হার্ভাডের অনুষ্ঠানে নিশা দিশাই
রাজনৈতিক ঐক্য না হলে বাংলাদেশের স্থিতিশীলতা হুমকিতে পড়বে
বাংলাদেশে বৃহৎ রাজনৈতিক একতার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের চাপ অব্যাহত রয়েছে বলে জানিয়েছেন দেশটির দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়া বিষয়ক সহকারি পররাষ্ট্রমন্ত্রী নিশা দেশাই বিশওয়াল। তিনি বলেন, রাজনৈতিক একতা ছাড়া বাংলাদেশের স্থিতিশীলতা ও ভবিষ্যত সমৃদ্ধি হুমকির মুখে পড়ে যাবে। বুধবার যুক্তরাষ্ট্রের বোস্টনের হার্ভাড ইউনিভার্সিটিতে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
‘ইউএস ফরিন পলিসি ইন সাউথ এশিয়া: এ ভিশন ফর প্রসপারিটি এন্ড সিকিউরিটি’ শিরোনামের ঐ অনুষ্ঠানে নিশা দেশাই বলেন, রানা প্লাজা ধস এবং তাজরীন কারখানায় অগ্নিকাণ্ডের মতো ঘটনার কারণে সারা বিশ্বের নজর গিয়ে পড়েছিল বাংলাদেশের সুবিধাবঞ্চিত শ্রমিকদের ওপর। তখনই দেশটির পোশাক খাতে উন্নয়নের লক্ষ্যে ইউরোপীয় সঙ্গীদের সঙ্গে নিয়ে আমরা দেশটির শ্রমিক, কারখানা, সুশীল সমাজ এবং সরকারকে সাথে নিয়ে উন্নয়ন প্রচেষ্টা চালাতে শুরু করেছি।
আর্থ-সামাজিক খাতে উন্নয়নের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, স্বাস্থ্য, খাদ্য নিরাপত্তা ও আবহাওয়া পরিবর্তনের উপর গুরুত্বারোপ করে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার গৃহীত তিনটি উন্নয়ন প্রকল্পই প্রয়োগ করা হয়েছে- এমন একমাত্র দেশ হলো বাংলাদেশ।
গত ২০ বছরে বাংলাদেশে ‘আন্ডার ফাইভ মর্টালিটি’র হার ৬০ শতাংশে নামিয়ে আনার কাজে আন্তর্জাতিক উন্নয়ন বিষয়ক মার্কিন সংস্থা ইউএসএইড গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছে বলেও জানান নিশা দিশাই।
তিনি বলেন, শশু ও মাতৃমৃত্যুর হার সম্পর্কিত সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের জন্য মার্কিন প্রশাসনের সহযোগিতায় যে কয়েকটি দেশ বর্তমানে সঠিক পথে রয়েছে বাংলাদেশ তাদের মধ্যে অন্যতম।
নিশা দিশাই বলেন, নিরাপত্তার ক্ষেত্রে সহযোগিতার বিষয়টিতেও গত কয়েক বছরে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ ও নেপালের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক এগিয়েছে। শুধু আন্তর্জাতিক শান্তিরক্ষা মিশনেই যে বাংলাদেশ ও নেপাল বিশাল অবদান রাখছে তাই নয়, বরং সীমান্তে নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ, সন্ত্রাস নিরসন এবং মানবিক সহায়তা ও দুর্যোগ ব্যবস্তাপনার (এইচএডিআর) ক্ষেত্রেও দেশ দুটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।
প্রাকৃতিক ও মানবসৃষ্ট দুর্যোগের সময় পরিস্থিতি সামলে নেয়ার সক্ষমতা বৃদ্ধির ক্ষেত্রে সহায়তা করার জন্য বাংলাদেশ ও নেপালের দিকেই যুক্তরাষ্ট্র বিশেষভাবে নজর দিচ্ছে বলেও জানান তিনি।
তিনি বলেন, ঘূর্ণিঝড়ের কারণে বাংলাদেশের সম্ভাব্য ক্ষতির পরিমাণ কমাতে আমরা ২০০১ সালের পর থেকে দেশটিতে পাঁচশ’রও বেশি ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণ করেছি। বাংলাদেশ নৌবাহিনীতে ইতিমধ্যেই আমরা মার্কিন কোস্ট গার্ডের একদল সদস্যকে পাঠিয়েছি যারা ইতিমধ্যেই বিভিন্ন দুর্যোগে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন।