ইংলাককে আটক করেছে থাই সামরিক বাহিনী
থাইল্যান্ডে অভ্যুত্থানকারী সেনা কর্মকর্তারা সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইংলাক চিনাওয়াট, ক্ষমতাচ্যুত অন্তর্বর্তী প্রধানমন্ত্রী নিওয়াত্তুমরং বুসোংপাইসানসহ শতাধিক রাজনৈতিক নেতাকে আটক করেছে। তাদেরকে রাজধানী ব্যাংককের এক সামরিক স্থাপনায় রাখা হয়েছে। আটককৃতদের মধ্যে ইংলাকের বেশ কয়েকজন ঘনিষ্ঠ স্বজনও রয়েছেন।
এর আগে একটি সংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হয় থাইল্যান্ডে সরকারবিরোধী বিােভকারী গোষ্ঠীগুলোর কয়েকজন নেতাকে সামরিক কর্তৃপক্ষের ভাষায় ‘নিরাপদ ভবনে’ আটক রাখা হয়েছে। অভ্যুত্থানকারী কর্মকর্তাদের নেতা নিজেই প্রধানমন্ত্রীর পদে আসীন হয়েছেন। আজই কোনো এক সময় তিনি রাজা ভুমিবল আদুল্যদেজের সাথে দেখা করবেন।
থাইল্যান্ডের সেনাবাহিনী দেশটির ক্ষমতা গ্রহণের পর কারফিউ জারি অবস্থায় প্রথম রাত অতিবাহিত করেছে সেখানকার জনগণ।
দেশটির স্বাধীন সব টিভি ও রেডিও স্টেশন বন্ধ রয়েছে এবং রাজনৈতিক সমাবেশ নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। কয়েক শ’ সশস্ত্র সেনা রাজধানী ব্যাংককের রাস্তায় অবস্থান করছে। এদিকে বেশ কিছু দেশ সেনাবাহিনীর ক্ষমতা গ্রহণের বিষয়টি নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা করেছে।
দেশটির সেনা প্রধান স্থানীয় সময় রাত ১০ থেকে ভোর পাঁচটা পর্যন্ত এই কারফিউ বলবত রাখার আদেশ দেন। সাথে সব রকম রাজনৈতিক সমাবেশ নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
কারফিউ জারি থাকা অবস্থায় সেখানকার সাধারণ মানুষের মধ্যে সেনাবাহিনীর মতা গ্রহণ নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়েছে।
ব্যাংককের একজন বাসিন্দা সেনাবাহিনীর ক্ষমতা গ্রহণকে সঠিক সিদ্ধান্ত বলে মতামত দেন। তিনি বলছিলেন, আমি ভালো বোধ করছি যে সব কিছু শৃঙ্খলার মধ্যে আসবে। রেড শার্ট ও ইয়োলো শার্ট অর্থাৎ বিক্ষোভকারিরা ঘরে ফিরে যাবে। আর সাধারণ মানুষও শান্তিতে অফিস ও অন্যান্য কাজ করতে পারবে। গত কয়েক মাস ধরে অব্যাহত রাজনৈতিক সঙ্কটের পর সেনাবাহিনী মঙ্গলবার সামরিক শাসন জারির ঘোষণা দেয়। গত বছরের শেষের দিকে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইংলাক চিনাওয়াত পার্লামেন্টের নিম্ন-ক ভেঙে দিলে অস্থিরতা ছড়িয়ে পড়ে।
এরপর কয়েক মাস ধরে ব্যাংককের বিভিন্ন এলাকা দখল করে রাখে বিক্ষোভকারীরা। তবে এই ক্ষমতা দখলের নাটক ভালোভাবে দেখছেন না অনেকেই। ব্যাংককের এই বাসিন্দা বলছিলেন এটা সেই পুরোনো জিনিস। তারা এর আগেও ১৭,১৮ বার একই কাজ করেছে। তিনি বলছিলেন, তুমি যদি আমার কাছে জানতে চাও আমি বলবো সেনাবাহিনী একেবারে নির্বোধের মতো কাজ করেছে। এদিকে থাইল্যান্ডে সেনাবাহিনীর ক্ষমতা গ্রহণের বিষয়টি নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা করেছে পশ্চিমা দেশগুলো ও থাইল্যান্ডের প্রতিবেশী দেশগুলো।
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরি বলেছেন রাজনৈতিক নেতাদের আটক করা হয়েছে এই খবরে তিনি খুবই উদ্বিগ্ন। তিনি তাদের মুক্তি দাবি করেন। ইন্দোনেশিয়া, ফিলিপিন্স ও অস্ট্রেলিয়া গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।