হাটহাজারী মাদরাসার নামে রেলের জমি, হেফাজতের ব্যাখ্যা
রেলের জমি দারুল উলূম হাটহাজারী মাদরাসার জমি লিজ নেয়ার বিষয়ে ব্যাখ্যা দিয়েছে হেফাজতে ইসলাম। রোববার রাতে বিভিন্ন গণমাধ্যমে হেফাজত ইসলামের প্রচার বিভাগের মাওলানা আবু রায়হানের পাঠানো এক বিবৃতিতে ব্যাখ্যা দেয়া হয়।
বিবৃতিতে হেফাজত নেতারা বলেন, ‘দারুল উলূম হাটহাজারী মাদরাসার পক্ষ থেকে রেলওয়ের জমি লিজ নেয়ার জন্য আইনসিদ্ধভাবে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করা হয়েছিল। আইনসম্মতভাবেই রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ জমিগুলো মাদরাসাকে বরাদ্দ দিয়েছে। তারপর মাদরাসা কর্তৃপক্ষ জমি দখলে পাওয়ার পর মাদরাসার নামে সাইনবোর্ড ও খুঁটি দিয়ে সীমানা নির্ধারণ করেছে। সম্পূর্ণ রেলওয়ের জমিগুলো হাটহাজারী মাদরাসার কাজে ব্যবহৃত হবে।
আহমদ শফী ও তার পরিবার কিংবা হেফাজতে ইসলামের কোনো সম্পর্ক এই জমির সঙ্গে নেই। সুতরাং রেলওয়ের জমি সংক্রান্ত বিষয়গুলো হেফাজতে ইসলাম গঠিত হওয়ার অনেক আগের বিষয়। জমির লিজ সংক্রান্ত বিষয়ে সরকারের সঙ্গে হেফাজতের কথিত সমঝোতার প্রচারণা ষড়যন্ত্রেরই অংশ।’
হেফাজত নেতারা বলেন, ‘আল্লামা আহমদ শফী এমন একজন পরিচ্ছন্ন ব্যক্তি- যিনি প্রায় শতায়ুর দ্বারপ্রান্তে এসেও তার চরিত্রে কোনো কালিমা লাগেনি। দুনিয়ার কোনো লোভ তাকে কখনো স্পর্শ করেনি। তিনি একজন মহান বুজুর্গ, প্রখ্যাত মুহাদ্দিস, মুফাসসিরে কোরআন, আধ্যাত্মিক নেতা ও বিশ্ববরেণ্য ইসলামী চিন্তাবিদ।
তার আহ্বানে সাড়া দিয়ে বিগত ২০১৩ সালের ৬ এপ্রিল ঐতিহাসিক লংমার্চ ও ৫ মে ঢাকা অবরোধে শাপলা চত্বরে এদেশের কোটি মানুষ স্বতঃস্ফূর্তভাবে যোগদান করেছে। যা বাংলাদেশের ইসলামী আন্দোলনের ইতিহাসে একটি নতুন অধ্যায় রচনা করেছে। তার মতো এমন মহান ব্যক্তি সম্পর্কে জনমনে নেতিবাচক ধারণা সৃষ্টি করার দুরভিসন্ধিতে কিছু মিডিয়া সরকার ও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের অর্থনৈতিক সুবিধা গ্রহণের যে জঘন্য মিথ্যাচার করছেন, তার নিন্দা জানানোর ভাষা আমরা খুঁজে পাচ্ছি না।’
হেফাজত নেতারা আরো বলেন, ‘আহমদ শফীকে ঘায়েল করার জন্য তার সুযোগ্য ছেলে হেফাজতের প্রচার সম্পাদক মাওলানা আনাস মাদানীর নামে বিভিন্ন অভিযোগ উত্থাপন করে আল্লামা শফী ও হেফাজতকে প্রশ্নবিদ্ধ করে নেতাকর্মী ও সমর্থকদের মাঝে বিভ্রান্তি ও হতাশা সৃষ্টি করে হেফাজত ভাঙার ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে।
সরকারের সঙ্গে সমঝোতা প্রসঙ্গে হেফাজত নেতারা বলেন, ‘সরকারের পক্ষ থেকে বিভিন্ন সময় ১৩ দফা দাবি বাস্তবায়নের আশ্বাসের প্রেক্ষিতে সরকারের বিভিন্ন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা শাহ আহমদ শফীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন। তার অর্থ সরকারের সঙ্গে আতাত করা বা কোনো আর্থিক সুযোগ-সুবিধা গ্রহণ করা নয়। যারা এহেন মিথ্যা ও উদ্দেশ্যমূলক প্রপাগান্ডা চালাচ্ছেন, তাদের কাছ থেকে সতর্ক থাকার জন্য সর্বস্তরের ওলামা-মাশায়েখ ও তৌহিদি জনতার প্রতি আমরা বিনীত আহ্বান জানাচ্ছি।’
বিবৃতিদাতারা হলেন- হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের সিনিয়র নায়েবে আমির মাওলানা শাহ মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী, নায়েবে আমীর মাওলানা হাফেজ শামসুল আলম, মাওলানা নূর হোসেন কাছেমী, মাওলানা শাহ আহমদুল্লাহ আশরাফ, মাওলানা আবদুল মালেক হালিম, মাওলানা আবদুল হামিদ পীরসাহেব মধুপুর, কেন্দ্রীয় মহাসচিব মাওলানা হাফেজ জুনাইদ বাবুনগরী, মাওলানা সালাউদ্দিন নানুপুরী, মাওলানা সাজেদুর রহমান, মাওলানা সলিমুল্লাহ, মাওলানা জাফরুল্লাহ খান, মাওলানা জুনাইদ আল হাবিব, মাওলানা লোকমান হাকিম, কওমী মাদরাসা শিক্ষাবোর্ড বেফাক মহাসচিব মাওলানা আবদুল জব্বার, মাওলানা মুফতি জসিম উদ্দীন, মাওলানা ফোরকান আহমদ, মাওলানা আবদুল বাসেত বরকতপুরী সিলেট, মাওলানা ওবায়দুর রহমান মাহবুব বরিশাল, মাওলানা
মোশতাক আহমদ খুলনা, মাওলানা জামাল উদ্দিন রাজশাহী প্রমুখ। –শীর্ষ নিউজ ডটকম