‘নিউজনাইট’ ছাড়ছেন সাংবাদিক জেরেমি প্যাক্সম্যান
যাকে মোকবেলা করার কোনো ভালো ফর্মুলা ২৫ বছরেও উদ্ধাবন করতে পারেননি ব্রিটেইনের রাজনীতিবিদসহ অন্যান্য ক্ষেত্রের তারকারা – সেই সাংবাদিক জেরেমি প্যাক্সম্যান ছেড়ে দিচ্ছেন ‘নিউজনাইট’।
বিবিসি জানায়, ২০১৩ সালের জুলাইতেই কাজ ছেড়ে দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন তিনি। তবে অনুষ্ঠানটি খারাপ সময়ের মধ্য দিয়ে যাবার কারণে চলতি বছরের জুন পর্যন্ত কাজ চালিয়ে যাবার জন্য রাজি হয়েছেন তিনি।
বিবিসি’র সাবেক উপস্থাপক জিমি স্যাভাইল বিতর্কের জেরেই প্যাক্সম্যানের এই সিদ্ধান্ত বলে ধারণা অনেকের।
স্যাভাইলের বিরুদ্ধে ছয় দশকজুড়ে যৌন হয়রানির অসংখ্য অভিযোগ রয়েছে হয়রানির শিকারদের অধিকাংশই শিশু ২০১২ সালে স্যাভাইলের মৃত্যুর পর থেকে এ অভিযোগগুলো উঠে আসতে শুরু করে বিবিসি’র প্রতিযোগী চ্যানেল আইটিভি এ বিষয়ে একটি তথ্যচিত্র দেখানোর পর বিষয়টি গণমাধ্যমে ব্যপক আলোচনার জন্ম দেয় অন্যদিকে এ বিষয়ে ‘নিউজনাইট’ তথ্যানুসন্ধান শুরু করলেও উর্ধ্বতনদের হস্তক্ষেপে তা বন্ধ করে দেয়া হয় স্যাভাইল ইস্যুতে মুখ বন্ধ রাখার কারণে সমালোচিত হয় ‘নিউজনাইট’
৩০ এপ্রিল এক বিবৃতির মাধ্যমে নিজের অব্যাহতির কথা নিশ্চিত করেন প্যাক্সম্যান।
১৯৮০ সাল থেকে প্রতি রাতে সাম্প্রতিক খবরাখবর নিয়ে নির্মিত অনুষ্ঠান ‘নিউজনাইট’ প্রচারিত হচ্ছে বিবিসি টু চ্যানেলে। ১৯৮৯ সালে এই অনুষ্ঠানে উপস্থাপক হিসেবে যোগ দেন সাংবাদিক প্যাক্সম্যান।
দীর্ঘদিন ধরে প্যাক্সম্যানের সঙ্গে কাজ করেছেন ‘নিউজনাইট’এর পরিচালক টনি হল। প্যাক্সম্যানকে ‘দুর্লভ এবং উজ্জ্বল এক প্রতিভা’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন ৬৩ বছর বয়সী এই পরিচালক।
হল বলেন, ‘রাজনীতিবিদদের নানা প্রশ্নের প্যাঁচে ফেলে কঠিন পরিস্থিতি তৈরি করায় পারদর্শী ছিলেন প্যাক্সম্যান, যা দর্শককে বেশ আনন্দ দিত। এরকম একজন গুণী ব্যক্তির প্রতি বিবিসি এবং আমাদের দর্শকেরা সবসময়ই কৃতজ্ঞ থাকবে।‘
‘নিউজনাইট’ ছাড়লেও প্যাক্সম্যান তার আরেকটি অনুষ্ঠান ‘ইউনিভার্সিটি চ্যালেঞ্জ’এ নিয়মিত থাকবেন, যেখানে ১৯৯৪ সাল থেকে কাজ করছেন তিনি।
১৯৭২ সালে বিবিসির স্থানীয় রেডিও ‘বিবিসি রেডিও ব্রাইটন’এর মাধ্যমে ক্যারিয়ার শুরু করেন প্যাক্সম্যান। ‘নিউজ নাইট’এর আগে ‘প্যানোরামা’ এবং ‘ব্রেকফাস্ট টাইম’এ কাজ করেছেন তিনি।
নিজের সাক্ষাৎকার নেয়ার বিশেষ ধরণের জন্য বরাবরই সুপরিচিত ছিলেন এই সাংবাদিক। অপরপক্ষকে প্রশ্নবানে জর্জরিত করার অসংখ্য নজির রয়েছে তার। যার মধ্যে স্মরণীয় একটি সাক্ষাৎকার ছিল ১৯৯৭ সালে প্রচারিত মাইকেল হাওয়ার্ডের সঙ্গে, টোরি নেতাকে একই প্রশ্ন ১২ বার জিজ্ঞাসা করেছিলেন প্যাক্সম্যান।