জামায়াতের নিবন্ধন অবৈধ ঘোষণা করেছে হাইকোর্ট
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন অবৈধ বলে রায় দিয়েছেন উচ্চ আদালত। বৃহস্পতিবার দুপুরে এ রায় দেওয়া হয়। বিচারপতি এম মোয়াজ্জাম হোসেন, বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি কাজী রেজা-উল হকের বেঞ্চ এই রায় ঘোষণা করেন।
এর আগে ১২ জুন জামায়াতকে নিষিদ্ধ সংক্রান্ত রুলের শুনানি শেষ করে বেঞ্চ রায়ের জন্য ‘ওয়েটিংয়ে’ রাখেন। এরপর বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্টের সম্পাদনযোগ্য রায়ের তালিকায় এই রায়কে অন্তর্ভুক্ত করা হয়।
২০০৮ সালে প্রায় চল্লিশটি দলের সাথে নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধিত হয় জামায়াতে ইসলামী। নির্বাচনে অংশগ্রহনের জন্য প্রতিটি দলকে কমিশনের তালিকাভুক্ত হতে হয়।
পরে ২০০৯ সালে তরিকত ফেডারেশনের সেক্রেটারি জেনারেল সৈয়দ রেজাউল করিম, সম্মিলিত ইসলামী জোটের প্রেসিডেন্ট মাওলানা জিয়াউল হাসান ও জাকের পার্টির মহাসচিব মুন্সি আবদুল লতিফসহ ২৫ জন জামায়াতের নিবন্ধনের বৈধতাকে চ্যালেঞ্জ করলে ২৭ জানুয়ারি ২০০৯ সালে হাইকোর্ট একটি রুল জারি করে।
ওই রুলে জানতে চাওয়া হয়, গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের ৯০বি(১)(বি)(২) ও ৯০ (সি) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী জামায়াতের নিবন্ধন কেনো অবৈধ ঘোষণা করা হবেনা। এ বিষয়ে জামায়াতের তৎকালীন আমীর মতিউর রহমান নিজামী, সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মো. মুজাহিদ এবং নির্বাচন কমিশনকে ছয় সপ্তাহের মধ্যে জবাব দেওয়ার নির্দেশ দেন যৌথ বিচারিকের বেঞ্চ। সে বেঞ্চে ছিলেন এবিএম খায়রুল হক ও বিচারপতি আবদুল হাই। তারপর ১২ জুন বৃহত্তর বেঞ্চে রিটের শুনানি হয়।
রিট আবেদনকারীর আইজীবী তানিয়া আমীর সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, আমরা আগেই বলেছি, জামায়াতের নীতিমালা দেশের সংবিধানের সাথে সাংঘর্ষিক। নিবন্ধন পাওয়ারই যোগ্য ছিলোনা জামায়াত।
জামায়াতের পক্ষে ব্যারিস্টার আবদুর রাজ্জাক যুক্তি দিয়ে বলেন, প্রতিহিংসার রাজনীতির কারণে এমন রিট করা হয়েছে। এটি চলার যোগ্য নয়।
তিনি বলেন, এমন দল আরো আছে, কিন্তু তাদের নিয়ে কোনো কার্যক্রম হাতে নেওয়া হয়নি।
রিট আবেদনে বলা হয়, চারটি কারণে জামায়াত নিবন্ধনের অযোগ্য। প্রথমত, জামায়াতের নীতিতে জনগণকে ক্ষমতার উৎস মনে করা হয়না। সেই সাথে তারা আইন প্রণয়নে জনপ্রতিনিধিদের ক্ষমতাকে স্বীকার করেনা। দ্বিতীয়ত, গণপ্রতিনিধিত্ব অধ্যাদেশ অনুসারে সাম্প্রদায়িক কোনো দল নিবন্ধন পেতে পারেনা। অথচ জামায়াত একটি সাম্প্রদায়িক দল, অন্তত কাজে-কর্মে ও বিশ্বাসে। তৃতীয়ত, রাজনৈতিক দল কোনো বৈষম্য করতে পারবেনা। অথচ জামায়াতে শীর্ষ পদে কখনো কোনো নারী বা অমুসলিম যেতে পারবেনা। চতুর্থত, দলের বিদেশি কোনো শাখা থাকতে, পারবেনা। অথচ জামায়াতের তা আছে।