লংমার্চ পৌঁছার আগেই তিস্তায় পানির ঢল
প্রায় পানিশূন্য ধূ ধূ তিস্তা হঠাৎই ভরে উঠেছে পানিতে। ঢল নেমেছে পানির, প্রবাহিত হচ্ছে ঢেউ তুলে। তিস্তা সেচ প্রকল্পের সবগুলো নালা ভরে গেছে কানায় কানায়। স্বস্তি ফিরেছে কৃষকদের।
মঙ্গলবার দুপুর ১২টার পর থেকে হঠাৎ পানির ঢেউ খেলতে দেখা যায় তিস্তায়। ডালিয়া পয়েন্টে প্রবাহিত হতে দেখা যায় তিন হাজার কিউসেক পানি।
তবে হঠাৎ করেই তিস্তায় পানি প্রবাহের কোনো কারণ জানাতে পারছে না পানি উন্নয়ন বোর্ডসহ (পাউবো) সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।
এদিকে তিস্তার পানির ন্যায্য হিস্যা আদায়ে মঙ্গলবার সকাল ৯টায় রাজধানীর উত্তরা থেকে তিস্তা ব্যারেজ অভিমুখে লংমার্চ শুরু করেছে বিএনপি।
পাউবো ডালিয়া অফিস জানায়, গত রোববার পর্যন্ত ডালিয়া পয়েন্টে তিস্তা নদীতে প্রবাহ ছিল গড়ে সাড়ে তিনশ’ কিউসেক। সেচ প্রকল্পের আওতায় ডালিয়া, নীলফামারী, সৈয়দপুর ও রংপুর ডিভিশনের আওতায় চলতি বোরো মৌসুমে ৬৫ হাজার হেক্টর জমি সেচ দেয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। কিন্তু তিস্তায় পানি না পাওয়ায় ওই চার ডিভিশনে আবাদ হয়েছে মাত্র ২৫ হাজার হেক্টর জমিতে।
পাউবো কর্মকর্তারা জানান, গত সোমবার হঠাৎ করেই তিস্তায় পানি বাড়তে থাকে। ডালিয়া পয়েন্টে পাওয়া যায় আটশ’ কিউসেক। কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে মঙ্গলবার দুপুর ১২টার পর থেকে তা বেড়ে গিয়ে দাঁড়ায় তিন হাজার কিউসেকে।
খালিশা চাপানী এলাকার কৃষক লোকমান হোসেন (৪৫) জানান, এবারে বোরো আবাদ করে ক্ষেতে পানি পাওয়া যাচ্ছে না। পানির অভাবে ফসল তামাটে বর্ণ ধারন করেছে। অনেক ক্ষেত পুড়ে গেছে। এখন যে পানি তিস্তায় আছে তাতে বোরো আবাদ করতে কোনো সমস্যা হবে না।
একই এলাকার কৃষক হারিজ উদ্দীন জানান, গত মৌসুমে বোরো আবাদ করছিলাম ১০ বিঘায়। পানি না পাওয়ায় এবারে আবাদ করেছি মাত্র চার বিঘা জমিতে। তাতেও পানি পাওয়া যাচ্ছে না। বোরো রোপা গাছ দুর্বল হয়ে পড়েছে। তাতে ফলন অর্ধেকে নেমে আসবে। তবে হঠাৎ করেই তিস্তায় পানি বাড়ায় অনেকেই কিছুটা দুশ্চিন্তামুক্ত।
পাউবো ডালিয়া ডিভিশনের নির্বাহী প্রকৌশলী মাহবুবার রহমান জানান, মঙ্গলবার দুপুর ১২টার পর থেকে হঠাৎ করেই তিস্তায় পানি বেড়ে গেছে। এখন তিন হাজার কিউসেক পানি পাওয়া যাচ্ছে। তবে পানি বাড়ার কোনো কারণ জানা যায়নি।
মাহবুবার রহমান আরো বলেন, বোরো মৌসুমে তিস্তায় এ রকম পানি প্রবাহ থাকলে চার ডিভিশনে অনায়াসে আবাদ করা সম্ভব হবে।