জামায়াতের বিরুদ্ধে ৭ অপরাধের অভিযোগ
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা বলেছে— একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধকালে জামায়াতে ইসলামী ৭ ধরনের অপরাধের সাথে জড়িত ছিল। তদন্তকারী সংস্থার তদন্তে এ বিষয়টি প্রকাশ পেয়েছে। সেই সাথে দল হিসেবে জামায়াতকে নিষিদ্ধ করার সুপারিশ করেছে সংস্থাটি। একই সাথে দৈনিক সংগ্রাম পত্রিকা নিষিদ্ধের সুপারিশ করা হয়।
মঙ্গলবার বেলা ১১টায় ধানমন্ডির সেফ হোম কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তদন্ত সংস্থার প্রধান সমন্বয়ক (আইজিপি) আবদুল হান্নান খান এ তথ্য জানিয়েছেন।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, ভবিষ্যতে জামায়াতের আদর্শে কেউ যেন ভিন্ন নামে রাজনীতি করতে না পারে তারও সুপারিশ করা হয়েছে। জামায়াতের নির্মাণাধীন ১০৯টি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে প্রতিবেদনে।
প্রতিবেদনে ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ থেকে ১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত সক্রিয় জামায়াতের সকল স্তরের নেতাদের অভিযুক্ত করা হয়। এদের মধ্যে বর্তমান জামায়াতের ৫২জন নেতার নাম উল্লেখ করা হয়েছে। এদের মধ্যে কয়েকজনকে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে সাজা দেওয়া হয়েছে। জামায়াতের বিরুদ্ধে সমগ্র বাংলাদেশে তদন্ত করে প্রতিবেদটি তৈরী করা হয় বলা জানানো হয় সংবাদ সম্মেলনে। মোট ৭০ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যের ভিত্তিতে ৩৭৩ পৃষ্ঠার এ প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে। প্রতিবেদনের সঙ্গে বিভিন্ন জব্দতালিকা ও দালিলিক প্রমাণপত্র আছে ৭ খন্ডের মোট ২৩০৩ পৃষ্ঠার। এ ছাড়া অন্যান্য দলিল ১০ খন্ডে (৩৭৬১ পৃষ্ঠা) এর সঙ্গে যুক্ত করা হয়েছে।
জামায়াতের বিরুদ্ধে একাত্তরে বিভিন্ন অপরাধ সংঘটনের পরিকন্না ও ষড়যন্ত্র, হত্যা, গণহত্যাসহ মানবতাবিরোধী বিভিন্ন অপরাধের অভিযোগ পাওয়া গেছে তদন্তে।
তদন্ত প্রতিবেদন ও আনুষঙ্গিক নথিপত্র আজই ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটরের কার্যালয়ে দাখিল করা হবে। এরপর প্রসিকিউশন পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে প্রতিবেদনটি ট্রাইব্যুনালে দাখিল করবে।
গত বছরের ১ আগষ্ট হাইকোর্ট জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন অবৈধ ঘোষণা করে রায় দেন। এর পর ৭ নভেম্বর নির্বাচন কমিশন নিবন্ধন বাতিল করে দলটিকে নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষণা করে।
গত বছরের ১৮ আগস জামায়াতের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা। প্রায় আট মাস পর বিভিন্ন নথিপত্র, স্থান পরিদর্শন করে জামায়াতের বিরুদ্ধে তদন্ত চুড়ান্ত করা হয়েছে।