ফ্রান্সে পালিত হল মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস
এনায়েত হোসেন সোহেল ফ্রান্স: নানা আয়োজনে মধ্য দিয়ে ২৬শে মার্চ সন্ধ্যা ৬টায় বাংলাদেশ দূতাবাস ফ্রান্সের উদ্যেগে অভারভিলিয়ের একটি হলে পালিত হল ৪৪তম মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস। দূতাবাস কর্মকর্তা ফারহানা রহমানের উপস্থাপনায় অনুষ্টানের ১ম পর্বে স্বাগত বক্তব্যে রাষ্ট্রদূত এম. শহিদুল ইসলাম বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি এবং প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে ফ্রান্স প্রবাসীদের স্বাধীনতা দিবসের শুভেচ্ছা জানান । পরে শিল্পিদের সাথে উপস্থিত সবাই সারিবদ্ধভাবে “লাখ কন্ঠে সোনার বাংলা” (আমার সোনার বাংলা, আমি তোমায় ভালবাসি…) সমবেত কণ্ঠে গেয়ে যান । জাতীয় সংগীত শেষে রাষ্ট্রদূত এম. শহিদুল ইসলাম এবং মিসেস শহিদুল ইসলামের সৌজন্যে বাংলাদেশী খাবার পরিবেশন করা হয় ।
অনুষ্ঠানের ২য় পর্বে ১৯৭১ সালের মুক্তিযোদ্ধের সময় ফ্রান্সের সাংবাদিক ফিলিপস আলফন্সের ধারনকৃত বিভিন্ন ভিডিও ফুটেজ, ছবি ও সাক্ষাৎকার এর উপর নির্মিত পরিচালক প্রকাশ রায়ের প্রমাণ্যচিত্র “একটি পতাকার জন্ম” প্রর্দশিত হয় । প্রমাণ্যচিত্রটি পদর্শনের পূর্বে বক্তব্য রাখেন ফ্রান্স-বাংলাদেশ ইকনোমিক চেম্বারের সভাপতি ও ছবিটির প্রযোজক কাজী এনায়েত উল্লা এবং ফরাসী সাংবাদিক ফিলিপস আলফন্স ।
বক্তব্যে এনায়েত উল্লা প্রমাণ্যচিত্রটি পদর্শনের সুযোগ দানের জন্য রাষ্ট্রদূত এম. শহিদুল ইসলাম এবং বাংলাদেশী খাবার পরিবেশনের জন্য মিসেস শহিদুল ইসলামকে ধন্যবাদ জানান ।
ফ্রান্সের সাংবাদিক ফিলিপ আলফন্স বলেন ১৯৭১ সালে মুক্তিযোদ্ধের সময় আমি নিরপেক্ষ ভাবে কাজ করতে বাংলাদেশে গিয়েছিলাম। আমার সঙ্গে থাকা সাথীদের কথা খুব মনে পড়ছে। আজ তারা বেঁচে নেই। একজন সাংবাদিক দায়িত্ব পালনের সময় নিরপেক্ষ থাকাটা অনেক গুরুত্বপূর্ণ। যদি একজন সাংবাদিক সব সময় নিরপেক্ষ ভুমিকা পালন করে তবে তার দ্বারা অনেক অসম্ভবই সম্ভব।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংবাদিক, নারী নেত্রী, শিল্পি এবং বিভিন্ন পেশাজীবি সংগঠনের নেত্রীবৃন্দ।
উল্লেখ্য, ফরাসি সাংবাদিক ফিলিপ আলফন্স ১৯৭১ সালের মার্চ থেকে সংবাদ সংগ্রহের জন্য ঢাকায় ছিলেন । তিনি মার্চের অসহযোগ আন্দোলন যেমন দেখেছিলেন, তেমনি দেখেছিলেন ২৫ মার্চের কালো রাতের ঢাকা। তিনি ধারণ করেছিলেন মুক্তিযোদ্ধের প্রাথমিক পর্যায়ে জনপ্রতিরোধের ছবি। পরে ঢাকা থেকে তিনি কলকাতা চলে যান। সেখান থেকে কুষ্টিয়া, মেহেরপুর, যশোরের মুক্তাঞ্চলে প্রবেশ করেছিলেন ফিলিপ আলফন্স। তিনি কুমিল্লার মুক্তাঞ্চলের ছবিও ধারণ করেন। সে সময় বাঙালির জনপ্রতিরোধের ছবি ধারণের পাশাপাশি পাকিস্থানী সেনাদের ক্যাম্পে গিয়ে বাংলাদেশের স্বাধীনতাযোদ্ধের বিষয়ে পাকিস্থানীদের ছবির মাধ্যমে তাদের মনোভাবও তুলে ধরেন।