জাতীয় প্রেসক্লাবে মূসার প্রতি শেষ শ্রদ্ধা
শেষ শ্রদ্ধা জানাতে প্রবীণ সাংবাদিক এ বি এম মূসার মৃতদেহ জাতীয় প্রেসক্লাবে নেয়া হয়েছে। দুপুর সাড়ে ১২ টার দিকে তাঁর লাশবাহী কফিন প্রেসক্লাব চত্বরে নেয়া হয়। তাঁর প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে সাংবাদিক, বুদ্ধিজীবী, মন্ত্রিসভার সদস্যগণ, আওয়ামী লীগ, বিএনপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সিনিয়র নেতাসহ বিপুল সংখ্যক মানুষ জাতীয় প্রেসক্লাবে জড়ো হন। বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনের পক্ষ থেকে তাঁর প্রতি ফুলেল শ্রদ্ধা জানানো হয়। দুপুর একটা ৩০ মিনিটে প্রেসক্লাবে তাঁর নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। নামাজে জানাজায় রাজনৈতিক নেতাদের মধ্যে অংশ নেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, বিএনপি’র স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যরিস্টার মওদুদ আহমেদ, জাসদ নেতা আ স ম আব্দুল রব, সাংবাদিক নেতা ইকবাল সোবহান চৌধুরী প্রমুখ।জাতীয় প্রেসক্লাবে তাঁর প্রতি শেষ শ্রদ্ধা জানানোর পর তাকে নিয়ে যাওয়া হবে তাঁর গ্রামের বাড়ি ফেনীর ফুলগাজীর কুতুবপুরে। সেখানেই শেষ শয্যায় শায়িত হবেন তিনি। এর আগে বেলা সাড়ে ১১টায় ল্যাবএইডের হিমঘর থেকে জাতীয় প্রেসক্লাবে সাবেক সভাপতির লাশবাহী গাড়ি রওয়ানা হয় প্রেসক্লাবের পথে।
এবিএম মূসার ভাতিজা ফিরোজ মোস্তফা জানান, এবিএম মূসা মৃত্যুর আগে বলে গেছেন তার লাশ যেন দ্রুত কবরস্থ করা হয়। এ জন্য সংসদ ভবনে নেয়া হয়নি।
প্রথমা প্রকাশনা থেকে প্রকাশিতব্য নিজের আত্মজীবনীতেও এ বি এম মূসা তার এই দ্বিতীয় বাড়ির কথা উল্লেখ করে লিখেছেন, ‘ঢাকা শহরে ভাড়া বাড়িতে থাকতাম, তারপর নিজের বাড়ি হলো। বাড়ির নাম রিমঝিম। সেই বাড়ির বয়স ৪১ বছর। আমার একটি দ্বিতীয় বাড়ি আছে। তারও একটি নাম আছে। নামটি হচ্ছে প্রেস ক্লাব।’
বুধবার দুপুর ১টা ১৫ মিনিটে রাজধানীর ল্যাবএইড হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন ৮৩ বছর বয়সী এই সাংবাদিক। ল্যাবএইড হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানায়, এ বি এম মূসা অনেক দিন ধরেই নানা জটিলতায় ভুগছিলেন। সর্বশেষ ২৯ মার্চ তিনি এই হাসপাতালে অধ্যাপক ডা. বরেন চক্রবর্তীর তত্ত্বাবধানে ভর্তি হয়ে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন ছিলেন। স্বাস্থ্যের অবনতি হলে সোমবার মধ্যরাতে হাসপাতালের সিসিইউতে (হৃদরোগের জন্য বিশেষ পরিচর্যা কেন্দ্র) তাকে লাইফ সাপোর্টে (কৃত্রিম শ্বাস-প্রশ্বাস ব্যবস্থা) রাখা হয়।
এ বি এম মূসার শারীরিক অবস্থার কোনো উন্নতি না হওয়ায় বুধবার দুপুর ১টা ১৫ মিনিটে লাইফ সাপোর্ট খুলে নেওয়া হয় বলে জানায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
তিনি স্ত্রী-সন্তানসহ অসংখ্য আত্মীয়স্বজন ও গুণগ্রাহী রেখে গেছেন। পারিবারিক জীবনে এ বি এম মূসার তিন মেয়ে মরিয়ম সুলতানা, পারভীন সুলতানা ও শারমীন মূসা এবং এক ছেলে নাসিম মূসা। স্ত্রী সেতারা মূসা এ দেশের নারী সাংবাদিকতার অন্যতম পথিকৃৎ।
সাংবাদিকতায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখায় এ বি এম মূসা বিভিন্ন পুরস্কার অর্জন করেছেন। এর মধ্যে একুশে পদক (১৯৯৯), জেফারসন ফেলোশিপ (১৯৭০), কমনওয়েলথ প্রেস ইউনিয়ন ফেলোশিপ (১৯৬১) উল্লেখযোগ্য।