বেইজিংয়ে বাংলাদেশী শিক্ষার্থীর অসাধারণ সাফল্য
১ জুলাই বিএমডিসি অনুমোদিত বেইজিং ক্যাপিটাল মেডিক্যাল ইউনিভার্সিটিতে প্রথমবারের মতো অনুষ্ঠিত হলো আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের সমাবর্তন। চীনের রাজধানীতে অবস্থিত এই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রথমবারের মতো গ্রাজুয়েট হলেন ২ জন বাংলাদেশী শিক্ষার্থী। সমাবর্তন অনুষ্ঠানে বিভিন্ন দেশের অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থীকে সম্মাননা প্রদান করা হয়।
২০০৭ সাল থেকে অধ্যয়নরত বাংলাদেশী শিক্ষার্থী ডা: সাহির ফওয়াজ খান এবং ডা: সানজিদ চৌধুরি অনুষ্ঠানে উপস্থিত থেকে তাদের সম্মাননা গ্রহণ করেন। এই অসাধারন কৃতিত্বে বেইজিং-এ বাংলাদেশ কমিউনিটির গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ তাদের অভিনন্দন জানিয়েছেন।
সদ্য এমবিবিএস পাস করেন ডা: সানজিদ চৌধুরী। ছোট বেলায় হারিয়েছেন মাকে। কিছুদিন আগে বাবকেও হারিয়েছেন। সম্মাননা গ্রহণের পর তার অনুভুতির কথা জানতে চাইলে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন তিনি। বলেন, আল্লাহর রহমতে আজ আমি ডাক্তার হয়েছি। বাবা, মা বেঁচে থাকলে আজ হয়তো অনেক খুশি হতেন । কষ্ট এটাই যে, যারা আমাকে নিয়ে স্বপ্ন দেখতেন তারাই আমার এই খুশির দিনটা দেখে যেতে পারলেন না।
দীর্ঘ ৬ বছর পর এই সনদ প্রাপ্তির আনন্দের মধ্যেও পিতা মাতার অনুপস্থিতির কথা স্মরণ করে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন এই মেধাবী শিক্ষার্থী।
আরেক কৃতি শিক্ষার্থী ডা: সাহির ফওয়াজ খান। মহান আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করে তিনি বলেন, দীর্ঘ ৬ বছর পড়াশুনার পর আজ ডাক্তার হয়েছি। বাবা মায়ের লালিত স্বপ্ন পূরণ করতে পেরেছি। আশা করি মানুষের সেবা করে এই সনদের পূর্ণ মর্যাদা দিতে পারব। আবেগাপ্লুত কণ্ঠে পরিবার-পরিজনসহ সকল শুভানুধ্যায়ীর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান।
সনদ প্রাপ্তির পর যাবতীয় আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করে বাংলাদেশে ফিরে গিয়ে ডাক্তারি পেশা শুরু করার মাধ্যমে মানুষের সেবা করে তাদের পাশে দাঁড়াবার আশাবাদ বাক্ত করেন এই দুই কৃতিমান। ভবিষ্যতে মানুষ এর সেবায় নিজেকে সফল করার জন্য সকল এর কাছে দোয়া চেয়েছেন তারা। একই সাথে নিজের পারিবারিক সম্মান ও ঐতিহ্য বজায় রেখে এবং ধর্মীয় অনুশাসন মেনে নিজেকে সঠিক পথে পরিচালনা করে পরিবারের লালিত স্বপ্ন পূরণ করার জন্য চীনে অধ্যয়নরত সকল শিক্ষার্থীর প্রতি আহবান জানান।
উল্লেখ্য, ১৯৬০ সালে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পর ২০০৭ সালে প্রথমবারের মতো এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী ভর্তি করার অনুমোদন দেয় চীনের শিক্ষা মন্ত্রণালয়। এর আগে এই বিশ্ববিদ্যালয়ে শুধুমাত্র চাইনিজ শিক্ষার্থীরাই পড়াশুনা করতে পারত। পর্যায়ক্রমে বেইজিং এর এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে বাংলাদেশ মেডিক্যাল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউঞ্চিল (বিএমডিসি) অনুমোদন দিলে ২০০৭ সাল থেকে বাংলাদেশী শিক্ষার্থীরা এখানে অধ্যয়ন শুরু করে। -আইমান ওয়াহেদ বেইজিং থেকে