দেশে ফিরলেন ইরান থেকে অপহৃত আরো ৯ বাংলাদেশি
ইরানে অপহরনের শিকার আরো ৯ বাংলাদেশিকে দেশে ফেরত আনা হয়েছে। শুক্রবার সকাল ১১টার দিকে তাদের বিমানে করে দেশে নিয়ে আসা হয়। সিআইডির এএসপি (মিডিয়া) হুমায়ুন কবির এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, চলতি মাসে অপহরণের ঘটনায় দেশে ফেরত আনার এটি দ্বিতীয় পর্যায়। প্রথম পর্যায়ে ১৭ এপ্রিল ১২ জনকে ফেরত আনা হয়। শুক্রবার যারা দেশে ফেরত আনা হয়েছে, তারা হলেন- তমিজ উদ্দীন, জিল্লুর রহমান, রমিজ আলী, মহসিন, সোহরাব, হৃদয় আলী সাহাবুদ্দিন, সামার উদ্দীন এবং হালিম।
সিআইডির এএসপি (মিডিয়া) হুমায়ুন কবির জানান, মধ্যপ্রাচ্যের সৌদি আরব, দুবাই ও ওমানে কয়েকটি বাংলাদেশি প্রতারক গ্রুপ রয়েছে। এরা সেখানে বসবাসরত বাংলাদেশি এক শ্রেণীর শ্রমিকদের টার্গেট করে ইরান, গ্রিস ও তুরস্ক নিয়ে যাওয়ার লোভ দেখায়। তারা বলে, সেখানে মাসে ৫০ হাজার টাকা আয় হবে। থাকা, খাওয়া কোম্পানির। এমন লোভনীয় প্রস্তাবে শ্রমিকরা বিশ্বাস করে সেখানে যান। কিন্তু, যাওয়ার পথে আরব সাগরের মধ্যে তাদের জাহাজ থেকে নামিয়ে স্পিড বোডে ওঠানো হয়। এরপর ইরানের বন্দর আব্বাস পার হয়ে যায় জঙ্গলের মধ্যে। সেখানে তাদের ৫/১০ লাখ টাকা পর্যন্ত মুক্তিপণ দাবি করা হয়। যারা মুক্তিপণের টাকা দিতে পারেন, তারা টাকা দিয়ে দেশে ফিরে আসেন। আর যারা টাকা দিতে পারেন না, তাদের ওপর অমানুষিক নির্যাতন চালানো হয়। এমনকি শরীরের অঙ্গ প্রত্যঙ্গ খুলে নেওয়ারও ভয় দেখানোও হয়। এমনও রয়েছে, প্রতারিত এই রকম ২৪ জন শ্রমিককে ৪১ দিন শুধুমাত্র একটি করে রুটি খাইয়ে রাখা হয়েছে।
হুমায়ুন আরো বলেন, ইরানে বাংলাদেশ দূতাবাস থেকে বাংলাদেশে এ বিষয়ে খবর দেওয়ার পর সিআইডি বিষয়টি অনুসন্ধান শুরু করে। এক পর্যায়ে বিষয়টি নিয়ে ইরানি দূতাবাসের সঙ্গে কথা বলা হয়। পরে ইরানি পুলিশের সহায়তায় এই রকম প্রায় ৮০ জন প্রতারিত যুবককে পাওয়া গেছে, যাদের পর্যায়ক্রমে দেশে ফিরিয়ে আনা হচ্ছে। তিনি বলেন, এই চক্রটি মুক্তিপণের টাকা সাধারণত বাংলাদেশে থাকা দালাল অথবা বিকাশ মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে সেই দেশে পাঠাতে বলে। সিআইডির একটি টিম ইতোমধ্যে দুবাইয়ে যাওয়ার প্রস্তুতি নিয়েছে। এছাড়াও পর্যায়ক্রমে তুরস্ক, গ্রিস ও ইরানেও যাবে।