অর্থমন্ত্রীর ডানে-বামে…
চাঁদাবাজ-টেন্ডারবাজদের যুবলীগ করার অধিকার বা যোগ্যতা নেই। সংগঠনে কেউ এ ধরনের কাজ করলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। চলতি বছরের মার্চ মাসে রাজধানীতে ঢাকা মহানগর দক্ষিন যুবলীগের এক প্রতিবাদ সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এ কথা বলেছিলেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা ও অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত।
এসময় মঞ্চে তার বাম পাশে ছিলেন ঢাকা মহানগর যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক রিয়াজুল হক খান মিল্কি এবং ডানে ছিলেন সংগঠনের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক জাহিদ সিদ্দিকী তারেক। সম্প্রতি যুবলীগের এ দু’নেতাই চাঁদাবাজী আর আধিপত্য বিস্তারের ঘটনায় পৃথিবীর মায়া ছাড়তে হয়েছে।
যুবলীগ কেন্দ্রীয় চেয়ারম্যান ওমর ফারুক চৌদুরী এবং সাধারণ সম্পাদক হারুন-অর-রশিদও ওই সমাবেশেই অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। তারাও অর্থমন্ত্রীর কথায় সায় দিয়ে বলেছিলেন, বাংলাদেশ যুবলীগে কোনো চাঁদাবাজ, সন্ত্রাসী নেই। যুবলীগ একটি আদর্শ সংগঠন। সমাজের ভাল যুবক যারা তারাই যুবলীগ করে। যুবলীগ কোনো সন্ত্রাসীদের সংগঠন না।
গত ২৯ জুলাই রাত ১টার দিকে চাঁদাবাজির টাকা ভাগাভাগি এবং প্রভাব বিস্তারকে কেন্দ্র করে রাজধানীর গুলশানের শপার্স ওয়ার্ল্ড নামের একটি সপিং মলের সামনে যুবলীগ নেতা মিল্কিকে আলোচনার জন্য ডেকে নিয়ে প্রকাশ্যে মাথায় পিস্তল ঠেকিয়ে গুলি করে হত্যা করে যুবলীগ নেতা তারেক। আর এই পুরো ঘটনা রেকর্ড হয়ে থাকে ওই সপিং মলের সিসি ক্যমেরায়। যুবলীগ নেতার হাতে একই দলের অপর নেতা খুনের এ ঘটনা এখন তুমুল আলোচনা আর বিতর্কের ঝড় তুলেছে পুরো দেশ জুড়ে। অনলাইনে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতেও এ ঘটনার রেশ চলছে।
যুবলীগ নেতা খুনের ঘটনায় রাতেই আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে ধরা পড়ে যায় তারেক। এই হত্যা কান্ডের সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে বুধবার দুপুরে তাকে বহিষ্কার করে যুবলীগ। বহিষ্কারের দিন রাতেই র্যাবের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে তারেক এবং তার অপর এক সহযোগী প্রাণ হারায়।
মিল্কি হত্যা, তারেক এবং তার সহযোগী ক্রসফায়ারের এই ঘটনার পর যুবলীগ নিয়ে অর্থমন্ত্রীর বাহাস এবং যুবলীগ চেয়ারম্যান ও সাধারণ সম্পাদকের সাফাইসহ একই মঞ্চে এসব সন্ত্রাসীদের নিয়ে সভা সমাবেশ করার ছবি গত কয়েকদিন ধরে বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ঝড় তুলেছে।
আর এসব ছবি দেখে ফেসবুকসহ বিভিন্ন যোগাযোগ মাধ্যমে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ সম্পর্কে উঠে আসতে শুরু করেছে নানা মুখরোচক কাহিনী।
শুক্রবার সন্ধ্যায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে একটি ছবিটি পোস্ট করেন এক ফেসবুক ব্যবহারকারী। তিনি তার স্ট্যটাসে লিখেছেন “আবুল মালের ডাইনে বামে দুই ভাল মানুষ দাঁড়িয়ে আছেন, যারা কামড়া কামড়ি কইরা একে আরেকজনকে খায়া ফেলছে। আর লাল গেঞ্জি পরা আরিফুল হক পালাইয়া আছে… ”