একজন স্পষ্টবাদী সাংবাদিক এবিএম মূসা
শফিক রেহমান
পঞ্চাশের দশকে ফেব্রুয়ারির এক বিকেল।
ঢাকা স্টেডিয়ামে পড়ন্ত রোদের আলো আর বসন্তের মৃদু বাতাসের মধ্যে উপস্থিত কয়েক হাজার দর্শক সাগ্রহে অপেক্ষা করছিল তাদের প্রিয় দুটি ফুটবল কাবের প্লেয়ারদের মাঠে আসার জন্য। ওই দুটি দল ছিল ভিক্টোরিয়া কাব এবং ঢাকা ওয়ান্ডারার্স কাব। সেই সময়ে ওই দুটি দলের মুখোমুখি হবার দিনটি হতো এই দেশের ফুটবল লিগে সর্বাধিক প্রতীক্ষিত এবং বহুল আলোচিত। এখন যেমন আবাহনী ক্রীড়াচক্র বনাম মোহামেডান স্পোর্টিং কাবের প্রতিদ্বন্দ্বিতার দিনটি।
সেদিন ভিক্টোরিয়া বনাম ওয়ান্ডারার্স ম্যাচের ফলাফলের ওপরে নির্ভর করছিল লিগ চ্যাম্পিয়নের শিরোপাটি।
এমন দিনে ঢাকা থেকে প্রকাশিত গুটি কয়েক দৈনিক পত্রিকার স্পোর্টস রিপোর্টাররা অবশ্যই স্টেডিয়ামে উপস্থিত থাকতেন। যেমন, দৈনিক সংবাদ-এর লাডু ভাই, দৈনিক আজাদের জাফরভাই, দৈনিক পাকিস্তান অবজার্ভারের আবুল বাশার মোহাম্মদ মূসা সংক্ষেপে এবিএম মূসা এবং দৈনিক ইত্তেফাক-এর আমি।
আমি তখন ঢাকা ইউনিভার্সিটিতে ইকনমিক্সের ছাত্র ছিলাম। বিকেল ও সন্ধ্যায় ছিলাম ইত্তেফাকের স্পোর্টস রিপোর্টার । মূসা ছিলেন আমার চাইতে প্রায় চার বছরের বড় এবং অবজার্ভারের ফুলটাইম রিপোর্টার।
স্টেডিয়ামে গিয়ে দেখলাম মূসা তখনো আসেন নি। অবাক হলাম। তিনি ছিলেন সময়নিষ্ঠ এবং কর্তব্যনিষ্ঠ তরুণ সাংবাদিক।
প্রতিদ্বন্দ্বী দুই কাবের জার্সি পরা প্লেয়াররা মাঠে নামলেন। গোলমুখে বল প্র্যাকটিস শুরু করলেন। দর্শকদের তালি ও হর্ষধ্বনি হলো।
তবুও মূসার কোনো চিহ্ন নেই।
অবাক হলাম।
এ রকম তো আগে কখনো হয় নি?
চিন্তিতও হলাম।
কোনো দুর্ঘটনা?
কিন্তু প্রাক-মোবাইল ফোন যুগে এসব প্রশ্নের উত্তর পাওয়া সম্ভব ছিল না।
ম্যাচ শুরু হয়ে গেল।
হাফটাইম হলো।
ম্যাচ শেষ হয়ে গেল।
তবুও মূসার কোনো খবর আমরা পেলাম না।
এবিএম মূসা কেন সেদিন একটা ইম্পরট্যান্ট ফুটবল ম্যাচ কভার করতে আসেন নি, সেই প্রশ্নের উত্তর পেয়েছিলাম পরদিন।
কিন্তু সে কথা পরে বলব।
সুদর্শন, লম্বা শ্যামলা, মাথায় ঘন চুলবিশিষ্ট এবং অনর্গল কথা বলতে পারদর্শী এবিএম মূসা সহজেই আকৃষ্ট করতেন খেলাধুলার ভুবন থেকে রাজনৈতিক ভুবনের মানুষজনকে। পরবর্তী কালে তিনি পাকিস্তান অবজার্ভারের নিউজ এডিটর রূপে উন্নীত হয়েছিলেন। বলা হতো তার নিউজ সেন্স ছিল সব নিউজ এডিটরের মধ্যে সেরা। পেইজ মেকআপ করার সময়ে তিনি ত্বরিতে বলে দিতেন কোন নিউজটা লিড হবে। কোনটা সেকেন্ড, কোনটা থার্ড লিড। কোন ফটো ব্যবহার করতে হবে। ইত্যাদি।
ষাটের দশকে ঢাকায় পাকিস্তান অবজার্ভারের মূসার যখন ক্রমোন্নতি হচ্ছিল, আমি তখন লন্ডনে চার্টার্ড একাউন্টেন্সি পড়ছিলাম এবং বিবিসিতে পার্টটাইম কাজ করছিলাম। এই সময়ে তার সঙ্গে আমার কোনো যোগাযোগ ছিল না। ১৯৬৮-তে পূর্ব পাকিস্তানে ফিরে এলেও মূসার সঙ্গে কমই দেখা হতো।
বিবিসিতে কাজ করার সুবাদেই ১৯৭১-এ মুক্তিযুদ্ধের সময়ে মূসার সঙ্গে আবার যোগাযোগ হয়। আমি ঢাকা ছেড়ে চলে গিয়েছিলাম জুন ১৯৭১-এ এবং আবার বিবিসিতে পার্টটাইম কাজ শুরু করি। এই সময়ে মূসা বিবিসির সংবাদদাতা হিসেবে নিয়মিত নিউজ ফাইল করতেন। তিনি লন্ডনে দি সানডে টাইমস পত্রিকারও করেসপনডেন্ট ছিলেন। মুসার এসব রিপোর্ট ছিল ফ্যাক্টস-নির্ভর এবং আবেগবর্জিত। তাই বিবিসি কর্তৃপক্ষের কাছে তার রিপোর্ট ছিল বিশ্বাসযোগ্য।
মুক্তিযুদ্ধের পরপরই ফেব্রুয়ারি ১৯৭২-এ আমি নতুন স্বাধীন বাংলাদেশে ফিরে আসি ।
মূসার সঙ্গে দেখা হলো পুরনো ডিআইটি ভবনে বাংলাদেশ টেলিভিশন কর্পরেশন-এর অফিসে। পাকিস্তান টেলিভিশন কর্পরেশন বা পিটিভির নাম বদলে হয়েছিল বিটিভি।
তখন কথা হচ্ছিল বাংলাদেশ সরকার কাকে নিয়োগ দেবে বিটিভি-র ম্যানেজিং ডিরেক্টর পদে। মূসা সরাসরি আমাকে প্রশ্ন করে জানতে চাইলেন আমি সেই পদে ইনটারেসটেড কি না। কারণ, ডিসেম্বর ১৯৭০-এ পাকিস্তানের সাধারণ নির্বাচনে বিটিভির দুই দিন টানা ইলেকশন প্রোগ্রামে আমি ছিলাম অন্যতম উপস্থাপক। যেহেতু চার্টার্ড একাউন্টেন্ট রূপে সংখ্যা নিয়ে নাড়াচাড়া করা ছিল আমার পেশা, সেহেতু ইলেকশনে একটানা প্রায় ৪৮ ঘণ্টা জুড়ে বিভিন্ন সংখ্যার সহজ প্রেজেন্টেশন ও ব্যাখ্যা দর্শকদের কাছে প্রশংসিত হয়েছিল। তাই অনেকেই ভাবছিলেন আমি হয়তো বিটিভিতে যোগ দেব। কিন্তু আমি প্রধান পেশা ছেড়ে মিডিয়াতে ফুলটাইম কাজে আগ্রহী ছিলাম না। তাই মূসাকে সেটাই বললাম।
শুনে মূসা খুশি হলেন এবং জানালেন তিনি বিটিভির এমডি পদে কাজ করতে আগ্রহী।
মূসাকে সেই পদে নিয়োগ দিয়েছিলেন তদানীন্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ মুজিবুর রহমান।
কিন্তু কয়েক মাস পরেই মূসা হয়তো বোঝেন যে টেলিভিশন তার ক্ষেত্র নয়। তিনি সিদ্ধান্তে আসেন রাজনীতি তার ক্ষেত্র। ১৯৭৩-এর নির্বাচনে তিনি আওয়ামী লীগের প্রার্থী রূপে নোয়াখালী-১ আসন থেকে এমপি হন।
নভেম্বর ১৯৭৫-এ আওয়ামী লীগ সরকারের বিদায় ঘটলে মূসা রাজনীতি ছেড়ে দেন।
জিয়াউর রহমানের শাসনকালে ১৯৭৮-এ মূসা ব্যাংককে জাতিসংঘের পরিবেশ কার্যক্রমের এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চলের (এসকাপ) আঞ্চলিক পরিচালক পদে যোগ দেন। যদিও শেখ মুজিবুর রহমানের আনুকূল্যে মূসা হয়েছিলেন বিটিভির এমডি এবং জাতীয় সংসদের এমপি, তবুও জিয়াউর রহমান মূসার যোগ্যতাকে বিবেচনা করে তার ব্যাংকক যাত্রা সমর্থন করেছিলেন।
এসকাপের চুক্তির মেয়াদ শেষ হয়ে গেলে হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের আমলে ১৯৮১ থেকে ১৯৮৫ পর্যন্ত মূসা বাংলাদেশ প্রেস ইন্সটিটিউটের (পিআইবি) ডিরেক্টর জেনারেল পদে কাজ করেন এবং পরে ১৯৮৫ থেকে ১৯৮৭ পর্যন্ত বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থা (বিএসএস) -এর এমডি পদে কাজ করেন। বলা যায় এবিএম মূসা তিন সরকারপ্রধান, শেখ মুজিব, জিয়া এবং এরশাদের স্নেহধন্য হয়েছিলেন।
তার বয়স হয়েছিল।
সরকারি চাকরির বয়সসীমা পার হয়েছিল।
তবুও তিনি মিডিয়াতে থাকতে চাইছিলেন। দৈনিক পত্রিকায় ‘আমার যত ভাবনা’ নামে একটি কলাম লেখা শুরু করেন। মজার ব্যাপার এই যে, টেলিভিশনেও তিনি আবার ফিরে আসতে চান। তাই একটি প্রাইভেট টিভি চ্যানেল খোলার প্রাথমিক কাজগুলো শেষ করেন। ওয়ান-ইলেভেনের পর ক্রমেই বিভিন্ন প্রাইভেট চ্যানেলে এবিএম মূসা টক শোতে অংশ নিতে থাকেন।
সামাজিকভাবে মূসা ছিলেন বন্ধুবৎসল। তিনি তার জন্মদিনে মোহাম্মদপুরে তার বাড়িতে, যার নাম ছিল “রিমঝিম”, সেখানে বন্ধুদের নিমন্ত্রণ করতেন। এমনই এক নিমন্ত্রণে তার বাড়িতে আবদুল গাফফার চৌধুরীর সঙ্গে এসেছিলেন নোয়াখালীর আওয়ামী নেতা জয়নাল হাজারী। সেখানে জয়নাল হাজারীর উপস্থিতিতে কিছু নিমন্ত্রিত ব্যক্তি প্রশ্নবিদ্ধ করেছিলেন মূসাকে। কিন্তু সুন্দর ও শালীনভাবে মূসা বিষয়টিকে হ্যান্ডল করেছিলেন। অতিথি রূপে (নিমন্ত্রিত না হলেও) জয়নাল হাজারীর সঙ্গে আন্তরিকতাসহ দীর্ঘক্ষণ কথা বলেন।
শেখ মুজিবের আওয়ামী লীগ, জিয়ার বিএনপি, এরশাদের জাতীয় পার্টি থেকে শুরু করে জয়নাল হাজারীর পার্টি পর্যন্ত – সবখানেই মূসা নিজস্ব মতামত বজায় রেখে মানিয়ে চলতে পারতেন। এটা ছিল তার পরমতসহিঞ্চুতার একটা বড় প্রমাণ।
পরবর্তীকালে তিনি বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়ার সঙ্গেও মানিয়ে চলতে পেরেছিলেন। এই বর্ষীয়ান সাংবাদিকের প্রতি তার প্রাপ্য সম্মান ও শ্রদ্ধা দেখিয়েছিলেন খালেদা জিয়া। গত রমজানের সময়ে ইফতার পার্টিতে খালেদা জিয়া তার পাশে মূসাকে বসিয়েছিলেন এবং বহু বিষয়ে কথা বলেন।
কিন্তু সবার সঙ্গে মূসা চলতে পারলেও শেখ হাসিনার সঙ্গে চলতে পারেন নি।
দেশে কুশাসনের জন্য বিভিন্ন টক শোতে হাসিনা সরকারের তীব্র সমালোচনা করতে থাকেন মূসা।
একপর্যায়ে টিভিতে মূসা দর্শকদের পরামর্শ দেন আওয়ামী লীগের যেসব মন্ত্রী-নেতা দুর্নীতিবাজ তাদের “তুই চোর” বলে ডাকতে।
প্রতিক্রিয়ায় প্রধানমন্ত্রী বলেন, যেহেতু এবিএম মূসাকে টেলিভিশন চ্যানেল খোলার লাইসেন্স তার সরকার দেয়নি সেহেতু মূসা সমালোচনামুখর হয়েছেন। শুধু তাই নয়, শেখ হাসিনা অভিযোগ করেন, একটা সরকারি টৃপে তাকে অন্তর্ভুক্ত না করায় মূসা নাখোশ হয়েছেন।
মূসা এসব অভিযোগের উত্তর দেন নি।
তিনি টিভি চ্যানেলের লাইসেন্স পান নি।
২০১৩ নভেম্বর ও ডিসেম্বরে মূসা-হাসিনা দ্বন্দ্ব চরমে পৌছায়। ওই সময়ে আওয়ামীবিরোধী আন্দোলন সারা দেশে তুঙ্গে উঠেছিল। মূসা টক শোতে বলেন, শেখ হাসিনা এখন শুধু ঢাকার প্রধানমন্ত্রী। ঢাকার বাইরে এমন গণ-আন্দোলন আমি একাত্তরেও দেখিনি।
ইনডিয়ান কারসাজি ও সমর্থনে ৫ জানুয়ারি ২০১৪-তে অধিকাংশ আসনে ভোটারবিহীন নির্বাচনে আওয়ামী লীগের “বিজয়”- কে গণতান্ত্রিক চেতনাসম্পন্ন মূসা মেনে নিতে পারেন নি।
তাই ৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৪-র দুপুরে মূসা অসুস্থ আছেন জেনে যখন ল্যাবএইড হসপিটালে তার সঙ্গে আমি দেখা করতে যাই, তিনি আমাকে দেখেই বলে ওঠেন, এটা কি হলো?
তাকে তখন নার্সরা শেভ করিয়ে দিচ্ছিলেন।
তার অসুস্থতা বিবেচনায় আমি কোনো রাজনৈতিক আলোচনায় না গিয়ে তার প্রশ্নের উত্তর এড়াতে চেয়েছিলাম।
কিন্তু মূসা বারবার বর্তমান আওয়ামী লীগের অগণতান্ত্রিক ভূমিকা এবং দলের নেত্রীর স্বেচ্ছাচারী কর্মকাণ্ড বিষয়ে উত্তেজিতভাবে বলতে থাকেন।
আওয়ামী ঘরানার অধিকাংশ বুদ্ধিজীবীর সঙ্গে এবিএম মূসার সবচেয়ে বড় পার্থক্য ছিল যে, তিনি শেখ মুজিব-অনুরাগী হয়েও আওয়ামী লীগের সমালোচনা করতে পিছপা হননি। শেখ মুজিবের বাংলাদেশ ব্র্যান্ড আওয়ামী লীগ এবং শেখ হাসিনার ইনডিয়া ব্র্যান্ড আওয়ামী লীগ যে এক নয় সে কথা তিনি বুঝতেন। শেখ হাসিনার তুচ্ছতাচ্ছিল্য করাটাকে তিনি অগ্রাহ্য করেছেন। মূসা সভ্য ও শালীন হওয়ায় শেখ হাসিনার বিভিন্ন অভিযোগের কোনো উত্তর দেন নি। তবে তিনি প্রায়ই টক শোতে বলতেন, সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনি হত্যা বিষয়ে তার কাছে অনেক তথ্য আছে। তিনি বলতেন, এখন সম্ভব না হলেও, হয়তো বা তার মৃত্যুর পর এসব প্রকাশ করা সম্ভব হবে।
তিনি ছিলেন জন্মগতভাবেই সাংবাদিক। তাই মৃত্যুশয্যায় শুয়ে থেকেও সাংবাদিকসুলভ আচরণ করেছিলেন। তবে এর মধ্যেও তিনি ভুলে যান নি আমার স্ত্রীর কথা।
তালেয়া কই? সে আসল না? প্রশ্ন করেছিলেন মূসা।
তালেয়াই আমাকে লন্ডন থেকে ফোন করেছে তোমাকে দেখতে যাবার জন্য।
লন্ডনে? লন্ডনে কেন সে?
তার হাটুতে অপারেশন হয়েছে। উত্তর দিয়েছিলাম।
আমার উত্তরে তিনি একটু থমকে গেলেন।
তারপর আমার স্বাস্থ্য সম্পর্কে জানতে চাইলেন।
আমি ভালো আছি। তোমার জন্মদিনে আবার দেখা হবে। গুড বাই।
কিন্তু এবার মূসার জন্মদিনে দেখা হয়নি। আমার সঙ্গে ছিলেন দুই সহকর্মী সজীব ওনাসিস ও দিপু রহমান। অনেক খোজাখুজি করেও রিমঝিম পাচ্ছিলাম না। পরে জানলাম সেখানে নতুন সব ফ্যাট হয়েছে। আমরা গিয়েছিলাম সেখানে। তখন তিনি ছিলেন খুবই অসুস্থ এবং ঘুমন্ত।
এখন মূসা চলে গিয়েছেন চিরঘুমের দেশে।
তার সঙ্গে আর দেখা হবে না।
তবে মনে থাকবে কেন তিনি সেই ফুটবল ম্যাচে স্টেডিয়ামে আসেন নি।
তরুণ মূসা যে নারীর প্রেমে পড়েছিলেন সেদিন তাকে গোপনে বিয়ে করেছিলেন তিনি।
সেদিন ছিল ১৪ ফেব্রুয়ারি!
পারিবারিক অসম্মতির ঝুকি থাকা সত্ত্বেও ওই তরুণ বয়সে বিয়ে করায় তার সাহসের প্রশংসা আমি করেছিলাম এবং বলেছিলাম, এই দেশে ভালোবাসা দিন তো তোমারই প্রবর্তন করা উচিত ছিল।
মূসা হেসে উত্তর দিয়েছিলেন, ১৪ ফেব্রুয়ারি যে ভ্যালেন্টাইনস ডে, সেটা তো তখন আর আমি জানতাম না। ওই ভূমিকায় তোমাকেই মানিয়েছে ভালো।
মূসা আর তার স্ত্রীর দাম্পত্য জীবন ছিল সুখের এবং পারস্পরিক নির্ভরশীলতার।
স্বামী মূসা, প্রেমিক মূসা, সাংবাদিক মূসা, পলিটিশিয়ান মূসা, টক শোর বক্তা মূসা – এসব পরিচয়ের মধ্যে আমার কাছে সেই তরুণ প্রণয়ীর পরিচয়ই সবচেয়ে বেশি উজ্জ্বল হয়ে আছে।