লুৎফর রহমানের দুর্নীতির অভিযোগ তদন্তের উদ্যোগ
লন্ডনে টাওয়ার হ্যামলেটস কাউন্সিলের বাংলাদেশি বংশোদ্ভুত মেয়র লুৎফর রহমানের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ ওঠার পর কর্তৃপক্ষ তদন্তের উদ্যোগ নিয়েছে। বিবিসির প্যানোরামা অনুষ্ঠানের একটি অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে লুৎফর রহমানের বিরুদ্ধে কাউন্সিল পরিচালনায় ব্যর্থতা, দুর্বল আর্থিক ব্যবস্থাপনা ও জালিয়াতির অভিযোগ আনা হয়।
২০১০ সালে তিনি জনগণের সরাসরি ভোটে পূর্ব লন্ডনে এই কাউন্সিলের মেয়র নির্বাচিত হন। এই কাউন্সিলে প্রচুর বাংলাদেশির বসবাস।
অভিযোগগুলো কী?
প্যানোরামা অনুষ্ঠানের অনুসন্ধানী প্রতিবেদনটিতে পূর্ব লন্ডনের টাওয়ার হ্যামলেটস কাউন্সিলের মেয়র লুৎফুর রহমানের বিরুদ্ধে তার বিরোধী পক্ষের কাউন্সিলরা অভিযোগ এনেছেন যে তিনি তার এলাকার বাংলাদেশি ও সোমালি কম্যুনিটির বিভিন্ন দাতব্য প্রতিষ্ঠানকে ৩৬ লাখ পাউন্ড আর্থিক অনুদান দিয়েছেন তাদের ভোট পাওয়ার জন্য।
লুৎফুর রহমান অবশ্য এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
অনুষ্ঠানটিতে দেখানো হয় যে বাংলাদেশি এইসব প্রতিষ্ঠানের জন্য যে অনুদান বরাদ্দ করা হয়েছিল রুৎফুর রহমান তা দ্বিগুণের বেশি বাড়িয়ে নিয়েছেন।
লুৎফুর রহমানের বিরুদ্ধে মূল অভিযোগ আনা হয় যে সরাসরি ভোটে নির্বাচিত মেয়র হিসেবে তার নির্বাহী ক্ষমতা ব্যবহার করে তিনি স্থানীয় বাংলাদেশি চ্যারিটিগুলোর জন্য অনুদানের অঙ্ক আড়াইগুণের মতো বাড়িয়েছেন এবং অভিযোগকারীদের ভাষায় তিনি সেটা করেছেন মে মাসের আসন্ন মেয়র ভোটে আবার জেতার লক্ষ্যকে সামনে রেখে।
টাওয়ার হ্যামলেটসের অন্য কাউন্সিলরা বলেছেন অর্থের প্রয়োজন কাদের বেশি সে বিষয়ে তাদের সুপারিশ লুৎফুর রহমান বিবেচনায় নেননি।
কর্তৃপক্ষ কী পদক্ষেপ নিচ্ছে?
টাওয়ার হ্যামলেটস কাউন্সিলের প্রশাসনিক ব্যর্থতা, দুর্বল আর্থিক ব্যবস্থাপনা এবং জালিয়াতির অভিযোগ তদন্ত করতে সরকার একটি তদন্তকারী দল নিয়োগ করেছে।
স্থানীয় সরকার মন্ত্রী এরিক পিকলস বলেছেন, টাওয়ার হ্যামলেটসে মেয়রের প্রশাসনিক ব্যবস্থা, সরকারি অর্থ নিয়ে অনিয়ম এবং স্থানীয় পর্যায়ে বিভক্তির রাজনীতি নিয়ে তিনি অনেকদিন থেকেই উদ্বিগ্ন ছিলেন।
তিনি বলেছেন, এখন নথিপত্র হাতে আসায় জনস্বার্থে তিনি আইনি ব্যবস্থা নিচ্ছেন।
টাওয়ার হ্যামলেটসের একজন মুখপাত্র বলেছেন সরকারি অডিটাররা কাউন্সিলের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে শুক্রবার বৈঠক করেছেন।
একটি প্রতিষ্ঠিত সংস্থাকে এই তদন্তের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে, যারা ২৫ অক্টোবর ২০১০ থেকে এখন পর্যন্ত যেসব অনুদান অনুমোদন করা হয়েছে এবং এলাকায় যেসব সম্পত্তির লেনদেন হয়েছে সেগুলো তদন্ত করে দেখবে।