বাংলা নববর্ষ উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর বাণী
রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলা নববর্ষ উপলক্ষে গতকাল রোববার জাতির উদ্দেশে বাণী প্রদান করেছেন।
রাষ্ট্রপতি তার বাণীতে বলেন, “আজ পহেলা বৈশাখ, ১৪২১ বঙ্গাব্দ। শুভ নববর্ষ। বাংলা নববর্ষের এই আনন্দঘন দিনে আমি দেশবাসী ও প্রবাসে বসবাসরত সকল বাংলাদেশিকে আন্তরিক অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা জানাই। ফেলে আসা বছরের সব তমসা দূর হয়ে অনাবিল আলোয় স্নাত হবে আমাদের ব্যক্তিক ও সামষ্টিক ভবিষ্যৎ এ প্রত্যাশা করি।
তিনি বলেন, ফসলি সন হিসেবে মোগল আমলে যে বর্ষগণনার সূচনা হয়েছিল, আজ তাই আমাদের নতুন বছরের প্রথম দিন যা সর্বজনীন জাতীয় উৎসবে পরিণত হয়েছে। সাল গণনার সীমা ছাড়িয়ে ষাটের দশকে এই উৎসব মিলিত হয়েছে আমাদের জাতিসত্তা আবিষ্কারের অন্যতম সূত্রবিন্দুতে।
তিনি আরও বলেন, বাংলা নববর্ষ চিরায়ত বাংলার ঐতিহ্যে লালিত এক অনন্য দিন। দিনটি সবাইকে প্রবলভাবে আপ্লুত করে এবং পুরাতনকে পেছনে ফেলে সামনে চলার অফুরন্ত প্রেরণা যোগায়। দেশজুড়ে চৈত্রসংক্রান্তি ও বৈশাখি মেলা উদযাপন দেশীয় সংস্কৃতির প্রসারেও অনবদ্য ভূমিকা রাখে। আমাদের শিল্প, সাহিত্য, সংস্কৃতি, কৃষি, ব্যবসা, পার্বণসহ পারিবারিক ও সামাজিক জীবনে বাংলা সনের ব্যবহার ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে আছে। বাঙালির জীবনে বাংলা নববর্ষের আবেদন তাই চিরন্তন ও সর্বজনীন। অতীতের সব গ্লানি ও বিভেদ ভুলে বাংলা নববর্ষ জাতীয় জীবনের সর্বক্ষেত্রে আমাদের ঐক্য আরও সুদৃঢ় করবে এবং বয়ে আনবে অফুরন্ত আনন্দের বারতা- এটাই সকলের প্রত্যাশা।
রাষ্ট্রপতি বাংলা নববর্ষ- ১৪২১ সবার জন্য শুভ ও কল্যাণকর হোক- এই কামনা করেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার বাণীতে বলেন, “বাংলা নববর্ষের এই শুভক্ষণে দেশবাসী, প্রবাসী বাঙালিসহ সবাইকে জানাচ্ছি আন্তরিক শুভেচ্ছা ও শুভ নববর্ষ। বাঙালির সর্বজনীন উৎসব-বাংলা নববর্ষ। আমরা নববর্ষকে আবাহন করি প্রাণের স্পন্দনে, গানে-কবিতায়, আবেগের উত্তাপে।
তিনি বলেন, নববর্ষ মানেই লোকায়ত বাঙালি সংস্কৃতির বর্ণাঢ্য উৎসব। নতুন আশায় উদ্দীপ্ত হওয়ার দিন। আমাদের লেখক, কবি, শিল্পীদের ছন্দ, বর্ণ, তুলি ও সুরে তাই বাংলা নববর্ষ প্রতিবছর নতুন রূপে হাজির হয়। পহেলা বৈশাখের পূর্বে চৈত্রসংক্রান্তি থেকে দেশের নানাস্থানে শুরু হয় বৈশাখি মেলা, হাট, আড়ংসহ নানা আয়োজন; যা বিনোদনের পাশাপাশি দেশের অর্থনীতিতে আনে নতুন গতি।
প্রধানমন্ত্রী আশা প্রকাশ করেন, পহেলা বৈশাখে বাঙালি সংস্কৃতির এ চর্চা আমাদের জাতিসত্তাকে আরও বিকশিত করবে। আমাদেরকে আরও ঐক্যবদ্ধ করবে। সাম্প্রদায়িকতা, ধর্মান্ধতা ও দেশবিরোধী অপশক্তির বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলার শক্তি যোগাবে।
তিনি বলেন, সকল জরা ও গ্লানি মুছে দিয়ে বাঙালির জীবনে ১৪২১ সন সুখ, সমৃদ্ধি ও অনাবিল আনন্দ বয়ে আনুক এই প্রত্যাশা করছি। তথ্য বিবরণী।