হিউম্যান রাইটস ওয়াচ
ভারতে বৈষম্যের শিকার মুসলমান শিক্ষার্থীরা
ভারতের অনেক শিক্ষক সংখ্যালঘু মুসলমান এবং নিম্নবর্ণের শিক্ষার্থীদের দিয়ে টয়লেট পরিষ্কার করায় এবং শ্রেণিকক্ষে অন্য সহপাঠিদের থেকে তাদেরকে আলাদা বসতে দেয়।
নিউইয়র্ক ভিত্তিক খ্যাতনামা মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস ওয়াচ মঙ্গলবার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য প্রকাশ করেছে।
এইচআরডব্লিউ জানায়, শিক্ষকদের এ ধরণের অমানবিক এবং অবমাননাকর আচরণের কারণে এসব সম্প্রদায়ের শিক্ষার্থীরা ঝরে পড়ে এবং দিনমজুর হিসেবে কাজ শুরু করে।
১৬০জন শিক্ষক, প্রিন্সিপাল, অভিভাবক ও শিক্ষার্থীর সাক্ষাৎকারের ভিত্তিতে ৭৭ পৃষ্ঠার এই প্রতিবেদনেটি তৈরি করেছে এইচআরডব্লিউ।
কেন্দ্রীয় রাজধানী দিল্লি, উত্তর প্রদেশ, অন্ধ্র প্রদেশ ও বিহারে এই গবেষণা পরিচালনা করা হয়। এসব রাজ্যেই নিম্নবর্ণ, আদিবাসী এবং মুসলমানদের সংখ্যা বেশি।
প্রতিবেদনটির লেখক জয়শ্রী বাজোরিয়া বলেন, ‘দরিদ্র ও প্রান্তিক শিক্ষার্থীদের প্রতি স্কুলের শিক্ষক ও অন্যান্য স্টাফদের এই দৃঢ়মূল বৈষম্যের কারণে ভারতে সব শিশুকে শিক্ষিত করার প্রকল্প হুমকির মুখে পড়েছে।’
জয়শ্রী বলেন, এসব অবহেলিত শিশুদের মধ্যে এসব শিশুও রয়েছে যারা পরিবারের মধ্যে প্রথম স্কুলে এসেছে। তাদেরকে উৎসাহিত করার পরিবর্তে শিক্ষকরা তাদের প্রতি দুর্ব্যবহার করে থাকে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, মুসলিম সম্প্রদায়ের শিক্ষার্থীদের প্রায়ই পেছনের সারির বেঞ্চে অথবা আলাদা কক্ষে বসতে দেয়া হয়। তাদেরকে অবমাননাকর নামে ডাকা হয়। তাদেরকে নেতৃত্বের আসনে বসতে দেয়া হয় না এবং সবার শেষে খাবার পরিবেশন করা হয়।
অনেক শিক্ষার্থী বলেছেন, তাদেরকে আলাদা করে রাখা হয় এবং অবহেলা করা হয়। বলা হয় তারা নোংরা। অন্যদিকে মুসলমান শিক্ষার্থীদের নামের পরিবর্তে ‘মোল্লা’ বলে ডাকা হয়।
এইচআরডব্লিউ বলছে, শ্রেণিকক্ষে যারা বৈষম্য করছে তাদের শাস্তির কোনো ব্যবস্থা করছে না সরকার। শিক্ষার্থীদের ঝরে পড়া ঠেকানোরও কৌশল বাস্তবায়নেও ব্যর্থ হয়েছে ভারত সরকার।