লাখো কণ্ঠে সোনার বাংলা

শেষ পর্যন্ত জামায়াত সংশ্লিষ্টতা ছাড়তে পারেনি সরকার

জাতীয় সঙ্গীত গেয়ে বিশ্ব রেকর্ড গড়ার অনুষ্ঠানে শেষ পর্যন্ত জামায়াত সংশ্লিষ্টতা ছাড়তে পারেনি সরকার। আড়াই লক্ষাধিক লোকের সমবেত কণ্ঠে জাতীয় সংঙ্গীত গাওয়ার এ আয়োজনে নানা নাটকীয়তার পর ইসলামী ব্যাংককে না বলতে পারলেও ফেরাতে পারেনি ইবনে সিনাকে।
অনুষ্ঠানে আড়াই লক্ষাধিক লোকের মাঝে বিতরণ করা ঔষধ সামগ্রীর নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ইবনে সিনা। অনুষ্ঠানের সার্বিক দায়িত্বে ছিল সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয় আর ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব পালন করে সশস্ত্র বাহিনী বিভাগ।
বুধবার সকালে প্যারেড ময়দানে প্রবেশের পর ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে থাকা সেনা সদস্যরা অংশগ্রহণকারীদের প্রত্যেককে একটি করে ক্যাপ, ব্যাগ ও খাবারের বাঙ সরবরাহ করেন। খাবারের ওই বাঙে রুটি, বিস্কুট, জুসের সঙ্গে ছিল ইবনে সিনার এক প্যাকেট খাবার স্যালাইন ‘ইউনিস্যালাইন’, প্যারাসিটামল গ্রুপের ট্যাবলেট ‘সিনাপল’ ও অ্যান্টাসিড ট্যাবলেট ‘এন্টানিল’।
খাবারের এ প্যাকেটটি সরবরাহ করছে ক্যাপ্টেনস বেকারি নামে একটি প্রতিষ্ঠান। আর ওষুধগুলো ইবনে সিনা ট্রাস্টের প্রতিষ্ঠান ইবনে সিনা ফার্মাসিউটিক্যাল ইন্ডাস্ট্রি লিমিটেডের তৈরি।
অনুষ্ঠানে প্রত্যাশিত প্রায় তিন লক্ষাধিক লোকের জন্য বরাদ্দ ছিল ইবনে সিনার ঔষধ সামগ্রী। যার চেয়ারম্যান মীর কাশেম আলী জামায়াতে ইসলামীর শীর্ষ পর্যায়ের নেতা। জামায়াতের ছাত্র সংগঠন ইসলামী ছাত্রশিবিরের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতিও ছিলেন তিনি। মীর কাশেম আলী বর্তমানে ১৯৭১ সালের মানবতাবিরোধী অপরাধে বিচারাধীন মামলায় জেল খানায় আটক আছেন।
বিষয়টি নিয়ে তাৎক্ষণিক মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে অনেক দর্শনার্থী। ইসলামী ব্যাংকের টাকাগ্রহণ করে তা না নেয়ার ঘোষণা দেয়ার পর ইবনে সিনার স্পন্সর গ্রহণ করাকে অনেকেই সরকারের ভাঁওতাবাজি বলে উল্লেখ করেন।
অনুষ্ঠানে আগত উদীচির এক শিল্পী জানান, সরকার ইসলামী ব্যাংকের টাকা ফেরত দিয়েছে বলেই আমরা অনুষ্ঠানে অংশ নিয়েছি।
অনুষ্ঠানে আগত তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থী ফেরদৌস জানান, ইসলামী ব্যাংক জামায়াতের প্রতিষ্ঠান, ইবনে সিনাও তাদেরই প্রতিষ্ঠান- এটা সবার জানা। কিন্তু ইসলামী ব্যাংকের টাকা ফেরত দিয়ে ইবনে সিনার পণ্য গছিয়ে দেয়া সরকারের দ্বিমুখী নীতিরই বহি:প্রকাশ।
প্রসঙ্গত, লাখো কণ্ঠে জাতীয় সঙ্গীত গেয়ে বিশ্ব রেকর্ড গড়তে আয়োজিত অনুষ্ঠানের ব্যায় নির্বাহের জন্য গত ১৪ মার্চ  বিভিন্ন ব্যাক্তি ও প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে অনুদানগ্রহণ করে সরকার। যেখানে বেসরকারি ব্যাংক ইসলামী ব্যাংক তিনকোটি টাকা অনুদান দেয়। পরে এ নিয়ে নানা মহলে সমালোচনার ঝড় উঠে। অনুষ্ঠান বয়কট করে দেশের বৃহৎ সাংস্কৃতিক সংগঠন উদীচিসহ প্রগতিশীল বিভিন্ন সংগঠন। পরে অব্যাহত সমালোচনার মুখে গত ২৩ মার্চ ইসলামী ব্যাংকের দেয়া তিন কোটি টাকা লাখো কণ্ঠে জাতীয় সংগীত আয়োজনে নেয়া হবে না বলে ঘোষণা দেয় সরকার।

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও দেখুন...
Close
Back to top button