নির্বাচনের ফলাফলের উপর নির্ভরশীল বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক : পঙ্কজ শরণ

দিল্লির সাথে ঢাকার কূটনৈতিক ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক ভবিষ্যতে কেমন হবে তা ভারতের লোকসভা নির্বাচনের ফলাফলের ওপর নির্ভর করছে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশস্থ ভারতীয় হাইকমিশনার পঙ্কজ শরণ। তিনি বলেন, নির্বাচনের ফলাফলের পর যদি মোদি সরকার ক্ষমতায় আসে তাহলে আমাদের এই কয়েক দিন ধৈর্য ধরতে হবে। দেখতে হবে মোদি সরকার কী ধরনের বৈদেশিক নীতি গ্রহণ করে।
ভারতীয় হাইকমিশনার বুধবার দুপুরে পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল-এর সাথে তাঁর দপ্তরে এক বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথাগুলো বলেন। এ সময় ভারতের সাথে বাংলাদেশের দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও নিরাপত্তা বিষয়ে আলোচনা হয়।
বৈঠক শেষে ভারতীয় হাইকমিশনার উপস্থিত সাংবাদিকদের বলেন, ভারত বাংলাদেশের সাথে তার সম্পর্ককে সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়ে থাকে। দু’দেশের অর্থনীতির সমৃদ্ধিতে এ সম্পর্ক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আমি বিশ্বাস করি ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক অর্থনৈতিক, বাণিজ্যিক ও বিনিয়োগের দিক থেকে উত্তরোত্তর সমৃদ্ধশালী হবে।
ভারতের সাম্প্রতিক জাতীয় নির্বাচনে যদি মোদি সরকার আসে তাহলে এ সম্পর্ক কেমন থাকবে সে প্রশ্নের উত্তরে ভারতীয় হাইকমিশনার উপস্থিত সবাইকে আর কয়েক দিন অপেক্ষা করতে বলেন। তিনি বলেন, মে মাসের ১৬-১৭ তারিখে নির্বাচনের ফলাফল প্রকাশ করা হবে। এতে যদি মোদি সরকার ক্ষমতায় আসে তাহলে আমাদের এই কয়েক দিন ধৈর্য ধরতে হবে। দেখতে হবে মোদি সরকার কি ধরনের বৈদেশিক নীতি গ্রহণ করে।
হাইকমিশনার বলেন, পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় অর্থনৈতিক পরিকল্পনা প্রণয়নের ক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি মন্ত্রণালয়। কাজেই ভারত সরকার পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের সাথে নিবিড় সম্পর্ক রেখে দু’দেশের অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক সম্পর্ককে বেগবান করতে আগ্রহী। এজন্যেই তিনি পরিকল্পনা মন্ত্রীর সাথে বৈঠকে মিলিত হয়েছেন বলে উপস্থিত সাংবাদিকদের জানান।
বর্তমানে ভারতের ১ শ’ কোটি ডলার বিনিয়োগ সম্পর্কে বলতে গিয়ে ভারতীয় হাইকমিশনার জানান, এই এক হাজার মিলিয়ন ডলারের মধ্যে ৮০০ মিলিয়ন ঋণ এবং বাকি ২০ মিলিয়ন ভারত সরকার বাংলাদেশকে অনুদান হিসেবে দিচ্ছে। এই ৮০০ মিলিয়ন ঋণের মধ্যে দু’দেশ ১৫টি প্রকল্পে ৭৯৪ মিলিয়ন বিনিয়োগ কার্যক্রম ঠিক করে ফেলেছে। ব্রীজ ও রেলপথ তৈরি এমনিতেই একটু সময় সাপেক্ষ। তথাপি এ কাজ দুটিও অত্যন্ত বেগবান হয়েছে সাম্প্রতিক সময়ে।
নারায়ণগঞ্জের সাম্প্রতিক পরিস্থিতি সম্পর্কে ভারতের মন্তব্য জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটা বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ ব্যাপার। এই ব্যাপারে কোনো মন্তব্য নয়।
বৈঠক শেষে পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল সাংবাদিকদের জানান, ভারত সরকার বাংলাদেশের সাথে অত্যন্ত অর্থনৈতিক সম্পর্ক গড়ে তুলতে আগ্রহী, যাতে করে দুই দেশই পারস্পরিকভাবে অর্থনৈতিকভাবে উপকৃত হয়। আমি আশাবাদী ভারত সরকার এ বছর পদ্মা সেতু তৈরীতে ১৬ শ’ কোটি টাকা বরাদ্দ করবে। তিনি বলেন, বর্তমানে ভারত বিদ্যুৎ উৎপাদন খাতে বিনিয়োগে এগিয়ে আসবে বলে আমি বিশ্বাস করি। দুই দেশের সরকারই উন্নয়নের অর্থনীতিতে বিশ্বাসী। আমি জানি ভারত বাংলাদেশের চাহিদা সম্পর্কে সম্পূর্ণ অবগত আছে কাজেই সামনের দিনগুলোতে বাংলাদেশে ভারতীয় বিনিয়োগ বাড়বে।
বর্তমান সরকার দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় আসার পর ভারতীয় হাইকমিশনারের পরিকল্পনা মন্ত্রীর সাথে এটিই প্রথম বৈঠক। বৈঠক শেষে পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল এবং ভারতীয় হাইকমিশনার উপস্থিত সাংবাদিকদের সাথে এক প্রেস ব্রিফিং-এ মিলিত হন।

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও দেখুন...
Close
Back to top button