নির্বাচনের ফল মেনে নেবে মস্কো : পুতিন
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বলেছেন, ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ফলাফল তিনি মেনে নেবেন।
সেন্ট পিটার্সবার্গে এক বক্তব্যে তিনি বলেন, রোববারের ভোটে ইউক্রেনে যেই জয়লাভ করুন, রাশিয়া তার সাথে কাজ করতে প্রস্তুত রয়েছে। পুতিনের বক্তব্যে ইউক্রেনের সঙ্কট নিরসনে রাশিয়ার জোরালো আগ্রহের আভাস প্রকাশ পেলেও নতুন করে সহিংসতা ও রুশপন্থী বিদ্রোহীদের ভোট অনুষ্ঠানে বাধা প্রদানের সঙ্কল্পের কারণে ইউক্রেনে শান্তির সম্ভাবনা সুদূর পরাহত বলে মনে হচ্ছে।
ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলে রুশপন্থী বিচ্ছিন্নতাবাদী ও সরকারি বাহিনীর মধ্যে সংঘর্ষ অব্যাহত থাকার খবর পাওয়া গেছে। সরকারি বাহিনী সেখানের রুশপন্থীদের বিদ্রোহ দমনে অভিযান অব্যাহত রাখার মধ্যে এ সংঘর্ষ ঘটে। এপির সংবাদদাতা জানান, দোনেতস্ক অঞ্চলের কারলিভকা গ্রামের কাছে দু’টি ও নিকটবর্তী বিদ্রোহী চেকপোস্টের কাছে আরেকজন ইউক্রেনীয় সৈন্যের লাশ পাওয়া গেছে। একজন বিদ্রোহী নেতা বলেন, তাদের ওই অঞ্চলে সংঘর্ষে শুক্রবার ১৬ জন নিহত হয়। এর মধ্যে ১০ জন সৈন্য, চারজন বিদ্রোহী ও দু’জন অসামরিক লোক রয়েছে। নিরপেক্ষ সূত্রে অবশ্য এ তথ্য যাচাই করা যায়নি। কিয়েভে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানায়, বৃহস্পতিবার সেনা বহরে হামলার সময় ২০ জন বিদ্রোহী ও ১৬ জন সৈন্য নিহত হয়। প্রায় ৫০০ বিদ্রোহী সেনাবহরটির ওপর হামলা চালালে লড়াই শুরু হয়। তবে ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলে সহিংসতায় রাশিয়ার কোনো রকম সংশ্লিষ্টতার কথা অস্বীকার করেন পুতিন।
আজ রোববার ইউক্রেনে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। অন্তর্বর্তী প্রেসিডেন্ট এতে অংশ নিতে সব ভোটারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, ‘এ নির্বাচন আমাদের জাতির ভিত্তিকে মজবুত করবে’।
এই প্রথমবারের মতো বেশ স্পষ্ট ভাষায় ইউক্রেনের নির্বাচন মেনে নেয়ার কথা বললেন পুতিন। তবে পুতিনের এমন স্পষ্ট বক্তব্যের পরও যুক্তরাষ্ট্র বলছে, নির্বাচনের পর নির্বাচিত সরকারের সাথে কাজ করার মধ্য দিয়ে মস্কোকে এর আগ্রহের প্রমাণ দেখাতে হবে। জাতিসঙ্ঘে রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত ভিতালি চারকিন বলেছেন, তার দেশ একটি ইতিবাচক ফলাফল প্রত্যাশা করছেন। তবে কিয়েভের সাথে মস্কো কাজ করতে রাজি নয়Ñ এমন বক্তব্য নাকচ করে দেন তিনি।
পুতিনের বক্তব্যের জবাবে ইউক্রেনের ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্রমন্ত্রী আন্দ্রি দেশচিটসিয়া বলেছেন, রাশিয়া যদি কিয়েভে নতুন সরকারকে সহযোগিতা করে তাহলে ইউক্রেন তা স্বাগত জানাবে।
হোয়াইট হাউজের একজন মুখপাত্র জে কার্নি বলেছেন, রাশিয়ার উচিত ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলে রুশপন্থীদের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় অংশ নিতে উদ্বুদ্ধ করতে হবে। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দফতরের আরেকজন মুখপাত্র মারি হার্ফ বলেছেন রুশপন্থী গ্রুপগুলো যে নির্বাচনে বাধার সৃষ্টি করছে তার প্রমাণ তাদের হাতে রয়েছে। ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলে সহিংস ঘটনার কারণে বিশেষ করে ডনেতস্ক ও লুহানেস্ক নির্বাচনী প্রস্তুতি বেশ বাধাগ্রস্ত হয়েছে।