স্বাধীনতা ঘোষণা করল দোনেতস্ক ও লুহানস্ক প্রজাতন্ত্র
পূর্ব ইউক্রেনের গণভোটে রুশপন্থীদের জয়
ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চল দোনেতস্কে রুশপন্থীদের আয়োজিত গণভোটে দোনেতস্কের ৮৯ শতাংশ এবং লুহানস্কের ৯৬ শতাংশ ভোটার স্বায়ত্তশাসনের পক্ষে রায় দিয়েছেন বলে জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন। নির্বাচন কমিশনার রোমান লিয়াজিন বলেন, ৭৫ ভাগ ভোটার এই নির্বাচনে ভোট দিয়েছেন, যাদের ৮৯ ভাগ স্বায়ত্তশাসনের পে রায় দিয়েছেন। ভোটারদের ১০ ভাগ স্বায়ত্তশাসনের বিপক্ষে ভোট দিয়েছেন।
ইউক্রেন এই গণভোটকে রাশিয়া পরিচালিত একটি ‘অপরাধমূলক প্রহসন’ বলে আখ্যা দিয়েছে। এ ছাড়া ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও যুক্তরাষ্ট্র এই নির্বাচনকে অবৈধ বলে ঘোষণা দেয়।
এ দিকে এ গণভোটের মাধ্যমে ইউক্রেনে দুই সপ্তাহ পর যে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন হতে যাচ্ছে তার প্রতি বৃদ্ধাঙুলি দেখানো হচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন মনে করছে, ওই নির্বাচনের মাধ্যমে ইউক্রেনে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠিত হবে।
এ দিকে ইউক্রেন প্রশ্নে নতুন করে আন্তর্জাতিক আলোচনা অনুষ্ঠানের কথা উড়িয়ে রাশিয়া বলেছে, কিয়েভ ও স্বায়ত্তশাসনকামীদের মধ্যে সরাসরি আলোচনার মাধ্যমেই কেবল এ সঙ্কটের সমাধান হতে পারে। কিয়েভ, মস্কো, ওয়াশিংটন ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের অংশ গ্রহণে আলোচনা প্রসঙ্গে পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ বলেন, ‘নতুন করে চার পীয় আলোচনা অনুষ্ঠানের কোনো যুক্তি নেই।’ এ ধরনের আলোচনার পুনরাবৃত্তি চাই না। কেন না এ ধরনের আলোচনা ইতোমধ্যে হয়েছে।
তবে এ ক্ষেত্রে ইউক্রেনের কিয়েভ ও পূর্বাঞ্চলে বিরোধী পরে মধ্যে সরাসরি আলোচনার পদপে নেয়া যেতে পারে।’
এ দিকে ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলীয় দোনেতস্ক ও লুহানস্ক প্রজাতন্ত্রের নেতৃবৃন্দ স্বাধীনতা ঘোষণা করেছেন। সাবেক প্রেসিডেন্ট ভিক্টর ইয়ানুকোভিচের একজন উত্তরসূরি নির্বাচনের লক্ষ্যে আমেরিকা ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের সহযোগিতায় যখন আগামী ২৫ মে ইউক্রেনে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে তখন এই ঘোষণা দিলেন দুই প্রজাতন্ত্রের নেতৃবৃন্দ। এই দুই অঞ্চল ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে অংশ নেবে না বলেও এর আগে ঘোষণা করা হয়েছে।
অবশ্য মার্চে যেভাবে ক্রিমিয়াকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে একইভাবে ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলকে অন্তর্ভুক্ত করার ইচ্ছা নেই বলে আভাস দিয়েছে রাশিয়া। ইউক্রেনের ভবিষ্যৎ নিয়ে আলোচনায় পূর্বাঞ্চলকে অন্তর্ভুক্ত করার বিষয়ে চাপ দিচ্ছে মস্কো। শীতল যুদ্ধের পর পাশ্চাত্যের সঙ্গে যে সবচেয়ে মারাত্মক টানাপড়েন দেখা দিয়েছে তার রাজনৈতিক সুরাহা চায় মস্কো।
উল্লেখ্য, ইউক্রেনে ব্যাপক বিক্ষোভের মুখে গত ফেব্রুয়ারি মাসে নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ভিক্টর ইয়ানুকোভিচ মতাচ্যুত হলে দেশটিতে বর্তমান সঙ্কট শুরু হয়। রুশপন্থী প্রেসিডেন্ট ইয়ানুকোভিচ মতাচ্যুত হওয়ার পরই ক্রিমিয়া আলাদা হয়ে রাশিয়ায় যোগ দেয়। এখন এ গণভোটের পর রুশ সীমান্তবর্তী দোনেতস্ক ও লুহানস্ক প্রজাতন্ত্রের ভবিষ্যৎ কী হয় সেটাই এখন দেখার বিষয়। গণভোট আয়োজনকারী নেতারা ইঙ্গিত দিয়েছেন, তারা এ মাসের শেষ দিকে রাশিয়ার সাথে যোগ দেয়ার প্রশ্নে দ্বিতীয় দফা নির্বাচন অনুষ্ঠান করতে চান। তারা আরো বলেছেন, তারা ২৫ মে অনুষ্ঠেয় ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন বয়কট করবেন।