ওয়েস্টমিনস্টার নয়, সেক্সমিনস্টার
ওয়েস্টমিনস্টার গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার জন্য খ্যাত বৃটিশ সংসদকে ‘সেক্সমিনস্টার’ উপাধি দিয়েছে বৃটেনের প্রভাবশালী টিভি স্টেশন চ্যানেল ফোর। চ্যানেলটির এক অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বৃটিশ সংসদের নিম্নকক্ষ হাউস অব কমন্স এখন এমপিদের যৌন হেনস্থা ও নির্যাতন, ক্ষমতার অপব্যবহার এবং মদ খাওয়ার আখড়ায় পরিণত হয়েছে। এতে আরো বলা হয়েছে, হাউস অব কমন্সে এমপিদের হাতে নারীদের পাশাপাশি অল্প বয়সী তরুণদের যৌন হেনস্থা ও নির্যাতনের শিকার হওয়ার ঘটনা বেশি ঘটছে। চ্যানেল ফোরের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, হাউস অব কমন্সে কর্মরত ব্যক্তিদের এক চতুর্থাংশই বিভিন্ন সময়ে যৌন নির্যাতনের শিকার হয়েছেন আর না হয় তাদের বন্ধু-বান্ধবরা এ জাতীয় পরিস্থিতিতে পড়েছেন বলে তাদেরকে জানিয়েছেন।এছাড়া ৪০ শতাংশ বলেছেন, তারা অনাকাঙ্ক্ষিত যৌন হেনস্থার মুখে পড়েছেন। ‘দা পালেস অব সেক্সমিনস্টার’ নামের এ প্রতিবেদনে আরো বলা হয়েছে, যৌন নির্যাতন চালানোর সঙ্গে নারী ও পুরুষ উভয় লিঙ্গের বৃটিশ এমপিরা সমানভাবে জড়িত রয়েছেন। এমন অপকর্মে লিপ্ত এমপিরা বলে থাকেন, তাদের লালসা চরিতার্থের সুযোগ দেয়া হলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির জন্য ভবিষ্যতে বিপুল সম্ভাবনার দ্বার খুলে যাবে। অন্যথায় জীবন ধ্বংস করে দেয়ারও হুমকি দেয়া হয়।বৃটিশ সংসদের যৌন নির্যাতন নিয়ে চ্যানেল ফোর বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও লিঙ্গের ৭০জনের সঙ্গে কথা বলে। তারা সবাই এ ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেছেন।বৃটিশ সংসদে কর্মরত এক তৃতীয়াংশই ব্যক্তিগতভাবে যৌন হেনস্তার শিকার হয়েছেন। ২১ শতাংশ লোক এমন ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী এবং ৪৬ শতাংশ লোক প্রথমবারের মত বা দ্বিতীয়বারের মত এ ধরণের ঘটনার শিকার হয়েছেন। তবে তারা ক্যামেরার সামনে কথা বলতে চাননি এই আশঙ্কায় যে তাতে তাদের রাজনৈতিক ক্যারিয়ারের ক্ষতি হতে পারে। এদের একজন বলছিলেন, ‘একজন এমপি আমাকে রাত ১টার দিকে তার সাথে টয়লেটে যেতে বলেন। এরপর আমি রাত ৩টার দিকে দেখি যে তিনি আরেকজনকে সঙ্গে নিয়ে হোটেল রুমে যাচ্ছেন, যার বয়স আনুমানিক ১৮ বছর।’আরেকজন বলেন, ‘ তিনি আমাকে তার অফিসের গে বারে আমন্ত্রণ জানান এবং (আমি পৌঁছার পর) তিনি আমার কাছে এসে আমার কাঁধে হাত রাখেন। এরপর এক সময় তিনি আমার পিঠে হাত রাখেন এবং নাড়াচাড়া করতে থাকেন।’একজন গবেষক বলেন, ‘যৌন নির্যাতন ওয়েস্টমিনস্টারের সংস্কৃতিতে পরিণত হয়েছে। গত এক দশকে আমি ডজন ডজন নারী পুরুষের কাছ থেকে এমন অভিযোগ পেয়েছি।’এদিকে এ সব অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে হাউস কমন্সের স্পিকার জন বেরকাউ সব দলের এমপিদের সঙ্গে কর্মরত কর্মীদের জন্য একটি হেলপ লাইন চালু করার ঘোষণা দিয়েছেন।