ষড়যন্ত্রীদের কারণে পরাজিত হয়েছি : শামীম
সিলেট সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী আবুল কাহের শামীম বলেছেন, শাসক দলের সাথে বিএনপি’র অভ্যন্তরে ঘাপটি মেরে থাকা একটি কুচক্রী মহলের ষড়যন্ত্রে তিনি উপজেলা নির্বাচনে পরাজিত হয়েছেন। ওই মহল শাসক দলের প্রার্থীকে বিজয়ী করতে উঠে-পড়ে লাগে বলে তিনি মন্তব্য করেন।
মঙ্গলবার নগরীর একটি হোটেলে উপজেলা নির্বাচনউত্তর জণাকীর্ণ এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি একথা বলেন। তিনি বলেন, ৩৫ বছরের রাজনৈতিক জীবনে আমি কখনো অন্যায়ের কাছে মাথানত করিনি। সততার ওপর সবসময় রাজনীতি করেছি। তিনি বলেন, স্বৈরাচার এরশাদ বিরোধী আন্দোলনে আমি পাঁচ পাঁচ বার জেল খেটেছি। বর্তমান সরকারের আমলেও আমার বিরুদ্ধে তিন তিনটি মামলা হয়েছে। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমি সবসময়ই বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদ ও ইসলামী মূল্যবোধে বিশ্বাসী।
আবুল কাহের শামীম বলেন, ১৯ দলীয় নেত্রী বিএনপি’র চেয়ারপার্সন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার সাথে সাক্ষাত করে তার সমর্থন নিয়ে জনসেবার মহান ব্রতকে সামনে রেখে সদর উপজেলার নির্বাচনী ময়দানে জনগণের কাছে তাদের মহামূল্যবান ভোট প্রার্থনা করি। বিগত ৫ জানুয়ারীর ভোটার বিহীন সংসদ নির্বাচনের প্রতিবাদে এবং জনগণের ভোটাধিকার ফিরিয়ে আনার আন্দোলনের অংশ হিসাবে আমি এই নির্বাচনে অবতীর্ণ হই। যখন এই অঞ্চলের জনগণ তাদের প্রতিনিধি হিসেবে আমাকে নির্বাচিত করার মানসে আনারস মার্কার পক্ষে গণজোয়ার সৃষ্টি করেছে ঠিক তখনি শাসক দলের সাথে আঁতাত করে দলের ভিতরে বসে থাকা একটি কু-চক্রীমহল কালো টাকার জোরে আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচারের লিপ্ত হয়। দেশ নেত্রী বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার সমর্থিত প্রার্থীর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের দায়ে এবং দলের কর্মকান্ড অমান্য করায় দল থেকে ঐ প্রার্থীকে বহিষ্কার করা হয়। কিন্তু ষড়যন্ত্রকারীরা চুপ থাকেনি। যখন আনারস মার্কায় বিজয় প্রায় সুনিশ্চিত, সদর উপজেলা প্রতিটি প্রান্তে আমার পক্ষে যখন গণজোয়ার সৃষ্টি হয়েছে, দলের প্রতিটি নেতাকর্মী যখন নির্বাচনী মাঠে কাজে ব্যস্ত-ঠিক তখনই নির্বাচনের ৪ দিন পূর্বে কালো টাকার মাধ্যমে একটি সিন্ডিকেট সৃষ্টি করে কেন্দ্র্রীয় দপ্তরকে ভূল তথ্য পরিবেশন করে বিএনপি তথা বেগম খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের সমর্থিত প্রার্থীকে পরিবর্তনের একটি চিঠি নিয়ে শাসক দলের প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচারের লিপ্ত হয়। উদ্দেশ্য একটাই শাসক দলের প্রার্থীকে জয়লাভে সাহায্য করা। তার প্রাপ্ত ভোটের দিকে তাকালেই এটা আপনাদেও কাছে পরিস্ফুট হয়ে উঠবে। জনগণ এই অপশক্তির বিরুদ্ধে তাদের সুচিন্তিত মতামত প্রদান করেছে।
এমতাবস্থায় বিএনপি কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির একজন সদস্য হিসাবে দলের বিশৃংখলা রোধকল্পে নেতাকর্মীদের সাথে পরামর্শ করে নির্বাচনী মাঠ থেকে নিজেকে সরিয়ে আনার চেষ্টা করি। কিন্তু সদর উপজেলার বিএনপির সর্বস্তরের নেতাকর্মী এবং অঞ্চলের জনগণ তাদের প্রার্থীকে কোন অবস্থায় নির্বাচনের শেষ পর্যায়ে, বিশেষ করে জয় যখন সুনিশ্চিত তখন এই ধরনের সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসতে আমাকে বাধ্য করে। ষড়যন্ত্রকারীদের শাসক দলকে জেতানোর সকল অপচেষ্টা যখন একে একে ব্যর্থ হচ্ছে তখন ২৩ মার্চ ভোট চলাকালীন সময়ে আওয়ামীলীগ সমর্থীত প্রার্থীর পক্ষে শাসক দলের সন্ত্রাসীরা একটির পর একটি কেন্দ্র দখল করে জাল ভোটের মহোৎসবে মেতে উঠে। তারা জোরপূর্বক সৈয়দ জাহান সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, টুলটিকর হাজী আব্দুল লতিফ প্রাথমিক বিদ্যালয়, বড়শালা ইউপি কেন্দ্র, ধুপাগোল প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ বিভিন্ন কেন্দ্রে ব্যালট পেপারে সিল মেরে জাল ভোটে ব্যালট বাক্স ভর্তি করে, জোরপূর্বক শাসক দলের প্রার্থীকে জয়ী হতে সাহায্য করে। যার সাক্ষী আপনারা অনেকেই।
এই অঞ্চলের জনগণের ভোটের রায় নির্বাচনী ফলাফলে প্রতিফলিত হয় নাই। এই নির্বাচন প্রহসনের এবং ভোট জালিয়াতির নির্বাচন হিসাবে সদর উপজেলাবাসীর কাছে চিহ্নিত হয়ে থাকবে। এমনকি ভোটের দুই তিন দিন পূর্ব থেকে প্রশাসনকে নির্লজ্জভাবে ব্যবহার করে আমার নেতাকর্মীদের বাড়ীতে বাড়ীতে তল্লাসি চালিয়ে পরিবারসহ তাদেরকে হেনস্থা করা হয়। নির্বাচনী মাঠে তার বিরূপ প্রভাব পড়ে।