লন্ডনে আইনজীবীদের সেমিনার
স্বাধীনতার ঘোষক শহীদ জিয়াউর রহমান শুধু বাংলাদেশের প্রথম নির্বাচিত রাষ্ট্রপতিই ছিলেন না, তিনি ছিলেন বাংলাদেশেরও প্রথম রাষ্ট্রপতি। বহুদলীয় গণতন্ত্রের প্রবর্তক জিয়াউর রহমান জাতিকে একটি কমন আইডেন্টিটি প্রদানকারী করে গেছেন। শহীদ জিয়ার আদর্শের প্রতিনিধি তারেক রহমান এ সত্যটি জাতিকে চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছেন।
শুক্রবার সন্ধ্যায় যুক্তরাজ্যে বসবাসরত আইনজীবীবৃন্দ ‘বাংলাদেশের প্রথম রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান : ঐতিহাসিক সত্যতা ও ভিত্তি’ শীর্ষক এক সেমিনারের মূল প্রবন্ধে একথা বলা হয়। ব্যারিস্টার আবুল মুনসুর শাহজাহানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সেমিনারে মূল প্রবন্ধ পাঠ করেন ব্যারিস্টার তমিজ উদ্দিন। স্বাগত বক্তব্য রাখেন ব্যারিস্টার আলিমুল হক লিটন।
সেমিনারে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ সম্পাদক পরিষদের সভাপতি চৌধুরী মোহাম্মদ ফারুক, শেখনিউজ ডট কমের প্রধান সম্পাদক শেখ মহিউদ্দিন আহমেদ, দৈনিক আমার দেশের বিশেষ প্রতিনিধি অলিউল্লাহ নোমান, সাবেক ছাত্রনেতা নসরুল্লাহ খান জুনায়েদ, মানবাধিকার সমন্বয়ক মুনাওয়ার বদরুদ্দোজা, ব্যারিস্টার মুজিবর রহমান, ব্যারিস্টার আনোয়ার আহমেদ চৌধুরী, আগ্রাসন প্রতিরোধ আন্দোলন নেতা এম এস আজাদ, এডভোকেট নাসরিন আক্তার, ছাত্রনেতা রাজীব আহমেদ, ব্যারিস্টার সুবেহ সাদেক, এডভোকেট শাহীনুর আলম, এডভোকেট রনি, এডভোকেট হাসানাত, এডভোকেট জালাল,এডভোকেট নাজমুল করিম মুক্তা, আইনজীবী কুমকুম আক্তার প্রমুখ। অনুষ্ঠানে মডারেটরের দায়িত্বে ছিলেন ব্যারিস্টার হামিদুল হক আফিন্দি লিটন এবং ব্যারিস্টার ইকবাল হোসেন।
চৌধুরী মোহাম্মদ ফারুক বলেন, জিয়াউর রহমানই বাংলাদেশের প্রথম প্রেসিডেন্ট এটি দালিলিকভাবে প্রমানিত সত্য। তিনি যে প্রথম ঘোষণাতেই নিজেকে রাষ্ট্রপ্রধান ঘোষণা দিয়েছিলেন তাই নয়, সংশোধিত ঘোষণাতেও জিয়া নিজেকে রাষ্ট্রপ্রধান হিসেবে কমান্ড হাতে নিয়েছেন বলে জানিয়েছেন। এগুলো স্বাধীনতার দলিল।
শেখ মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, ইতিহাস বেশী দিন চাপা দিয়ে রাখা যায় না। পূর্ব বাংলার জনগণের সাথে পশ্চিম পাকিস্তানের ভূস্বামীদের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত শাসকদের সাথে দ্বন্দ্বের প্রেক্ষিতে স্বাভাবিকভাবে বেড়ে ওঠা মুক্তির সংগ্রামকে ভিন্নখাতে নিয়ে যাওয়ার জন্যই আওয়ামী লীগের দ্বারা ভারতীয় সম্প্রসারনবাদের ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছিলো। মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসও তাই চাপা পড়েছিলো। এখনো অনেক ইতিহাস চাপা পড়ে আছে। জিয়াউর রহমানই স্বাধীনতার ঘোষণা পরবর্তী প্রথম রাষ্ট্র প্রধান।
অলিউল্লাহ নোমান বলেন, শহীদ জিয়া যে প্রথম রাষ্ট্রপ্রধান এটি আজ দিবালোকের মত প্রমানিত সত্য। এটি যুক্তির ভেতর দিয়ে জাতির কাছে পৌঁছে দিতে হবে সবাইকে।
মূল প্রবন্ধে ব্যারিস্টার তমিজউদ্দিন বলেন, শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান জাতিকে পরিচয় দিয়েই শুধু নিজের দায়িত্ব শেষ করেননি। একজন সেবকের মত জাতিকে মৃত্যুর শেষ দিন পর্যন্ত সেবা দিয়ে গেছেন। একজন পিতা বা মাতা যেমন তার সন্তানকে শুধু যত্নই করেন পরম মমতায়, শহীদ জিয়া দেশের প্রথম রাষ্ট্রপ্রধান ছিলেন বলেই পরম মমতায় গড়ে তুলেছেন বাংলাদেশকে। দিয়েছেন গণতন্ত্র, বাক স্বাধীনতা, মুক্ত বুদ্ধির চর্চার ক্ষেত্র, বৃদ্ধি করেছেন ফসলের মাঠ আর ফসল, গ্রামের মানুষের জন্য দিয়েছেন নিজেদের সরকার ব্যবস্থা। দেশকে শত্রু মুক্ত রাখতে গড়েছেন আধুনিক প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা। এগুলো কেবল মাত্র এমন একজনের পক্ষেই সম্ভব যিনি হলের কারিগর, প্রথম রাষ্ট্রপ্রধান।
সত্যকে চাপা দিয়ে মিথ্যা ইতিহাস জাতির উপর চাপিয়ে দেয়ার জন্যে আওয়ামী শাসকগোষ্ঠী নিজেদের দলীয় ক্যাডার বিচারকদের দিয়ে ইতিহাস বানানোর রায় নিয়েছে। আদালতের দ্বারা ইতিহাস চাপিয়ে দেয়া এবং সেই মিথ্যা ইতিহাস মানতে বাধ্য করার মত জঘন্য কাজটিও পৃথিবীর ইতিহাসে বিরল। মিথ্যা ইতিহাস না মানলে শাস্তির ব্যবস্থাও ইতিহাসে বিরল। এতো বিরল কৃতিত্ব শুধুমাত্র শেখ হাসিনার সরকার ও আওয়ামী লীগের দ্বারাই সম্ভব হয়েছে।
তিনি প্রবন্ধে উল্লেখ করেন, একটি জাতির স্বাধীনতা ঘোষণা যেমন কোন সাধারন নাগরিকের দ্বারা হলে তা জাতিকে উদ্ভুদ্ধ করেনা, তেমনি একটি জাতীয় যুদ্ধের প্রাক্কালে কোন পাতি সিভিলিয়ানের ডাকেও যুদ্ধে জাতি ঝাঁপিয়ে পড়ে না। তাইতো ইতিহাসের যুগ সন্ধিক্ষনে স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছিলেন শহীদ জিয়াউর রহমান, বীর উত্তম। আর স্বাধীনতার ঘোষণা একজন রাষ্ট্রপ্রধানের কণ্ঠে উচ্চারিত হওয়াই পৃথিবীর রেওয়াজ বিধায় সেদিন শহীদ জিয়া নিজেকে স্বাধীনতা ঘোষণাকারী জাতির আবাসভূমি ‘বাংলাদেশের রাষ্ট্রপ্রধান’ হিসেবে উল্লেখ করেই স্বাধীনতার ঘোষণা প্রদান করেন।