস্যা ও ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে পদত্যাগ করেছেন।
রোববার রাতে বিমানের মুখপাত্র খান মোশাররফ হোসেন জানান, বাংলাদেশে আসার পর কেভিনের টিবি রোগ ধরা পড়ে। এছাড়া পর পর দুবার স্ট্রোক করেন। এসব কারনে তিনি বিচলিত হয়ে পড়েন। গত জানুয়ারী মাসেই তিনি এমডির পদ থেকে পদত্যাগের ইচ্ছার কথা জানিয়ে লিখিতভাবে পরিচালনা পর্ষদকে জানান। পরিচালনা পর্ষদের সদস্যরা গত বোর্ড মিটিংয়ে কেভিনের স্বাস্থ্যগত সমস্যার কথা বিবেচনা করেই তার পদত্যাগপত্র গ্রহণ করে নেন। গত ১৭ মার্চ তার একবছর পূর্ণ হয়। বিমানের মুখপাত্র মোশাররফ হোসেন আরো জানান, গত বোর্ড মিটিংয়ের বৈঠকে কেভিন মাথা ঘুরিয়ে চেয়ার থেকে পড়ে যান। আধঘন্টা তিনি বেহুশ ছিলেন। তার বয়স এখন ৬৪। এই অবস্থায় টিবি রোগ ও স্ট্রোক হওয়ার পর তা পরিবারের সদস্যরা উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন।
তবে বিমানের বলাকা ভবন সুত্রে জানা গেছে, কেভিন বিমানে যোগ দেয়ার পর থেকেই সব সিদ্ধান্ত একাই নিচ্ছিলেন। এরমধ্যে বিদেশের বিভিন্ন স্টেশনে বেশকিছু জিএসএ নিয়োগ দেয়া ছাড়া বিমানকে লাভের মুখ দেখাতে উচ্চ বেতনে বিদেশী ২ কনসালটেন্টসহ ৫ জনকে নিয়োগ দেন তিনি। একইভাবে নিজ উদ্যোগে ঢাকা-ইয়াংগুন রুট চালু করলেও অদ্যাবধি ওই রুট থেকে লাভের মুখ দেখতে পারেনি বিমান। প্রতি ফাইটে শুধু লোকসান গুনতে হচ্ছে বিমানকে। আগামী ৩১ মার্চ ঢাকা-রোম-ফ্রাংফ্রুট রুট চালু হতে যাচ্ছে। এটিও তার সিদ্ধান্তে হয়েছে। এভিয়েশন বিশেষজ্ঞরা বলছেন এটিও লোকসানী প্রজেক্টে পরিনত হবে।
বিমান সুত্রে জানা গেছে, বিমানে কেভিন যোগ দেয়ার একবছরে বিমানের রাজস্ব আয় কমেছে প্রায় ৭’ কোটি টাকা। ২০১৩ জুলাই থেকে ২০১৪ জানুযারীর ৭ মাসের পরিসংখ্যানে জানা যায়, এসময়ে প্রায় ৪০০ কোটি টাকা বিমান আয় থেকে বঞ্চিত হয়েছে। গড়ে প্রতিমাসে ৬০ কোটি টাকা করে আয় কমেছে। এরমধ্যে বিমানে যাত্রীর সংখ্যা কমেছে ২ লাখ। তবে কার্গো পরিবহন এসময়ে স্থিতিশীল ছিল। এসব বিষয় নিয়েই মূলত গত বৈঠকে বিমানের পরিচালনা পর্ষদের সদস্যরা কেভিনকে প্রশ্নবানে জর্জরিত করেন। তারা তার কাছে জানতে চান, নতুন নতুন উড়োজাহাজ বহরে যোগ হওয়া, উচ্চ বেতনে কনসালটেন্ট নিয়োগ দেয়ার পরও কেনো বিমান লোকসান দিয়ে যাচ্ছে। এক পর্যায়ে তাকে বলা হয়, আপনি যদি বিমান ম্যানেজমেন্ট চালাতে ব্যর্থ হন তাহলে পদত্যাগ করুন। এরপরই কেভিন পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নেন বলে সুত্রে জানা গেছে। সুত্র আরো জানায়, এর আগে কেভিন তার বেতন আরো ২ লাখ টাকা বাড়ানোর জন্য পরিচালনা পর্ষদের বৈঠকে প্রস্তাব দেন। বর্তমানে কেভিনের পেছনে ২২ লাখ টাকা বেতন ছাড়াও বাসা ভাড়া ও অন্যান্য মিলিয়ে ৩০ লাখ টাকা খরচ হচ্ছে।

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও দেখুন...
Close
Back to top button