আতরের তোলা ৩২ হাজার টাকা

মাসুদ আহমেদ, মৌলভীবাজার থেকে: আতরের তোলা ৩২ হাজার টাকা। ঈদের আগে এভাবেই আতরের মূল্য বাড়ে। বিশেষ করে বড়লেখার দেহনীলুদ আতরের ক্ষেত্রেই শুধু ব্যতিক্রম। চাহিদা অধিক। সেই ক্ষেত্রে এ আতরের প্রতিতোলা বিক্রি হচ্ছে ৩২ থেকে ১ লাখ টাকা পর্যন্ত। অপরদিকে আতর ক্রেতাদের ভিড় দিন দিন বাড়ছে। নানা ব্র্যান্ডের আতর সংগ্রহকারীরা বলছেন, ক্রেতাদের চাহিদার দিকে দৃষ্টি রেখেই দোকান সাজানো হয়েছে। সাধারণত আতর বিক্রি বাড়ে ঈদের ২-১ দিন পূর্বে- একথা জানান একজন ব্যবসায়ী। তবে এবার অনেকেই আগে আতর কিনতে আসছেন। দিন দিন ক্রেতার সংখ্যা বাড়ছে। এবার দেশি আতরের প্রতি তাদের আগ্রহ বেশি। মৌলভীবাজারের বড়লেখা ও জুড়ি উপজেলা আগর-আতরের জন্য বিখ্যাত। এখানে তৈরি সুগন্ধি আতর আরবের বাদশা-আমিররা ব্যবহার করেন। আলাউর রহমান নামে এক ক্রেতা প্যারাডাইস পারফিউম হাউজে এসেছেন আতর কিনতে। জানালেন এক তোলা দেহনেল উদ আতর কিনছেন। এটি মৌলভীবাজারের বড়লেখার আজিমপুর তৈরি হয়। নিজের জন্য এ সুগন্ধি আতরটিই কিনেছেন এবার। তিনি জানান, আতরের প্রতি ছোটবেলা থেকেই একটা দুর্বলতা আছে। বয়স ষাট অতিক্রম করার পরও এ দুর্বলতা কাটেনি। তাই প্রতি বছর অনেকটা শখ করে বিভিন্ন দেশের বিভিন্ন কোয়ালিটির আতর কেনেন তিনি। এ সময় কয়েকজন মাদরাসা ছাত্র এসে দোকানির কাছে সৌদি আরবের আতর চাইলে কর্মচারী রাজ সৌদির কয়েক কোয়ালিটির আতর দেখান। এর মধ্যে রয়েছে মজলিস, আল ফারিস, চন্দন, কস্তুরী। এরা শহরের জামেয়া দ্বীনিয়া মাদরাসার ছাত্র। ছাত্র আল-কাউসার বলেন, মৌলভীবাজারে এমনিতেই আতরের দোকান কম। তাই ঈদের দুই একদিন আগে আতর কিনতে হুড়োহুড়ি পড়ে যায়। এজন্য পাজামা পাঞ্জাবি কেনার সঙ্গে সঙ্গে আতর কেনার কাজটি সেরে ফেলার জন্য এসেছেন তারা। তবে অপর ছাত্র আবদুর রহমান জানায়, চাহিদা অনুযায়ী মৌলভীবাজারে আতর পাওয়া যায় না। তাই সিলেট অথবা ঢাকার বায়তুল মোকাররম গেট থেকে তিনি আতর কিনে থাকেন। প্যারাডাইস পরফিউম হাউসের ম্যানেজার ওয়াহিদুর রহমান সিপন জানান, এ বছর সৌদি আরবের মক্কা, দুবাই, ইন্ডিয়া ও বাংলাদেশের প্রসিদ্ধ জুড়ী ও বড়লেখার আগরের আতর দোকানে উঠানো হয়েছে। এসব আতরের মধ্যে রয়েছে জুড়ীর দেহনি লুদ, যার প্রতি তোলার দাম ৩২ হাজার টাকা। দেহনি লুদের উন্নত কোয়ালিটি ৬৫ হাজার থেকে লাখের উপরেও তোলা বিক্রি হয়। সৌদি আরবের মজলিস প্রতি তোলা ২৫৮০ টাকা, আল-ফারিস ২৫৫০ টাকা, চন্দন ২০৮০ টাকা, কস্তুরী ২১৫০ টাকা, আল রিহাব ১৩০ টাকা তোলা বিক্রি হয়। এছাড়াও দুবাই থেকে আমদানি করা হয়েছে বিভিন্ন কোয়ালিটির আতর। এগুলোর মধ্যে রয়েছে আলফে জারা (প্রতি ৮ মিলিগ্রাম) ৫২০ টাকা, চন্দন ৩৮০ টাকা, মেস্কে আম্বর ৪৮০ টাকা, হেনা ৪৭০ টাকা, শাহী দরবার ৪৭০ টাকা। ইন্ডিয়া থেকে আনা জান্নাতুল ফেরদৌস (৮ মিলি গ্রাম) ২৫৫ টাকা, বকুর ১২০ টাকা, কামিনী ১২০ টাকা, বেদি ১২০ টাকা, রজনীগন্ধা ১৪০ টাকা। মক্কা থেকে আনা জান্নাতুল বাকী ১৩০ টাকা, রিয়াদুল জান্নাত ২৪০ টাকা ও মরিয়ম ১১০ টাকা।

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও দেখুন...
Close
Back to top button