যুক্তরাজ্যে এনএসএইচ কর্মীদের ওপর হামলা বাড়ছে
যুক্তরাজ্যের জাতীয় স্বাস্থ্য সেবা (এনএসএইচ) কর্মীদের ওপর হামলার হার বেড়েছে। প্রতিদিন প্রায় ১৬৩ জন স্বাস্থ্যকর্মী বিভিন্ন কারণে হামলার শিকার হয়। চিকিৎসার জন্য অপেক্ষারত রোগিরাই মূলত হামলা করে থাকে বলে যুক্তরাজ্যভিত্তিক গণমাধ্যম টেলিগ্রাফ নিশ্চিত করেছে। গত বছর যুক্তরাজ্যের ৬০ হাজার স্বাস্থ্যকর্মী শারিরীক হামলার শিকার হয়েছে।
সম্প্রতি এক গবেষণায় দেখা গেছে, গতবছরের তুলনায় চলতি বছরে স্বাস্থ্যকর্মীদের ওপর হামলার পরিমান বেড়েছে। আর এক্ষেত্রে হামলাকারীর ভূমিকায় রোগিদের সংখ্যাই বেশি। রোগির শারিরীক অবস্থার উপর নির্ভর করে স্বাস্থ্যকর্মীদের ওপর হামলার বিষয়টি। দীর্ঘসময় ধরে যারা ডাক্তারের জন্য অপেক্ষা করে তারাই একটা সময় ক্ষিপ্ত হয়ে হামলা চালায়। বিশেষজ্ঞদের মতে, এরকম ক্ষেত্রে হামলাকারীদের দোষী স্বাব্যস্ত করা মুশকিল।
যুক্তরাজ্যের স্বাস্থ্যকর্মীরা এখন আতঙ্কের ভেতর আছে। আর এই আতঙ্কের কারণে হতাশা বৃদ্ধি পাচ্ছে তাদের মধ্যে। অনেকেই চাকরি ছেড়ে দিতে চাইছেন এমতাবস্থায়। গত ২০১০/১১ সালে রোগিদের হাতে হামলার শিকার হওয়া স্বাস্থ্যকর্মীদের সংখ্যা ৩৯ হাজার ৭৭০ জন। যা পরবর্তী ২০১১/১২ সালে বেড়ে দাড়িয়েছে ৪৬ হাজার ২৬৫ জনে। ১৬ শতাংশেরও বেশি হারে বেড়েছে এই হামলার ঘটনা।
একজন স্বাস্থ্যকর্মী প্রধান রিচার্ড হ্যাম্পটন বলেন, ‘যখন একজন স্বাস্থ্যকর্মী হামলার শিকার হয় তখন কোথাও অভিযোগের জায়গা থাকে না। তবে ঠিক কি কারণে তারা হামলার শিকার হচ্ছেন তা নিরুপণে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। হামলা রোধে তাদেরকে আমরা কিছু সহায়ক উপাদান ও পরমর্শ দিচ্ছি।’
তবে স্বাস্থ্যকর্মীদের জন্য সুখবর হলো, যুক্তরাজ্য সরকার এই হামলা রোধে নতুন নীতিমালা প্রনয়ন করার চিন্তা করছে। এছাড়া স্বাস্থ্যকর্মীদের পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করার জন্যও বলা হয়েছে। অন্যদিকে ক্রাউন প্রসিকিউশন সার্ভিস নামের সরকারি একটি প্রতিষ্ঠান স্বাস্থ্যকর্মীদের প্রশিক্ষণ দিচ্ছে কি করে উত্তেজিতদের নিয়ন্ত্রন করতে হবে।
রয়্যাল কলেজ অব নার্সিংয়ের প্রধান নির্বাহী ড. পিটার কার্টার বলেন, ‘জাতীয় স্বাস্থ্য সেবা প্রতিষ্ঠানের কোনো কর্মীদেরই নিরাপত্তা সুনিশ্চিত হওয়ার আগে কাজে আসা উচিত নয়। কারণ হামলার পরিমান যে হারে বাড়ছে তা খুবই চিন্তার বিষয়। অবশ্যই কোনো কারণ আছে যার কারণে রোগিরা হামলা চালাচ্ছে। আর এর সঙ্গে চিকিৎসা সেবারও সম্পর্ক আছে। আমরা দেখতে পাচ্ছি যে রোগিরা ডাক্তারের জন্য যে সময়টায় অপেক্ষা করে তখনই হামলার ঘটনা বেশি ঘটে।’
দেশটির স্বাস্থ্যমন্ত্রী ড. ড্যান পোল্টার অবশ্য বলেন, ‘স্বাস্থ্যকর্মীদের উপর শারিরীক বা মানসিক যেকোনো হামলাই গ্রহনযোগ্য নয় এবং তা সহ্য করা হবে না। জাতীয় স্বাস্থ্য সেবার নীতিমালা নিয়ে আমরা খুব শীঘ্রই নতুন পরিকল্পনা ঘোষণা করবো। যেসকল রোগি স্বাস্থ্যকর্মীদের হামলা করবে তাদের চিকিৎসা সেবা দেয়া হবে না, এমন সিদ্ধান্তও আমরা নিতে যাচ্ছি।’