সাহিত্য সংসদের সপ্তাহব্যাপী বইমেলা সম্পন্ন
দেশের প্রাচীনতম সাহিত্য প্রতিষ্ঠান কেন্দ্রীয় মুসলিম সাহিত্য সংসদ এর উদ্যোগে ও সিলেট সিটি কর্পোরেশনের সহযোগীতায় সপ্তাহব্যাপী বইমেলা গত বুধবার শেষ হয়েছে। মেলায় অসংখ্য পাঠক-পাঠিকার ভীড় ছিল পুরো সপ্তাহ জুড়ে। পাঠকদের চাহিদা মিটাতে সক্ষম হয়েছে সাহিত্য সংসদের এই সপ্তম বইমেলা। মেলার সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে সিলেট সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী বলেন, বই মনের জানালা খুলে দেয়। নবপ্রজন্মকে সুচিন্তাশীল হিসেবে গড়ে তুলতে বই পাঠের চর্চা অপরিসীম। তাই বই পড়াকে সামাজিক আন্দোলনে পরিনত করতে হবে।
মেয়র আরিফ আরো বলেন, সকলের একান্ত সহযোগিতায় সপ্তাহব্যাপী বইমেলা সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হয়েছে। ভবিষ্যতে সাহিত্য সংসদের উদ্যোগে ও সিলেট সিটি কর্পোরেশনের সহযোগিতায় আরো বৃহৎ পরিসরে বইমেলার আয়োজন করা হবে। এক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট সবার আন্তরিক সহায়তা প্রয়োজন।
মেলায় প্রতিদিনই ছিল লেখক, পাঠকদের পদচারণা, প্রচারণা ও আড্ডা। শেষদিন এসেও বইপ্রেমীদের অনেক ভিড় ছিল সপ্তম বইমেলায়। স্টলগুলোতে উলে¬খযোগ্যসংখ্যক পাঠকের উপস্থিতি দেখা গেছে। মেলার শেষ দিন এসেও পাঠকরা তাদের পছন্দের বইগুলো কিনেছেন। বিশিষ্ট কবি মোফাজ্জল করিম, প্রবাসী লেখক সাংবাদিক ইসহাক কাজল, মাহবুব রহমান, সাঈম চৌধুরীসহ সিলেটের অনেক উল্লেখযোগ্য লেখক সাংবাদিক অংশগ্রহণ করেন। সিলেটের বাইরের জেলা থেকেও এসেছিলেন অনেকে। কয়েকজন বিদেশি পর্যটকেরও দেখা মিলেছে কখনো কখনো।
কেন্দ্রীয় মুসলিম সাহিত্য সংসদ-এর সভাপতি হারুনুজ্জামান চৌধুরীর সভাপতিত্বে আয়োজিত অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন সংসদের সহ-সাধারণ সম্পাদক গল্পকার সেলিম আউয়াল। সভার শুরুতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন বইমেলা উপকমিটির সদস্য সচিব কবি মুহিত চৌধুরী। শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় মুসলিম সাহিত্য সংসদ-এ সাধারণ সম্পাদক গবেষক আবদুল হামিদ মানিক। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন, সাবেক সচিব ও রাষ্ট্রদূত কবি মোফাজ্জল করিম, মো স্কলার্স হোম স্কুল এন্ড কলেজ শাহী ঈদগাহ ক্যাম্পাসের অধ্যক্ষ ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব:) জুবায়ের সিদ্দিকী।
কবি মোফাজ্জল করিম বলেন, বইমেলা আমাদের প্রাণের মেলা। বইপ্রেমীদের জন্য আনন্দের বার্তা স্বরূপ বইমেলা আসে। এর প্রমাণ সাহিত্য সংসদের বইমেলা। নিঃসন্দেহে সাহিত্য সংসদের বইমেলা একটি ঐতিহ্যবাহী বইমেলায় পরিণত হবে।
কেন্দ্রীয় মুসলিম সাহিত্য সংসদ-এ সাধারণ সম্পাদক আবদুল হামিদ মানিক বলেন, সবার হাতে সবার ঘরে বই পৌছে দিতে অন্যতম মাধ্যম হলো বইমেলা। বইয়ের কোন বিকল্প নেই। বই পড়ে পাঠ্যভ্যাস বৃদ্ধি করতে হবে। বইভিত্তিক সমাজ গড়ে তুলতে সকলকে এগিয়ে আসতে হবে।
সভাপতির বক্তব্যে হারুনুজ্জামান চৌধুরী বইমেলা সফলে সহযোগিতার জন্য সিলেট সিটি কর্পোরেশনসহ সংশ্লিষ্ট সকলকে আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জানান।
উল্লেখ্য, গত ২০ মার্চ থেকে শুরু হওয়া সপ্তাহব্যাপী এই সপ্তম বইমেলা ২০১৪ অত্যন্ত আনন্দমুখর পরিবেশে শেষ হয়। বইমেলায় ৩৫টি বইয়ের প্রতিষ্ঠান স্টল হিসেবে অংশ গ্রহণ করে। মেলায় শিশু কিশোরদের চিত্রাংকন প্রতিযোগীতা, স্বরচিত কবিতা আবৃত্তি প্রতিযোগীতা, বিভিন্ন লেখকদের বইয়ের প্রকাশনা অনুষ্ঠান ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়।