মুজিবের উদ্ধারের দাবিতে লন্ডনস্থ বাংলাদেশ হাইকমিশন ঘেরাও
সুনামগঞ্জে নিখোঁজ হওয়া বিএনপি নেতা মুজিবুর রহামন মুজিবের উদ্ধারের দাবিতে লন্ডনস্থ বাংলাদেশ হাইকমিশনের সামনে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেছে যুক্তরাজ্য বিএনপি। একি সাথে গুম ও অপহরণ বন্ধে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন র্যাব বিলুপ্তির দাবি জানিয়ে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি বরাবর স্মারকলিপি পাঠিয়েছে সংগঠনটি।
মঙ্গলবার বিকাল ৫টায় এ বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন যুক্তরাজ্য বিএনপি’র সভাপতি শাইস্তা চৌধুরী কুদ্দুস।
যুক্তরাজ্য বিএনপির সাধারণ সম্পাদক কয়সর এম আহমদ এর পরিচালনায় সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক মুহিদুর রহমান, জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও বগুড়া জেলা বিএনপি’র সভাপতি ভিপি সাইফুল ইসলাম, যুক্তরাজ্য বিএনপির সাবেক আহবায়ক এম.এ মালেক,সাবেক সাধঅরণ সম্পাদক এম এ সালাম, সিনিয়র সহ সভাপতি আব্দুল হামিদ চৌধুরী, সহ সাপতি আবুল কালাম আজাদ, ইউনুছ আলী, শহিদুল ইসলাম মামুন, জসীম উদ্দিন সেলিম, এডভোকেট রেহানুল কবির রনি প্রমুখ।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, গত ১৬ দিনেও বিএনপি নেতা মুজিবের কোন সন্ধান পাওয়া য়ায়নি। বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলাবাহিনী তাকে সউদ্ধারে এখনও পর্যন্ত কোন ফলপ্রসূ ব্যবস্থা সগ্রহণে সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে। একজন প্রবাসীর নিজ দেশে এভাবে নিখোঁজ হবার ঘটনা কিছুতেই মেনে নেয়া যায়না। নেতৃবৃন্দ এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও দোষীদের গ্রেফতারের দাবি জানান।
দেশে অব্যাহত গুমের ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে নেতৃবৃন্দ বলেন, বাংলাদেশের অব্যাহত গুম, অপহরনের প্রতিবাদ করতে গিয়ে মুজিব নিজেই গুমের শিকার হয়েছেন। নারায়ণগঞ্জে আলোচিত ৭ জনকে অপহরণ ও শীতলক্ষ্যা রনদী থেকে লাশ উদ্ধারের ১ সপ্তাহেরব্যবধানে মুজিব নিখোঁজ হয়েছেন। এ ঘটনায় র্যাবের সংশ্লিষ্টতার খবর মুজিবের জীবন নিয়ে আরো আশঙ্কার সৃষ্টি করেছে। আজ পর্যন্ত নিখোঁজ ইলিয়াস আলীর কোন সন্ধান মিলেনি।
রক্ষক ভক্ষকের ভূমিকায় মন্তব্য করে নেতৃবৃন্দ বলেন, দেশী-বিদেশী মিডিয়া ও মানবাধিকার সংস্থার রিপোর্ট অনুযায়ী, গত কবছরে জনবিচ্ছিন্ন আওয়ামী লীগ সরকারের পৃষ্ঠপোষকতায় শত শত লোককে এভাবে গুম, অপহরণ ও হত্যা করা হয়েছে। আর এসব ঘটনায় পুলিশ, বিশেষ করে র্যাবের সংশ্লিষ্টতা এখন প্রমাণিত। জনগণের জানমাল রক্ষা করা যাদের দায়িত্ব তারা এখন রক্ষকের পরিবর্তে ভক্ষকের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছে।
বাংলাদেশ মৃত্যু উপত্যকা উল্লেখ করে নেতৃবৃন্দ বলেন, বিনা ভোটে জোর করে কআষমতায় আঁকড়ে থাকা আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠ-পোষকতার কারণে পুলিশ, বিশেষ করে র্যাব লাগামহীনভাবে গুম -খুন, চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকান্ড চালিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু সরকার তাদের বিচারের মুখোমুখি করছে না।
মুজিবকে দ্রুত উদ্ধারের দাবি জানিয়ে নেতৃবৃন্দ বলেন, বৃটিশ নাগরিক মুজিবকে জীবিত উদ্ধার করা আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি রক্ষার জন্য অত্যন্ত জরুরি। বৃটিশ সরকার ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন তার অপহরণের ঘটনায় উদ্বিগ্ন। এ ব্যাপারে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে তারা রাষ্ট্রপতির হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
সমাবেশে শাইস্তা চৌধুরী কুদ্দুস বলেন, গুম, খুন, অপহরণ ও গুপ্ত হত্যা বাংলাদেশে অস্বাভাবিক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। এ অবস্থা চলতে থাকলে দেশ ভয়ঙ্কর রাজ্যে পরিণত হবে। সরকার নিরাপত্তা দিতে না পারলে মানুষ কার কাছে নিরাপত্তা চাইবে। তাই দেশ ও জাতির স্বার্থে সরকারকে গুম, খুন, অপরহণ ও গুপ্ত হত্যা বন্ধ করতে হবে।
র্যাব বিলুপ্তির আহবান জানিয়ে পাঠানো স্মারক লিপিতে বলা হয়, গুম-খুন ও অপহরনের দায়ে অভিযুক্ত র্যাবকে অবিলম্বে বিলুপ্ত করেেত হবে। র্যাব এখন একটি কলঙ্কিত বাহিনী। র্যাবের প্রয়োজন ফুরিয়ে গেছে। র্যাবকে বিলুপ্ত ঘোষণা করে পুলিশ বাহিনীকে সংস্কারের মাধ্যমে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় কার্যকর ভূমিকা পালনের উপযোগী করতে হবে।
সমাবেশে বিক্ষোভকারীরা বাংলাদেশে গুম-খুন বন্ধসহ, মুজিবকে উদ্ধার সম্বলিত প্ল্যাকার্ড বহন করতে দেখা যায়।
সমাবেশে অনান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, যুক্তরাজ্য বিএনপি নেতা কাজী আঙ্গুর মিয়া, শহিদুল ইসলাম মামুন, তাহির রায়হান পাভেল, সাদিক মিয়া, হেলাল নাসিমুজ্জামান, ইসলাম উদ্দিন, করিম উদ্দিন, ফেরদৌস আলম, জসিম উদ্দিন সেলিম, আহাদ নাসিম রেজা, আজমল চৌধুরী জাভেদ, মনসুর আহমদ রুবেল, ফয়জুল ইসলাম, সমছু মিয়া, হাসান চৌধুরী, সুয়েল আহমদ, হরমুজ আলী, তফজ্জুল আলী, অঞ্জনা আলম, মোকাদ্দেম চৌধুরী নিয়াজ, মঞ্জুর আশরাফ খান, আবদুল বাসিত বাদশা, শামিম আহমদ, আফজাল হোসেন, টিপু আহমদ, দেওয়ান আব্দুল বাসিত, এস এম লিটন, হেভেন খান, জিয়াউল ইসলাম জিয়া, শামিম তালুকদার, আলকু মিয়া, বাবর চৌধুরী, খিজির আহমদ, নাসির আমদ শাহিন, মিছবাউজ্জামান সোহেল, আবুল হাসনাত রিপন, আবদুস সালাম, তছলিমা তাজ, সুমী বেগম, শরফরাজ আহমদ শরফু, ফাহিম, আতিকুর রহমান, রফিকুল ইসলাম সজিব, হেলাল উদ্দিন, শামসুল ইসলাম শাহিন, জুলমত আলী, শাজাহান আলী, তানবির আহমদ, শাকওয়া ইসমাঈল মতদ্দির, তফু শেখ, সারেহ গজনবী, আবদুল হান্নান প্রমুখ।