মালয়েশিয়াস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসের কর্তাদের আচরণে প্রবাসীরা ক্ষুদ্ধ!
সিন্ডিকেটের কাছে জিম্মী সাধারন শ্রমিক
আহমাদুল কবির, মালয়েশিয়া থেকে: নানাভাবে মালয়েশিয়ায় পাড়ি জমানো প্রবাসীরা দূতাবাসের কর্তাদের বেপরোয়া আচরণে অতিষ্ট হয়ে পড়েছেন। টাকা ছাড়া কোন কাজ করা সম্ভব হয়না। একটি সূএে জানা গেছে, কুয়ালালামপুরের প্রত্যন্ত অন্চলে ছড়িয়ে থাকা শ্রমিকরা দূতাবাসে আবেদন এবং পাসপোর্ট পেতে কর্মকর্তাদের পিছনে পিছনে ধরনা দিয়েও সময় মত পাসপোর্ট পাচ্ছেনা। দিনের পর দিন ভোগান্তি এত চরমে উঠেছে ভ’ক্তভোগীরা হতাশ হয়ে পড়েছেন। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার সাথে যোগাযোগ করেও কোন লাভ হয়নি। দূতাবাসের কর্মকর্তারা বলেন পুলিশ রিপোর্ট আসেনি । তাই পাসপোর্ট ডেলিভারী দেয়া যাচ্ছেনা। একটি সূএে জানাযায়, পাসপোর্টের আবেদন করার পর কর্তারা ডিএসবির রিপোর্টের জন্য জেলা বিশেষ শাখা পুলিশ সুপারের কাছে প্রতিবেদন পাঠানোর পর ডিএসবির জেলা বিশেষ শাখা থেকে গোপনে তদন্ত কালে থানা ও ডিএসবির রেকর্ড পএ পর্যালোচনায় আবেদন কারির বিরোদ্বে কোন রাষ্ট্রদ্রোহী বা বিরোপ কোন কাজে লিপ্ত নয় বলে প্রতিবেদন দাখিল করার পর ও সময় মত পাসপোর্ট পায়নি শ্রমিকরা। না পাওয়াতে ৬পির পারমিট করতে পারেনাই অনেকে। শ্রমিকরা ডিএসবির রিপোর্ট দাখিল করার পরও পাসপোর্ট পাচ্ছেনা। এতে দূতাবাসের কর্মকর্তাদের প্রতি ক্কীপ্ত রয়েছেন প্রবাসী শ্রমিকরা। একটি বিশ্বস্ত সূএে জানাযায়, মালয়েশিয়ায় অবৈধ ভাবে অবস্তান কারী শ্রমিকদের বৈধতা দেয়ার লক্ক্যে মালয় সরকারের ঘোষিত ৬পি প্রোগ্রামের আওতায় আসতে পারেনি অনেক শ্রমিক। আবার অনেকে পাসপোর্ট না পাওয়ার বেদনায় ক্কোভে ট্রাভেল পাস নিয়ে দেশে চলে আসছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন বাংলাদেশী জানান,হাই কমিশনে এখন ওপেন দালালী চলছে। আর এই দালালদের শেল্টার দিয়ে কমিশনের কর্মকর্তারা এখন কোটি কোটি রিংগিতের মালিক বনেগেছেন। কর্তারা কাউকে আর পাওা দেননা। ওই প্রবাসী ক্কোভ প্রকাশ করে বলেন, শ্রমিকরা বৈধ হওয়ার আবেদন করেও পাসপোর্ট পায়না। আরেক শ্রমিক এ প্রতিবেদককে জানায় , ফিঙ্গার প্রিন্ট জাল হওয়ার কারণে কি করবে সেটা জানতে হাই কমিশনে গেলে তারা গেটে ঢোকার পর্যন্ত অনুমতি দিচ্ছেনা। অথচ কিছু কিছু লোক অনায়াসে ভিতরে ঢুকছে আর বের হয়ে আসছে। অথচ এদের ব্যাপারে হাই কমিশন নিরব কেন! বা কি স্বার্থে তাদের বিরোদ্বে কোন ব্যবস্তা গ্রহণ করছেনা কমিশন। এ ছাড়া দূতাবাসে গিয়ে প্রবাসী শ্রমিকরা পাসপোর্ট তোলা এবং নবায়ন করতে ঘন্টার পর ঘন্টা দিনের পর দিন কাজ হচ্ছেনা। এ দিকে ডিজিটাল পাসপোর্ট ফি ১১৬ রিংগীতের বিপরীতে কমিশনের কর্তারা চার শ থেকে ৫ শ রিংগীতের বিনিময়ে ১ দিনেই ফিঙ্গার প্রিন্ট করে নিচ্ছেন বলে এশটি সূএে জানা গেছে। এ ব্যাপারে হাই কমিশনের মুটু ফোনে যোগাযোগ করা হলে কোন স্বদোওর পাওয়া যায়নি। তথ্যানুসন্ধানে জানা যায়, মালয়েশিয়ায় শতাধিক দালাল প্রতিস্টানের কাছে জিম্মি অর্ধলক্ষাধিক শ্রমিক। দালাল প্রতিষ্ঠানের কাছে পাসপোর্ট জমা দিয়ে নির্যাতনের স্বীকার হচ্ছেন সেখানকার শ্রমিকরা । এসব প্রতিস্টানের বিরোদ্বে কোন ব্যবস্থা না নেয়ার কারনে বেপরোয়া হয়ে উঠেছে দালাল প্রতিস্টান গুলো। থানা পুলিশ জেল জরিমানার ভয় স্বত্বেও মাঝে মাঝে প্রতিবাদী হয়ে উঠছে নিরীহ শ্রমিকরা। ফলে শ্রমিক-দালাল মারামারির ঘটনা ঘটছে বিভিন্ন স্থানে । মালয়েশিয়া পুলিশ ক্যাম্পে শ্রমিক আটক অব্যাহত রয়েছে। প্রবাসীদের মাঝে বাড়ছে উদ্বেগ উৎকন্ঠা । বাংলাদেশ হাইকমিশনের কর্তাদের আচরণ নমনীয় ও শ্রমিকদের মানবাধিকার পর্যবেক্ষনের দাবী জানিয়েছেন প্রবাসীরা। সরেজমিনে মালয়েশিয়ায় শ্রমিকদের কাজের অবস্থা দেখে তাদের সাথে কথা বলেন এ প্রতিবেদক। মালয়েশিয়ার ব্যাস্ত এলাকা কুতরায়ায় প্রতিদিন মানুষের কোলাহল থাকে।এ এলাকায় বেশী সমাগম বাংলাদেশীদের। সে দেশে সভা-সমাবেশের চিত্র নেই।নানা দেশের নানা বর্নের মানুষের চারদিকে ছুটোছুটি যেন প্রতিদিনের চিত্র।কিন্তু না সে চিত্র পাল্টে গেল কিছু সমযের জন্য।মাইডিন নামের বৃহৎ ডিপার্টমেন্টাল স্টোরের সামনে অনেক মানুষের জটলা চোখে পড়লো।খবরটা বাংলাদেশীরাই দিল।বাংলাদেশী দালালকে বেদড়ক কিল ঘুষি মারছে বাংলাদেশের শ্রমিক। দুর থেকে তার কথা শুনা যায়নি তবে এটুকু বুঝা গেল অনেকদিন পর সে দালালকে পেয়েছে।এবং তার মনে ক্ষোভের শেষ নেই।দিন দুপুরে দালাল পিটিয়েছে শ্রমিক,পরিনাম দালাল শ্রমিক দু জনকে গাড়িতে তুলে থানায় চালান। এমন ঘটনা প্রায়ই ঘটছে নানা স্থানে।এদিকে শ্রমিকদের কাছে দালাল প্রতিষ্ঠান ভিসা নবায়নের জন্য অতিরিক্ত রিংগিট দাবী করায় এজেন্সী অফিসে লাঠি দিয়ে শ্রমিক পেটানোর ঘটনায় মালোয়েশিয়া জুড়ে চলছে তোলপাড়। এপিআই নামক একটি নির্মান প্রতিস্টানের শ্রমিকরা ভিসা নবায়নে সরকারের সহযোগীতা চেয়েছেন।
কুয়ালালামপুর থেকে প্রায় ৫০ কিলোমিটার দুরে এপিআই নামক প্রতিস্টানে কাজ করেন শতাধিক বাংলাদেশী শ্রমিক।এর মধ্যে মাত্র একজন রয়েছেন সিলেটের।শ্রমিক গবেষকরা পাসপোর্ট কোন এজেন্সীতে জমা দেয়ার প্রবনতা বন্ধ করতে সরকারে উদ্যেগ নেয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। তারা সরকার এর পক্ষ থেকে শ্রমিকদের সাথে সরাসরি যোগাযোগের ব্যবস্থা রাখার দাবী জানিয়েছেন।
মালয়েশিয়ায় বসবাসরত বাংলাদেশের নাগরিক শ্রমিক বিশেষ্জ্ঞ মোঃ হারুন আল রশীদ বলেন মালয়েশিয়া হাই কমিশন প্রত্যাশিত সেবা দিতে না পারায় হাই কমিশন ঘিরে রয়েছে শতাধিক দালাল সিন্ডিকেট । শ্রমিকরা দালালদের কাছে তাদের পাসপোর্ট জমা দেন এটি আতœঘাতি।কিন্তু সরকারের দুর্বলতার কারনে এসব ঘটছে বলে মনে করেন তিনি।কুয়ালালামপুরে এপিআই নামক একটি নির্মান প্রতিস্টানের শ্রমিকরা তাদের পাসপোর্ট দালাল প্রতিস্টানের কাছে জমা দিয়ে বিপাকে পড়েছেন।প্রতিস্টানের আবাসিক মেসে পঙ্গুত্ববরনকারীরা রয়েছেন বীমা দাবী পূরনের আশায়।এপিআই কোম্পানী শুধু নয় আরো বিভিন্ন প্রতিস্টান শ্রমিকদের সাথে প্রতারনা ও হয়রানী করছে বলে জানান তিনি।বাংলাদেশ সরকারের পরররাস্ট মন্ত্রণালয়ের কাছে এসব বিষয় তুলে ধরার পরও কোন কাজ হচ্ছেনা বলে অভিযোগ করেন তিনি।
মালয়েশিয়ার মানবাধিকার সংগঠনগুলো শ্রমিকদের ব্যাপারে চাঞ্চল্যকর তথ্যদিয়ে বলছে বাংলাদেশের কিছু দালাল একাধিক প্রতিস্টানের জন্ম দিয়ে শ্রমিকদের অসচেতনতাকে পুজি করে রমরমা ব্যবসা করছে।তারা শ্রমিকদের সাথে বেপরোয়া আচরন করছে।পাসপোর্ট জমা নিয়ে জিম্মী করে রাখছে।বাংলাদেশের শ্রকিদের দালাল নির্ভরতা কমাতে সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সু দৃষ্টি কামনা করছেন মালয়েশিয়ায় অবস্তান রত বাংলাদেশী প্রবাসীরা।