লুৎফুর রহমান টাওয়ার হ্যামলেটসের মেয়র নির্বাচিত
লন্ডনের টাওয়ার হ্যামলেটস কাউন্সিলে ‘টাওয়ার হ্যামলেট ফার্স্ট’ গ্রুপের প্রার্থী হিসেবে লেবার পার্টির জন বিগসকে হারিয়ে দ্বিতীয়বারের মতো নির্বাহী মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত লুৎফুর রহমান। ২২ মে ভোট গ্রহণ শেষে শুক্রবার স্থানীয় সময় সকাল আটটায় ভোট গণনা শুরু হয়। রাত দেড়টার দিকে বিজয়ী প্রার্থীর নাম ঘোষণা করা হয়।
লুৎফুর রহমানের জন্ম সিলেটের বালাগঞ্জ উপজেলার সিকন্দরপুর গ্রামে। এখন পর্যন্ত যুক্তরাজ্যে সরাসরি ভোটে নির্বাচিত ১৩ মেয়রের মধ্যে লুৎফুর রহমানই একমাত্র সংখ্যালঘু প্রতিনিধি। অন্যরা শ্বেতাঙ্গ।
টাওয়ার হ্যামলেটে মোট ভোটার সংখ্যা ১ লাখ ৮১ হাজার ৮১৭ জন, এর মধ্যে ৮৬ হাজার ৫৪২ জন ভোট দেন; অর্থাৎ ভোটের হার ছিল ৪৭ শতাংশ।
টাওয়ার হ্যামলেটস কাউন্সিল নির্বাচনে এক লাখ ৮৬ হাজার ভোটারের মধ্যে ৮৬ হাজার ৪০২ ভোট পড়ে। প্রথম ধাপে টাওয়ার হ্যামলেটস ফার্স্ট মেয়র প্রার্থী লুৎফুর রহমান পান ৩৬ হাজার ৫৩৯ ভোট, যা মোট ভোটের ৪৩ দশমিক ৩৬ শতাংশ। তবে নির্বাচনে কোনো প্রার্থীই মোট ভোটের ৫১ শতাংশ না পাওয়ায় দ্বিতীয় ধাপের ভোট গণনা করা হয়। এতে তিন হাজার ২৫২ ভোটের ব্যবধানে লুৎফুর রহমান বিজয়ী হন। তিনি পান ৩৭ হাজার ৩৯৫ ভোট। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী লেবার-দলীয় জন বিগস পান ৩৪ হাজার ১৪৩ ভোট।
টাওয়ার হ্যামলেটসের মোট জনসংখ্যার প্রায় এক তৃতীয়াংশ বাংলাদেশি। নির্বাচনে জয় পরাজয় নির্ধারণে তারা বড় ভূমিকা রাখেন। মেয়র লুৎফর রহমান বৃটেনের রাজনীতিতে সবচেয়ে ক্ষমতাবান এবং প্রভাবশালী ব্রিটিশ-বাংলাদেশিদের একজন।
সম্প্রতি বিবিসির সমসাময়িক প্রসঙ্গ নিয়ে অনুষ্ঠান প্যানোরমায় বলা হয়, টাওয়ার হ্যামলেটস বারার নির্বাচিত মেয়র কর্মকর্তাদের সুপারিশ নাকচ করে বাংলাদেশি ও সোমালি সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলোকে অনেক বেশি অনুদান দিয়েছেন, যাতে অন্যান্য সংগঠনকে অনুদান দেয়ার ক্ষেত্রে তহবিল কমে গেছে। তবে লুৎফর এ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
টাওয়ার হ্যামলেটস বরাবরই লেবার পার্টির শক্ত ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত। কিন্ত গতবার তারা এখানে লজ্জাজনকভাবে হেরেছিল তাদের দলেরই এক বিদ্রোহী প্রার্থী লুৎফর রহমানের কাছে। লেবার পার্টি তাকে মেয়র পদে মনোনয়ন দিয়েও আবার তা প্রত্যাহার করে নেয়। তখন তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে মেয়র নির্বাচিত হন।
লুৎফুর রহমানের বিজয়ে হলের বাইরে অপেক্ষমাণ কয়েক হাজার সমর্থক উল্লাস করেন।
ফল প্রকাশের পর এক প্রতিক্রিয়ায় লুৎফুর রহমান বলেন, ‘কাউন্সিলের জনগণ আমার প্রতি বিশ্বাস ও আস্থা রেখেছেন। তাঁদের কাছে আমার দায়বদ্ধতা আরও বেড়ে গেল। এটা আমার ব্যক্তিগত নয়, কাউন্সিলের সব জনগণের বিজয়।’ সবাইকে নিয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার অঙ্গীকার করেন তিনি।