অর্ধশত আলেম রাজনীতিক নেতার জমিয়তে যোগদান
বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের কেন্দ্রীয় সিনিয়র নায়বে আমির হবিগঞ্জের কৃতিসন্তান মাওলানা আব্দুর রব ইউসুফি, কেন্দ্রীয় যুগ্মমহাসচিব আর্ন্তজাতিক বক্তা সুনামগঞ্জের কৃতিসন্তান মাওলানা তাফাজ্জুল হক আজিজ, সিলেট মহানগর শাখার সাবেক সভাপতি মাওলানা খলিলুর রহমান, সিলেট জেলার সহসভাপতি মাওলানা খায়রুল ইসলাম, সিলেট জেলার সহসভাপতি হাফিজ সৈয়দ শামিম আহমদ, সিলেট জেলার সহসেক্রেটারী মাওলানা জয়নুল আবেদীন ১৯ দলীয় জোটের অন্যতম শরীক জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশে যোগদান করেছেন।
গতকাল মঙ্গলবার সকাল সোয়া ৮ ঘটিকায় ঢাকার মিরপুরস্থ জমিয়তের অস্থায়ী অফিসে সংগঠনের কেন্দ্রীয় সভাপতি খলিফায়ে মাদানী শায়খুল হাদীস আল্লামা আব্দুল মোমিন শায়খে ইমামবাড়ীর নিকট ফরম পুরণপুর্বক জমিয়তে যোগদান করেন। পরে বিকেল ৩ ঘটিকার সময় জাতীয় প্রেসক্লাবে তাদের সম্মানে এক সংর্বধনা অনুষ্ঠিত হয়।
এদিকে, ইসলামী ঐক্যজোটের কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান ও হেফাজতে ইসলাম ঢাকা মআনগরীর সদস্য সচিব আর্ন্তজাতিক বক্তা মাওলানা জুনায়েদ আলহাবিব, ইসলামী ঐক্যজোটের কেন্দ্রীয় নেতা মাওলানা ফজলুল করিম কাসেমী, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের কেন্দ্রীয় যুগ্মমহাসচিব মাওলানা মোহাদুল্লাহ জামী, গোলাপশাহ মসজিদের খতীব মাওলানা আব্দুল কাইয়ুম জামি, মাওলানা শওকত আলী, মাওলানা আব্দুল্লাহ আল হাসান, মাওলানা উমর ফারুক, মাওলানা সিদ্দিকুর রহমান, দাবানল শিল্পীগোষ্টির পরিচালক মাওলানা আনিস আনসারী, মাওলানা ফেরদৌস রহমান, মাওলানা আলী মর্তুজা, মাওলানা সাদিক আহমদ, মাওলানা মুজিবুর রহমান, মাওলানা আব্দুল জলিল ইউসুফী, মাওলানা শফিকুল ইসলাম,মাওলানা রেজাউল করিম, ডা. সাদেক আহমদ, মাওলানা আতহার আলী, মাওলানা শাব্বির আহমদ ওয়াইসী, মাওলানা এনামুল হকসহ ঢাকা, সিলেট, কিশোরগঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন স্থানের র্শীষস্থানীয় অর্ধশত আলেম-রাজনীতিবিদ গতকাল আনুষ্ঠানিক ভাবে জমিয়তে যোগদান করেন। যোগদানকারীদের অধিকাংশই বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস ও ইসলামী ঐক্যজোটের সাথে সক্রিয়।
দুই পর্বে ঢাকায় অনুষ্ঠিত সভায় সভাপতিত্ব করেন, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় সভাপতি খলিফায়ে মাদানী শায়খুল হাদীস আল্লামা আব্দুল মোমিন শায়খে ইমামবাড়ী। শুরুতে পবিত্র কালামে পাক তেলাওয়াতকরেন, হাফিজ মাওলানা মনজুরুল ইসলাম। তারানা পরিবেশন করেন, মাওলানা হোসাইন আহমদ নোমানী, আব্দুল করিম দিলদার।
স্বাগত বক্তব্য রাখেন, জমিয়তের কেন্দ্রীয় সিনিয়র সহসভাপতি ও ঢাকা মহানগর হেফাজতে ইসলামের আহবায়ক মাওলানা নুর হোসাইন কাসেমী।
মাওলানা নুর হোসাইন কাসেমী বলেন, দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব আজ হুমকির সম্মুখিন। জাতি আজ চোর-ঢাকাতদের হাতে জিম্মি। তাই দেশ,ধর্ম ও জাতিকে অন্ধকার থেকে আলোর দিকে নিয়ে আসতে উলামায়ে কেরামকেই এগিয়ে আসতে হবে। তাই সমাজের সর্বস্থরে হক্কানী উলামায়ে কেরামের প্রতিনিধিত্ব রাখতে হবে। তিনি অবিলম্ভে সকলের নিকট সুষ্ট ও অবাধ নির্বাচনের দাবী জানিয়ে বলেন, সরকারের নকজানু পররাষ্ট্রনীতি পরিহারকরে ভারতীয় পানী আগ্রাসনের বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে হবে। টিপাইমুখ বাধর্নিমান বন্ধ, দিস্তাসহ সকল নদীর পানির ন্যায্য হিস্যা আদায়ে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে ।
মাওলানা বাহাউদ্দীন যাকারিয়া, হাফিজ মাওলানা মনজুরুল ইসলামের যৌথ পরিচালনায় অনুষ্ঠিত উভয় সভায় বক্তব্য রাখেন, জমিয়তের নির্বাহীসভাপতি মাওলানা মোস্তফা আজাদ,সহসভাপতি মাওলানা শায়খ জিয়াউদ্দীন, মাওলানা জহিরুল হক,সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা উবায়দুল্লাহ ফারুক, মাওলানা শেখ মুজিবুর রহমান, মাওলানা যাকারিয়া আমিনী, মুফতী আরিফ বিল্লাহ,মুফতী মাসউদুল করীম, মাওলানা মনসুরুল হাসান রায়পুরী, মাওলানা আব্দুল বছির, মাওলানা ওয়ালি উল্লাহ আরমান, মাওলানা আব্দুল মালিক চৌধুরী,মুফতি আরিফ বিল্লাহ, মুফতি নাসির উদ্দীন খান,মাওলানা সৈয়দ সালিম কাসেমী, মুফতি রেজাউল করিম, দক্ষিণ সুনামগঞ্জের নবর্নিবাচিত ভাইস চেয়ারম্যান মাওলানা তৈয়্যিবুর রহমান চৌধুরী, জামাগঞ্জ উপজেলার ভাইস চেয়ারম্যান হাফিজ রশীদ আহমদ, বিয়ানী বাজার উপজেলার ভাইস চেয়ারম্যান মুফতি শিব্বির আহমদ, মুফতি খন্দকার হারুনুর রশীদ, হাজি ফরিদ উল্লাহ হবিগঞ্জ, মুফতি ইবাদুর রহমান, মাওলানা নজরুল ইসলাম, মাওলানা মুখতার হোসাইন,আলহাজ্ব এম আতিকুজ্জামান, মাওলানা হাম্মাদ গাজিনগরী, মুফতি শাহ হিফজুল করিম মাশুক, মাওলানা মুতিউর রহমান গাজিপুরী, মাওলানা মাসুদুল করিম, মাওলানা আহম ফখরুদ্দীন, মাওলানা জিয়াউল হক কাসেমী, মাওলানা রুহুল আমীন নগরী, মাওলানা শিব্বির আহমদ বিশ্বনাথী সহ কেন্দ্রীয় ও জেলা পর্যায়ের বিভিন্ন নেতৃবৃন্দ।
যে যা বল্লেল:
জমিয়তে নবাগত মাওলানা আব্দুর রব ইউসুফি বলেন, আমার বাবা জমিয়তের লোকছিলেন। ছাত্র জমানায় জমিয়তের সাথে কাজ করেছি। পরে হাফেজ্জীহুজুরের সাথে কাজ করেছি, এরপরই শায়খুল হাদীস আজিজুল হকের নেতৃত্বে খেলাফত মজলিসে কাজকরি। বর্তমানে আর্দশের প্রশ্নেই দলত্যোগ করে আবারো জমিয়তে যোগদানকরেছি। তিনি বলেন, দশম জাতীয় সংসদে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস নির্বাচনে অংশ নিয়ে শাপলা চত্বরের শহীদানের সাথে বিশ্বাস ঘাতকতা হয়েছে বলেই দল ত্যাগকরেছি। সমগ্রদেশের আলেম উলামাগনের মুল স্রোতের বিপরিত গিয়ে সরকারের এজেন্ডা বাস্তবায়নে কাজকরার আলামত দেখেই আমি দল ত্যাগ করেছি। আমি নিজে মুরুব্বী হতে চাইনা বরং নীতিবান আল্লাহওয়ালা মুরুব্বীর নেতৃত্বেই কাজকরতে চাই। ইসলামী রাজনীতিকে ইবাদাত মনেকরেই আন্দোলন সংগ্রামে আছি। শাপলাচত্বরের ঈমানী চেতনায় উজ্জীবিত কাফেলার সাথেই আছি, থাকবো। আমি হেফাজতের আন্দোলনে দেখেছি জমিয়তের মুরুব্বীগনই দুনিয়াবী লোভ লালসার উর্ধ্বে উঠে কাজ করেছেন। বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসে বর্তমানে কোন মুরুব্বীনেই উল্লেখকরে ইউসুফি বলেন, কারো লাশ নিয়ে রাজনীতি করার মানসিকতা আমার নেই। জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের মধ্যে মান্যবর মুরুব্বী আছেন বলেই আমি আজ্ আমার দলের বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী নিয়ে জমিয়তে যোগদানকরেছি। আমি আমার উস্তাদ আল্লামা শায়খ আব্দুল মোমিন সাহেবের সামনে আজ ওয়াদা করলাম জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত জমিয়তের সাথে থাকবো। মাওলানা জুনায়েদ আলহাবিব অনুভুতি পেশকরে বলেন, কোন দলে উপেক্ষিত হয়ে নয়, আমি আমার নিজস্ব জ্ঞান গরিমায়-স্বজ্ঞান্ েইসলামী আন্দোলনের জযবা নিয়েই জমিয়তে উলামায়ে ইসলামে যোগদান করেছি। আমি মুলত জমিয়তেরই, ১৯৭০ সালে বি বাড়িয়ায় জমিয়তের খেজুরগাছ প্রতীকের নির্বাচনে কাজ করেছি। পরপরতীতে আমাকে আল্লামা আব্দুল মোমিন শায়খে ইমামবাড়ী, মাওলানা তাফাজ্জুল হক হবিগঞ্জী, মাওলানা মুহিউদ্দীন খান, মাওলানা নুর হোসাইন কাসেমী আমাকে জমিয়তের দাওয়াত দিয়েছি। দ্বীনের কাজমনে করেই জমিয়তে এসেছি। তিনি বলেন, আমার বিরুদ্ধে বিভিন্ন মিডিয়ায় পদবঞ্জিত হয়ে দল বদল করেছি এটা ঠিক নয়, আমি এর তীব্র নিন্দা জানাই। আমার জীবনের শেষ রক্ত দিয়ে হলেও জমিয়তে থাকবো।
মাওলানা তাফাজ্জুল হক আজিজ বলেন,আমি সর্বপ্রথম মাওলানা মুছিহুর রহমান সাদীর নেতৃত্বে জমিয়ত করেছি। পরবর্তীতে হাফিজ্জীহুজুরের নির্বাচনের সময় আমি হাফেজ্জি হুজুরের সাথে কাজ করি এর পর বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসে কাজ করি। আজ গোটা জাতি অবরুদ্ধ। দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব হুমকির সম্মুখিন। উলামায়ে কেরাম আজ বহুমুখি পরীক্ষার সম্মুখিন তাই জাতিকে অবরুদ্ধতা থেকে মুক্তি দিতে একমাত্র জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের নেতৃত্বেই ইসলামী আন্দোলনে চালিয়ে যেতে হবে। জমিয়তের মুরুব্বীগনের সাথে আসতে পেরে আমি আমার অন্তরে নূর অনুভুত করছি। তিনি বলেন, বাতিলের মোকাবেলায় হক ও হক্কানীয়তের পতাকা বাহী সংগঠন জমিয়তে যোগদিয়ে আমি নিজেকে ধন্যমনে করছি।
সভাপতির বক্তব্যে আল্লামা আব্দুল মোমিন বলেন, আমি আজ খোশবু অনুভব করছি। মাওলানা ইউসুফিকে কখনো জমিয়তের বাহিরের লোক মনেকরিনি। আমাদের আজকের আলোচনা ইখলাস ও লিল্লাহীয়াতের মাধ্যমেই হয়েছে। কুতবুল আলম (র.) এর ব্রিটিশ বিরুধী আন্দোলনে যে ভাবে কাজ করেছেন, ঠিক তেমনি ভাবে আমাদেরকেও ইখলাছের সাথে কাজ করে যেতে হবে। তিনি মুফতি ওয়াক্কাসের মুক্তির কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করেন।