আলেম-ওলামা নিপীড়নকারী আওয়ামীলীগকে বিচারের মুখোমুখি হতে হবে : মুফতি শাহ্ ছদর উদ্দিন

Bishwaহেফাজতে ইসলাম যুক্তরাজ্য শাখার উদ্যোগে আয়োজিত প্রতিবাদ সমাবেশ ও ইফতার মাহফিলে বক্তারা নিরীহ মাদ্রাসা শিক্ষক, ছাত্র এবং আলেম-ওলামাদের হত্যাকারী আওয়ামীলীগ সরকারকে বাংলাদেশের তৌহিদী জনতা কখনো ক্ষমা করবে না উল্লেখ করে বলেছেন, শাপলা চত্ত্বরের সেই সব শহীদদের আমরা ভূলি নাই। কুরআনের যে সব খাদেমদের বুকের তাজা রক্তে রাজপথ রঞ্জিত হয়েছে, সেই খুনের বদলা নিতে সন্ত্রাসী সরকারকে ক্ষমতা থেকে বিদায় জানাতে বাংলার ইসলামপ্রিয় জনতা প্রস্তুত। বক্তারা বলেন,  যারা আল্লাহ্ এবং রাসূল (সাঃ) কে কটাক্ক করে তাদের মদদ দান করে, আর কুরআনের পক্ষে যারা কথা বলেন তাদের বুকে গুলি চালায় সেই সন্ত্রাসীদের মদদ দাতা সরকারকে বাংলাদেশের মানুষ কখনো ক্ষমা করবে না।
বক্তারা আমারদেশ সম্পাদক মাহমুদুর রহমানের নিঃশর্ত মুক্তির দাবী জানিয়ে বলেন, সত্য প্রকাশের জন্য মাহমুদুর রহমানের উপর যে নির্যাতন করা হয়েছে, এর জন্য একদিন আওয়ামীলীগ সরকারকে বিচারের মুখোমুখি হতে হবে। বাংলাদেশের সাংবাদিকতার ইতিহাসে মাহমুদুর রহমানের মত সাহসী পুরুষ আর তৈরী হবে না।
হেফাজতে ইসলাম যুক্তরাজ্য শাখার আহ্বায়ক, বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ও রাজনীতিবীদ অধ্যাপক আব্দুল কাদির সালেহ এর সভাপতিত্বে ও মাওলানা জাবির আহমদের পরিচালনায় সমাবেশে বক্তব্য রাখেন প্রখ্যাত ইসলামী চিন্তাবিদ, হেফাজতে ইসলাম ইউরোপের আহ্বায়ক আল্লামা মুফতি শাহ ছদর উদ্দিন, শায়খুল হাদিস মাওলানা আব্দুল মুছাওয়্যির, বিএনপির সাবেক কেন্দ্রীয় আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক আলহাজ্ব মুহিদুর রহমান, প্রবাসে মুক্তিযুদ্ধের সাংগঠক শামসুল আলম চৌধুরী, যুক্তরাজ্য বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক এম এ মালেক, হেফাজতে ইসলাম ইউকে এন্ড ইউরোপের সমন্বয়কারী মাওলানা শুয়াইব আহমদ, বিশিষ্ট ইসলামী চিন্তাবীদ মুফতি মাওলানা আব্দুল মুনতাকিম, বিশিষ্ট শিক্ষাবীদ ড. আবুল কালাম আজাদী, আবু সুফিয়ান চৌধুরী, বিশিষ্ট রাজনীতিবীদ এম. ছদরুজ্জামান খান, মাওলানা সাঈদ আলী, লিয়াকত সরকার, মাওলানা আব্দুল করিম, মাওলানা তায়িদুল ইসলাম, হাফিজ মাওলানা নজির উদ্দিন, হাফিজ মাওলানা হোসাইন আহমদ প্রমুখ।
বক্তারা মিশরে সেনাবাহিনীর বর্বরতার নিন্দা জানিয়ে বলেন, নির্বাচিত সরকারের উপর সেনাবাহিনীর এমন নির্যাতন এবং নিরীহ প্রতিবাদী জনতার উপর গণহত্যা মুসলমানরা কখানো বরদাশত করবে না। মিশর সভ্যতার দেশ, মিশর ইসলাম প্রিয় মুসলমানদের দেশ উল্লেখকরে বক্তারা বলেন, মিশরে শতাব্দীর যে ঘৃণ্য বর্বরতা চালানো হয়েছে সে বর্বরতার বিরুদ্ধে জাতিসংঘসহ বিশ্ব সম্প্রদায়কে এগিয়ে আসতে হবে। বক্তারা মিশরের শহীদদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করেন।
আল্লামা মুফতি শাহ ছদর উদ্দিন আওয়ামীলীগকে শতাব্দীর চরম ঘৃণ্য সরকার উল্লেখ করে বলেন, যে সরকার ইসলাম, কুরআন, আল্লাহ এবং রাসূল (সাঃ) কে কটাক্ককারীদের জাতীয় বীর উপাধি প্রদান করে, সেই জালেমদের মুখে ইসলাম ও মানবতার কথা শোভা পায় না। তিনি বলেন, শেখ হাসিনা নিজেকে ইসলামের খাদেম পরিচয় দিয়ে আলেম-উলামাদের বুকে গুলি চালায়। রাতের অন্ধকারে বিদ্যুৎ বন্ধ করে নির্বিচারে গুলি চালিয়ে মানুষ হত্যা করে, ইফতার মাহফিল বন্ধ করে দেয়, সে ইসলামের পক্ষের নয়, সে মানবতার দুশমন। মুফতি শাহ ছদর উদ্দিন মিশরে সেনাবাহিনীর বর্বরোচিত হত্যাকান্ডের তীব্র নিন্দা জানিয়ে বলেন, দীর্ঘ চার যুগের ধর্মহীন সরকারের পতনের পর যে মাটির মানুষ ইসলামের পক্ষের সরকার ক্ষমতায় এনেছিলো। সেই সরকারের উপর পশ্চিমা গোষ্ঠির মদদে সেনাবাহিনী যে ববরতা চালাচ্ছে সেটা মেনে নেয়া যায় না।
মুফতি ছদর বাংলাদেশে হেফাজতে ইসলাম সহ অন্যান্য রাজনৈতিক দলের উপর চলমান দমন-নিপীড়নকে রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস উল্লেখ করে বলেন, রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস চালিয়ে ক্ষমতায় থাকা পৃথিবীর কোন শক্তির পক্ষে সম্ভব হয়নি। আওয়ামীলীগ ইসলামের পক্ষের শক্তির বিরুদ্ধে যে সন্ত্রাস চালাচ্ছে এর বিচার বাংলার জমিনে হবেই।
মুক্তিযুদ্ধা সংগঠক শামসুর আলম চৌধুরী বলেন, ইসলামের পক্ষে কথা বলে যারা আমাদের মৌলবাদী, প্রতিক্রীয়াশীল বলে তারা প্রকৃত অর্থে ইসলামের শত্রু। আল্লাহ এবং রাসূলের অপমানে যাদের হৃদয় কাঁপে না, যারা নাস্তিকদের প্রশ্রয় দেয়, এরা মানবতার শত্রু। তিনি বলেন, যারা শাপলা চত্ত্বরে আলেমদের রক্ত ঝড়িয়েছে এদের কোন ক্ষমা নেই। বাংলাদেশে এদের বিচার হবেই।
সভাপতির বক্তব্যে অধ্যাপক আব্দুল কাদির সালেহ বলেন, শাপলা চত্ত্বরের বর্বরতা যেমন আমরা ভূলি নাই, তেমনি হেফাজতে ঘোষিত ১৩ দফা আদায়ের আন্দোলনও শেষ হয় নাই। যারা বলেন, হেফাজত ভয় পেয়েছে, আর তারা মাঠে নামবে না, তাদের প্রতি আমাদের ম্যাসেজ হচ্ছে আমরা মাঠে নেমেছি ‘গেইম’ খেলতে নয়, কুরআন, আল্লাহ এবং রাসূলের মর্যাদা রক্ষার আন্দোলনে। ভয় কি আমরা জানিনা। যারা আলেমদের রক্ত ঝড়িয়েছেন তারা বিচারের জন্য প্রস্তুত হোন।
অধ্যাপক সালেহ বলেন, যারা নারী স্বাধীনতার কথা বলেন তারা কেমন স্বাধীনতা চান সেটা  প্রমাণ হয়েছে দেড়শো নারী দর্ষিতা হওয়ার পর। তাদের নারী স্বাধীনতার বিরুদ্ধে যখন আল্লামা শফি কথা বলেন তখন তারা রাজপথে আন্দোলনের কথা বলে। অধ্যাপক সালেহ সরকারকে হুশিয়ারী দিয়ে বলেন, সাবধান হয়ে যান, নয়তো বিদায় বড় করুনভাবে হবে।

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button