জামায়াতের বিরুদ্ধে তদন্ত শেষ
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর বিরুদ্ধে আনীত মুক্তিযুদ্ধকালীন ‘ক্রিমিনাল সংগঠন’ অভিযোগের তদন্ত চূড়ান্তভাবে শেষ হয়েছে। চিফ প্র্রসিকিউটরের কাছে মঙ্গলবার বেলা ১১টার এ তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হবে বলে গণমাধ্যমকে জানান তদন্ত সংস্থার প্রধান আইজিপি আব্দুল হান্নান খান।
তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধকালীন অপরাধের ষড়যন্ত্র ও পরিকল্পনা, মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ, যুদ্ধাপরাধ, গণহত্যা, কমন রেসপনসিবিলিটির অভিযোগে জামায়াতের বিরুদ্ধে তদন্ত সম্পন্ন হয়েছে।
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা গত বছরের ১৮ আগস্ট থেকে প্রায় আট মাস বিভিন্ন নথিপত্র, স্থান, পরিদর্শন করে জামায়াতের বিরুদ্ধে তদন্ত শেষ করে। এছাড়া ট্রাইব্যুনালে পরিচালিত বিভিন্ন মামলায় দাখিল করা নথিপত্রকেও জামায়াতের বিরুদ্ধে প্রমাণপত্র হিসেবে গ্রহণ করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।
আব্দুল হান্নান খান বলেন, মঙ্গলবার চিফ প্রসিকিউটরের কাছে তদন্ত প্রতিবেদনটি হস্তান্তর করা হবে। এরপর প্রসিকিউশন পক্ষ পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে ফরমাল চার্জ ট্রাইব্যুনালে দাখিল করবেন। আদালত যদি অভিযোগ গ্রহণ ও গঠন করেন তাহলেই জামায়াতের বিপক্ষে বিচার শুরু হবে।
তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কিত বাংলা একাডেমি থেকে প্রদত্ত তথ্যাবলী, পত্রিকার কাটিংসহ বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহ করে এ তদন্ত করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, মুক্তিযুদ্ধকালীন মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারের জন্য গঠিত ট্রাইব্যুনালের দেয়া অধিকাংশ রায়ে জামায়াতকে অপরাধী সংগঠন (ক্রিমিনাল অর্গানাইজেশন) বলে অভিহিত করা হয়েছে। একই সঙ্গে স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তির কোনো ব্যক্তিকে যেন রাষ্ট্রীয় কোনো পদে অধিষ্ঠিত করা না হয় সে ব্যাপারেও পর্যবেক্ষণ দেন ট্রাইব্যুনাল।
আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনালস) অ্যাক্ট ১৯৭৩ আইনে মুক্তিযুদ্ধকালীন অপরাধের জন্য কোনো সংগঠনের বিরুদ্ধে বিচার করার কোনো বিধান ছিল না। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকার ২০০৯ সালে এ আইনটি সংশোধন করার সময়ও এমন কোনো বিধান রাখেনি। পরবর্তী সময়ে গণজাগরণ মঞ্চের চাপের মুখে ২০১৩ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি সংসদে আইনটি পুনরায় সংশোধন করা হয়। সেখানে রাষ্ট্রপক্ষের আপিলের সুযোগ ও ব্যক্তির পাশাপাশি অপরাধী হিসেবে সংগঠনেরও বিচার করার বিধান সংযুক্ত করা হয়। যার ফলে জামায়াতের বিচার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুানালে করা সম্ভব হচ্ছে।