২২ বিজ্ঞানী পেলেন স্বর্ণপদক
২২ জন নবীন ও প্রবীণ বিজ্ঞানীকে প্রদান করা হলো স্বর্ণপদক। রোববার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাদের হাতে তুলে দেন পদক। পদক প্রদান অনুষ্ঠানে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমি ছাত্রছাত্রী এবং নতুন প্রজন্মকে বিজ্ঞানের ওপর আরো বেশি লেখাপড়া, চর্চা ও গবেষণার আহ্বান জানাই। কেননা ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত বাংলাদেশ গড়তে বিজ্ঞানের ওপর ব্যাপক গবেষণার প্রয়োজন।’
সরকারি বার্তা সংস্থা বাসস জানায়, সকালে ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে বাংলাদেশ বিজ্ঞান একাডেমি এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন প্রাক্তন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমান, একাডেমীর সভাপতি অধ্যাপক ড. মেসবাহউদ্দিন আহমেদ, অধ্যাপক ড. নঈম চৌধুরী প্রমুখ। প্রধানমন্ত্রী বলেন, গবেষণায় অনেক সফলতা দেখিয়েছে বাংলাদেশ। দেশ যে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়েছে, তা এ গবেষণার ফসল। এ দেশের বিজ্ঞানীদের উদ্ভাবন করা সফটওয়্যার সারা দুনিয়ায় যথেষ্ট সুনাম কুড়িয়েছে। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতা, প্রদর্শনী ও প্রবন্ধ প্রকাশনায় বিজ্ঞানীদের উপস্থাপনা বাংলাদেশের জন্য বিজ্ঞানচর্চায় সম্মান বয়ে এনেছে। পাটের জীবনরহস্য উদ্ঘাটন দেশের কৃষিপ্রযুক্তির ইতিহাসে নতুন দিগন্তর উন্মোচন করেছে।
বর্তমান সরকার বরাবরই বিজ্ঞান গবেষণা ও উদ্ভাবনে পৃষ্ঠপোষকতা এবং বিজ্ঞান চর্চাবান্ধব নীতি প্রণয়নে আন্তরিক- উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, স্বাধীনতার পরপরই জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির ক্ষেত্রে বহুমুখী কর্মসূচি হাতে নেন। এগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো- পরমাণু শক্তি গবেষণার মানোন্নয়ন, শিল্প গবেষণা শক্তিশালীকরণ এবং সবুজ বিপ্লব বাস্তবায়ন। এ ছাড়া লাগসই প্রযুক্তি উদ্ভাবনের জন্য ১৯৭৩ সালে বিসিএসআইআর-সহ কৃষি গবেষণা কাউন্সিল, ধান, পাট, মৎস্য প্রভৃতি খাতে গবেষণার জন্য বঙ্গবন্ধুর ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠার কথা উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু এমন একটি রাষ্ট্রের স্বপ্ন দেখেছিলেন, যা হবে শোষণ-বঞ্চনামুক্ত। যেখানে অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান, চিকিৎসা ও শিক্ষাসহ মানুষের সব মৌলিক অধিকার নিশ্চিত হবে। তার স্বপ্ন বাস্তবায়নের জন্য বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির কোনো বিকল্প নেই। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সফল প্রয়োগের মাধ্যমেই সাধারণ মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করা সম্ভব। প্রধানমন্ত্রী বলেন, সোনার বাংলা গড়তে হলে ব্যাপকভাবে গবেষণা দরকার। সে ক্ষেত্রে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি যথেষ্ট অবদান রাখতে পারে।
শেখ হাসিনা বলেন, বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তিতে দক্ষ বিজ্ঞানী, প্রযুক্তিবিদ ও গবেষক তৈরির লক্ষ্যে ১৯৯৯ সালে উদ্যোগটি প্রথম গ্রহণ করা হয়। কিন্তু বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার এ কর্মসূচি বন্ধ করে দেয়। আওয়ামী লীগ পুনরায় সরকার গঠনের পর আবার তা চালু করা হয়।
এ পর্যন্ত ১৯৬ জনকে বঙ্গবন্ধু ফেলোশিপ প্রদান করা হয়েছে- উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিজ্ঞান গবেষণা ও অন্যান্য কর্মকাণ্ড পরিচালনার জন্য আরো প্রায় ৩ হাজার জনকে ফেলোশিপ দেওয়া হয়েছে।