প্রস্তুত শোলাকিয়া
আশরাফুল ইসলাম, কিশোরগঞ্জ থেকে: প্রতি বছরের মতো এবারও ঈদুল ফিতরের জামাত অনুষ্ঠিত হবে শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দানে। এবার এ ঈদগাহে অনুষ্ঠেয় ১৮৬তম ঈদুল ফিতরের জামাত আয়োজনের প্রস্তুতি প্রায় সম্পন্ন। এরপরও চলছে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি। কাতারের লাইন টানা, মাঠ পরিষ্কার পরিচ্ছন্নকরণ, ধোয়া মোছা ও রঙ প্রলেপ দেয়ার কাজে চলছে শেষ তুলির আঁচড়। নরসুন্দা নদীর তীর ঘেঁষে অবস্থিত প্রাচীন এবং ঐতিহ্যবাহী এ শোলাকিয়ার ঈদ জামাত শুধু দেশের নয়, উপমহাদেশেও বৃহত্তম ঈদ জামাত হিসেবে বিবেচিত হয়ে আসছে। সকাল ১০টায় অনুষ্ঠিত হবে ঈদ জামাত। গত তিন বছরের মতো এ বছরের ১৮৬তম শোলাকিয়ার ঈদের জামাতেও ইমামতি করবেন বিশিষ্ট ইসলামী চিন্তাবিদ আল্লামা ফরীদ উদ্দীন মাসউদ। প্রথা অনুযায়ী বন্দুকের গুলি ছুড়ে শুরু হবে ঈদের জামাত। বিশাল এ ঈদ জামাতের মুসল্লিদের দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য নামাজ শুরুর সংকেত হিসেবে গুলি ছুড়ে আওয়াজ করা হয়। দূর-দূরান্ত থেকে আসা মুসল্লিদের সুবিধার্থে বাংলাদেশ রেলওয়ে ‘শোলাকিয়া ঈদ স্পেশাল’ নামে দুটি বিশেষ ট্রেনের ব্যবস্থা করেছে। বিশেষ ট্রেনের একটি ঈদের দিন সকাল ৬টায় ভৈরববাজার থেকে কিশোরগঞ্জের উদ্দেশ্যে ছেড়ে আসবে এবং সকাল ৮টায় কিশোরগঞ্জ পৌঁছবে। জামাত শেষে ট্রেনটি দুপুর ১২টায় পুনরায় ভৈরববাজারের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যাবে এবং বেলা ২টায় ভৈরববাজারে পৌঁছাবে। অপর ট্রেনটি ঈদের দিন সকাল পৌনে ৬টায় ময়মনসিংহ থেকে কিশোরগঞ্জের উদ্দেশ্যে ছেড়ে আসবে এবং সকাল সাড়ে ৮টায় কিশোরগঞ্জ পৌঁছবে। এ ট্রেনটিও জামাত শেষে দুপুর ১২টায় কিশোরগঞ্জ থেকে ছেড়ে যাবে এবং বেলা ৩টায় ময়মনসিংহে পৌঁছবে। এছাড়া চ্যানেল আই সকাল পৌনে ১০টা থেকে শোলাকিয়া ঈদ জামাতটি সরাসরি সমপ্রচারের ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। শোলাকিয়ার ঈদ জামাতে অংশগ্রহণের জন্য দূর-দূরান্ত থেকে মুসল্লিরা এরই মাঝে কিশোরগঞ্জে আসা শুরু করে দিয়েছেন। ঈদগাহের মিম্বর, আত্মীয়-স্বজনের বাড়ি, বিভিন্ন মসজিদ ও আবাসিক হোটেলগুলোতে তারা অবস্থান নিচ্ছেন। ঐতিহ্যবাহী এ ঈদ জামাত আয়োজনকে ঘিরে উৎসবের আমেজ ছড়িয়ে পড়েছে সর্বস্তরের লোকজনের মাঝে। ঈদগাহের মিম্বর সংস্কারসহ স্থান সংকুলানের জন্য এর দু’পাশে জায়গা সমপ্রসারণ করা হয়েছে। সংস্কার করা হয়েছে ওজুখানা। এছাড়া ঈদগাহ সংলগ্ন পুকুর ও নরসুন্দা নদীতে অস্থায়ী ওজুখানা নির্মাণ করা হয়েছে। ঈদগাহের প্রবেশপথ এবং শহরের প্রধান প্রধান সড়কে নির্মাণ করা হচ্ছে অসংখ্য তোরণ। রাস্তার দু’পাশে টানানো হচ্ছে রংবেরংয়ের পতাকা ও ব্যানার। দূর-দূরান্ত থেকে আসা মুসল্লিদের আপ্যায়ন ও প্রাথমিক চিকিৎসার জন্য তৈরি করা হচ্ছে স্বেচ্ছাসেবী ক্যাম্প। প্রশাসনের পক্ষ থেকে নজিরবিহীন নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থার প্রস্তুতি রাখা হয়েছে। মেটাল ডিটেক্টর দিয়ে পুরো মাঠ ও আশপাশের এলাকা তল্লাশি করাসহ ঈদ জামাতের সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে নিয়োজিত থাকবে বিপুল সংখ্যক র্যাব-পুলিশ। ঈদগাহ ময়দানের পাশে বসবে ঈদ মেলা।