যুক্তরাষ্ট্র সিনেটের মেনেনডেজের বিবৃতি
শ্রমিকদের রক্তে রঞ্জিত পোশাক পশ্চিমারা কিনবে না
সরকারকে সতর্ক করে দিয়ে যুক্তরাষ্ট্র সিনেটের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ক কমিটির চেয়ারম্যান রবার্ট মেনেনডেজ বলেছেন, বাংলাদেশের শ্রমিকদের রক্তে রঞ্জিত কোন পোশাক পশ্চিমা ক্রেতারা কিনবে না। বিজিএমইএ ও সরকারকে অবশ্যই এ সহজ বার্তাটি বুঝতে হবে।
বৃহস্পতিবার মর্মান্তিক রানাপ্লাজা ভবন ধসের ১ বছর পূর্তিতে দেয়া এক বিবৃতিতে তিনি এই মন্তব্য করেন।
মেনেনডেজ বলেন, যদি বাংলাদেশ সরকার ও বিজিএমইএ শ্রমিক ইউনিয়ন গঠনে দমন কাজ বন্ধ না করে এবং তাৎক্ষণিক পদক্ষেপ গ্রহণ না করে তাহলে পোশাক শিল্পে আরেকটি বড় বিপর্যয় সময়ের ব্যাপার মাত্র। আর এটি বাংলাদেশের পোশাক খাতকে দাঁড়ানোর আগেই ক্ষতির দিকে নিয়ে যাবে।
মর্মান্তিক রানা-প্লাজা ট্রাজেডি প্রসঙ্গে সিনেটর বলেন, এক বছর আগের এই দিনে রানা প্লাজর ভবন ধসে পুরো বিশ্ব শোকাহত হয়ে পড়েছিলো। ভবনটিতে থাকা কারখানাগুলো ধসে ১,১৩০ জন পোশাক শ্রমিক প্রাণ হারায়।
ভবন ধসের প্রাণ হানিতে যুক্তরাষ্ট্র জিএসপি বাতিল করে উল্লেখ করে মেনেনডেজ বলেন, ভয়াবহ এই ট্রাজেডির পরই বাংলাদেশকে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছিলো। শ্রমিকদের অধিকার ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করার শর্তে যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের জিএসপি সুবিধা বাতিল করে দেয়। তিনি বলেন, দুর্ঘটনার পর আইএলও বাংলাদেশে কারখানার নিরাপত্তা নিয়ে বড় ধরনের প্রশিক্ষনের উদ্যেগ নেয়, নিরাপদ পরিদর্শনের ব্যবস্থা গ্রহণ ও রানা-প্লাজা ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করে। একি সাথে আন্তর্জাতিক ক্রেতা প্রতিষ্ঠানগুলোও কারখানা ও শ্রমিকদের নিরাপত্তায় তাদের সহযোগিতা প্রসারিত করে।
বাংলাদেশের পোশাক কারখানার বর্তমান অবস্থার সমালোচনা করে সিনেটর বলেন, বাংলাদেশে এখনো অনেক পোশাক মালিক শ্রমিক ইউনিয়নের জন্য তার নেতাদের নির্যাতিত করছে। পত্রিকার তথ্যমতে, কারখানার কিছু ব্যবস্থাপক শ্রমিক সংগঠকদের উপর আক্রমণও করছে। পোশাক মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ মালিকদের ব্যাপারে তাদের আগের পুরনো অবস্থানেই এখনো রয়ে গেছে। যারা শ্রমিক ইউনিয়নের বিরুদ্ধে কাজ করছে তাদের ব্যাপারে কোন ব্যবস্থা নিতে তাদের অনিহা রয়েই গেছে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ সরকার নতুন শ্রমিক ইউনিয়নগুলোকে রেজিস্ট্রেশন দিলেও তাদের প্রাতিষ্ঠানিক দুর্বলতা রয়ে গেছে। শ্রমিকদের রক্ষায় রাজনৈতিক স্বদিচ্ছারও ঘাটতি রয়ে গেছে। আর এটি দেশটির শ্রমিক সংগঠনগুলোর কাজকে বাধাগ্রস্থ করছে। চাকুরি হারানোর ভয়ে শ্রমিকরা ইউনিয়নে যোগ দিচ্ছে না, অপরদিকে ইউনিয়নের সংগঠকরা তাদের নিরাপত্তা নিয়ে শংকিত।