আল্লাহর ওপর আস্থা ও তত্ত্বাবধায়ক বাতিলের ম্যান্ডেট আ’লীগের ছিল না

দেশে সাম্প্রতিক রাজনীতিতে সংকটের সবচেয়ে বড় দুটি কারন সংবিধান থেকে নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থা বাতিল এবং মহান আল্লাহর প্রতি আস্থা ও বিশ্বাসের বিষয়টি বাদ দেওয়া। অথচ আওয়ামী লীগের নির্বাচনী মেনিফেস্টোতে সংবিধান থেকে নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থা বাতিল কিংবা মহান আল্লাহর প্রতি আস্থা ও বিশ্বাস বাদ দেওয়ার বিষয় দুটি ছিল না। তাই সংবিধানের সর্বশেষ ১৫তম সংশোধনীর মাধ্যমে তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থা বাতিল এবং মহান আল্লাহর প্রতি আস্থা ও বিশ্বাস বাদ দেয়ার বিষয়টি বরং প্রশ্নবিদ্ধ তথা জনগণের চাওয়া পাওয়ার বিরোধী।
আর মহান আল্লাহর ওপর আস্থা ও বিশ্বাসের বিষয়টি বাদ দেয়ার মতো ঈমানের পরিপন্থী ঘোষণা দিয়ে ৯০% বিশ্বাসীর এই বাংলাদেশে কোনো দল আদৌ কি ক্ষমতায় আসতে পারত? তাছাড়া একটি দলের গঠনতন্ত্রে আল্লাহর প্রতি আস্থা ও বিশ্বাসের বিষয়টি তাদের গণতান্ত্রিক, সাংবিধানিক ও মৌলিক অধিকারের মধ্যে গণ্য। এছাড়া কোনো দলের গঠনতন্ত্রে তাদের বিশ্বাস ও আদর্শের বিষয়টি থাকতেই পারে এবং জনগণের সমর্থন নিয়ে তা এক সময় সাংবিধানিক রূপও পেতে পারে। এতে সমস্যার কি ছিল?
তাছাড়া আদর্শ ও মতামতের ভিন্নতাই গণতন্ত্রের সৌন্দর্য। শুধুমাত্র দলীয় গঠনতন্ত্রে মহান আল্লাহর ওপর আস্থা ও তাকে সকল ক্ষমতার উৎস বলার কারণে কোটি কোটি মানুষের সমর্থিত জামায়াতের মতো নিয়মতান্ত্রিক ও দেশের তৃতীয় বৃহত্তম রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন বাতিল করা কি জাতির জন্য খুব জরুরি ছিল?
গণতন্ত্র যদি বাংলাদেশের রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতি হয়, তাহলে গণতান্ত্রিক বিচারেই নব্বই ভাগ মানুষের বিশ্বাস, আকাঙ্ক্ষা ও অভিপ্রায়ের প্রতিফলন ঘটাতে হবে। দেশের ৯০% মানুষের ঈমানের ভিত্তি ইসলামী আদর্শের পরিবর্তন চাওয়াটাই সংবিধান তথা গণতন্ত্র পরিপন্থী।
জনগণের কাছে সংবিধান আওয়ামী লীগ, বিএনপি কিংবা ডান-বাম কোনো দলের দলীয় গঠনতন্ত্র নয়। প্রজাতন্ত্রের দলিল হতে হবে প্রজা বা জনগণের বিশ্বাস বিধৌত। সেই বিশ্বাস বাদ দিয়ে কোনো ‘ইজম’ যদি সংবিধানে রাখা হয় সেটা হবে জনগণের সাথে বিশ্বাসঘাতকতার শামিল। এ ধরনের ধৃষ্টতা প্রদর্শনের চেষ্টা করা হলে জনগণ ক্ষমা করবে না।
যদু-মধুদের আদর্শ তথা চেতনা নিয়ে রাজনীতি করলে যদি গণতন্ত্রে বাধা না থাকে, তাহলে মহান আল্লাহ প্রদত্ত আদর্শের কথা বললে সমস্যা কি? অন্ধকারপন্থী কুলাঙ্গারদের কথায় মুসলমানদের তাদের ঈমান তথা বিশ্বাসের আলোকে রাজনীতি নিষিদ্ধের প্রশ্নই ওঠে না।
ইতিপূর্বে সরকার আদালত ও নির্বাচন কমিশনকে দিয়ে ইসলামী আদর্শের রাজনীতি বন্ধের টালবাহানার পাশাপাশি জনবিচ্ছিন্ন ১১ জনের দল দিয়ে হরতাল ডেকে সহায়তা করছে। আল্লাহ এ পাপের প্রায়শ্চিত্ত না করিয়ে ছাড়বেন না। আপনাদের সাফল্য-ব্যর্থতা যা-ই থাকুক জনগণ সময়মতো যার যা প্রাপ্য পাইয়ে দেবে। আল্লাহর আদর্শের রাজনীতি নিয়ে নাড়াচাড়া করুন­ সেটা জনগণ প্রতিক্রিয়া জানিয়ে অভিমত জানাবে। দোহাই, ‘আল্লাহর দেয়া জীবন বিধান’র মতো স্পর্শকাতর বিষয়ে হাত দেবেন না। এটি ভারতের সাথে অসম চুক্তি নয়, বান্দার সাথে বোঝাপড়াও নয়। আল্লাহর সাথে অঙ্গীকার ভঙ্গের মতো বিষয়।

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও দেখুন...
Close
Back to top button