দ্যা গার্ডিয়ান’র প্রতিবেদন : আগামী নির্বাচনে হেফাজত মূল ফ্যাক্টর হয়ে উঠতে পারে

Hefazotবাংলাদেশে হেফাজতে ইসলাম নামে একটি সংগঠনের ব্যানারে ইসলামপন্থীরা ঐক্যবদ্ধ হচ্ছে বলে প্রতিবেদন ছেপেছে বৃটিশ পত্রিকা দ্যা গার্ডিয়ান। আগামী নির্বাচনে এই হেফাজতই মূল ফ্যাক্টর হয়ে উঠতে পারে বলেও মন্তব্য করা হয়েছে প্রতিবেদনে। হাটহাজারী মাদ্রাসা ঘুরে এমন প্রতিবেদন করেছেন প্রতিবেদক।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০১০ সালের জানুয়ারিতে গঠিত হওয়ার পর আল্লামা শফীর নেতৃত্বে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় ইসলামপন্থীদের আন্দোলনটি গত ৫ মে ঢাকায় ৫ লাখেরও বেশি কর্মী জড়ো করে আলোচনায় আসে। যারা ১৩ দফা দাবিতে ঢাকার মতিঝিলে একত্রিত হয়। যার মধ্যে জনসম্মুখে নারী-পুরুষের একসঙ্গে চলাফেরা, মূর্তি অপসারণ, সংবিধানে আল্লাহর ওপর আস্থা ও বিশ্বাস স্থাপনের দাবি রয়েছে।
প্রতিবেদনে হেফাজতের উত্থান সম্পর্কে বলা হয়, সম্পত্তিতে নারীর সমঅধিকার আন্দোলনের বিরোধীতায় ২০১০ সালের জানুয়ারিতে হেফাজত গঠিত হয়। তবে যুদ্ধাপরাধীদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবিতে শাহবাগ আন্দোলনের প্রতিক্রিয়ায় এপ্রিলে চাঙ্গা হয় হেফাজতে ইসলাম। শুরু হয় নতুন সদস্য সংগ্রহ। শাহবাগে আন্দোলনরত কিছু ব্লগারের ধর্মবিদ্বেষকে হেফাজতে ইসলাম প্রচার-প্রচারণায় আনে এবং ইসলাম রক্ষায় ১৩ দফা আন্দোলন শুরু করে।
প্রতিবেদনে ফরহাদ মজহারের মন্তব্য তুলে ধরা হয়। তিনি বলেন, ‘গরিব, স্বল্প শিক্ষিত, গ্রামীণ মানুষদের নিয়েই এ আন্দোলন গড়ে উঠেছে। যাদেরকে শহুরে মধ্যবিত্তরা সবসময়ই একটু ভিন্ন চোখে দেখে। এ আন্দোলনে বহুজাতিক এবং সন্ত্রাসের সম্পৃক্ততা নেই। তবে তাদেরকে একপেশে করা হলে তারা উগ্র হয়ে উঠতে পারে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ধর্মনিরপেক্ষতার আদর্শে স্বাধীন হওয়া বাংলাদেশের সংবিধানে ধর্মের ব্যবহারকে কেন্দ্র করেই এ ধরণের আন্দোলন সামনে এসেছে। সংবিধানে আল্লাহর ওপর অগাধ বিশ্বাস ও আস্থা এবং রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম করাকে কেন্দ্র করেই ধর্মীয় গ্রুপগুলো রাজনীতিতে সক্রিয় হয়েছে।
ঢাকার একজন শিক্ষাবিদের বরাত দিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘আওয়ামী লীগ হেরে যাওয়ার ভয়ে অন্তবর্তী সরকার ছাড়া অন্য কোন ব্যবস্থায় রাজি হচ্ছে না। হয়তো ইসলাম পন্থীদের সমর্থন ছাড়া নির্বাচনে জয়ী হওয়া সম্ভব, কিন্তু তাদের বিরুদ্ধে জয়ী হওয়া সম্ভব হবে না।’
এতে বলা হয়, বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক অবস্থার সুবিধা গ্রহণ করে হেফাজত সুবিধাজনক অবস্থান তৈরি করেছে এবং ক্রমান্বয়ে তারা ঐক্যবদ্ধ হচ্ছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশের আগামী জাতীয় নির্বাচনে হেফাজত প্রভাব বিস্তার করতে চায় এবং রাজনীতিতে আত্মপ্রকাশ করতে চায়। আর অন্তবর্তী সরকার ইস্যুতে বিরোধী দল এবং ইসলামী দলগুলোর আন্দোলনের কারণে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ বড় চাপে রয়েছে।
প্রতিবেদনের শেষে প্রতিবেদক উল্লেখ করেন, মাদ্রাসার নিরাপদ দেয়ালের মধ্যে থেকে শফী সাহেব আগামী নির্বাচনের কিং মেকার হয়ে উঠতে পারেন।

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও দেখুন...
Close
Back to top button