মেয়েদের খেলাধুলার পক্ষে সৌদি শূরা পরিষদ
সৌদি আরবের শূরা পরিষদ মেয়েদের সরকারি স্কুলে খেলাধুলার ওপর নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়ার সুপারিশ করেছে। তবে পোশাক পরিধান ও স্ত্রী-পুরুষের ব্যবধান সংক্রান্ত শরিয়া নিয়মাবলী বজায় থাকবে৷ মেয়েদের বেসরকারি স্কুলে এ নিষেধাজ্ঞা গত মে মাসেই তুলে নেয়া হয়৷
সৌদি আরব অলিম্পিকে প্রথম মেয়ে অ্যাথলেট পাঠায় ২০১২ সালে, তা-ও মাত্র দুজন৷ শরিয়া আইনের রক্ষণশীল ব্যাখ্যার ফলে সৌদি আরবে নারীদের গাড়ি চালানো নিষেধ; বিদেশযাত্রা, চাকরি করা কিংবা ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খোলার আগে কোনো পুরুষ আত্মীয়ের অনুমতি নেয়ার প্রয়োজন পড়ে। তবুও বাদশাহ আব্দুল্লাহ নারী অধিকারের উন্নতি ঘটানোর যে সতর্ক প্রচেষ্টা চালাচ্ছেন, তা অধিকাংশ ক্ষেত্রে রক্ষণশীলদের প্রতিরোধের সম্মুখীন হচ্ছে৷
বাদশাহ নিজে শূরা পরিষদ নিয়োগ করেন৷ পরিষদের সিদ্ধান্ত সরকারের জন্য বাধ্যতামূলক নয়৷ তবুও সৌদি আরবে তার গুরুত্ব আছে, কেননা পরিষদই হলো একমাত্র সরকারি প্রতিষ্ঠান, যেখানে বিভিন্ন স্পর্শকাতর সামাজিক প্রশ্নে নতুন আইন অথবা সরকারি নীতি নিয়ে প্রকাশ্যে আলোচনা চলে৷ বাদশাহ আব্দুল্লাহ ঠিক এক বছর আগে এই ১৫০ সদস্যবিশিষ্ট পরিষদে ৩০ জন নারী নিয়োগ করেছেন। শূরা পরিষদের শুনানিতে মেয়েদের স্কুল স্পোর্টসের সপক্ষে ও বিপক্ষে নানা যুক্তি পেশ করা হয়৷ সপক্ষে যারা, তারা সৌদি সমাজে মেদবাহুল্যজনিত রোগ বৃদ্ধির কথা বলেছেন, বিশেষ করে মেয়েদের মধ্যে৷ মেয়েদের স্কুলে স্পোর্টস ইনস্ট্রাক্টর হিসেবেও অনেকে কাজ পাবে৷ বিরোধীদের মূল যুক্তি : ছেলেদের স্কুলে স্পোর্টস থাকা সত্ত্বেও ছেলেদের মধ্যে স্থূলতা কিছুমাত্র কমেছে কি? বিরোধীদের আরো যুক্তি : মেয়েদের সরকারি স্কুলগুলোতে খেলাধুলার সরঞ্জাম নেই৷
শূরা পরিষদ সব পক্ষের যুক্তি বিবেচনা করে রায় দিয়েছে যে, মেয়েদের স্কুল স্পোর্টস শরিয়ারবিরোধী নয়৷ শরিয়ায় নির্দিষ্ট সীমানার মধ্যে মেয়েদের খেলাধুলার অধিকার আছে, বলেছেন গ্র্যান্ড মুফতি শেখ আবদেল আজিজ বিন বাজ স্বয়ং৷ অপরদিকে এ কথাও ঠিক যে, এই সৌদি সরকারই ২০০৯ ও ২০১০ সালে মেয়েদের জন্য বেসরকারি ‘জিম’ অর্থাৎ শরীরচর্চা কেন্দ্র বন্ধ করে দেয়ার নির্দেশ দেন৷ আর প্রকাশ্য স্থানে স্ত্রী-পুরুষের মেলামেশা নিষিদ্ধ হওয়ায় নারীদের কোনো ক্রীড়াঙ্গণে যাওয়া বস্তুত নিষিদ্ধ৷