আড়াই লাখ কোটি টাকার উচ্চাভিলাষী বাজেট পেশ
জাতীয় সংসদে ২০১৪-১৫ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট উত্থাপন করেছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। বাজেটের আকার ধরা হয়েছে ২ লাখ ৫০ হাজার ৫০৬ কোটি টাকা (জিডিপির ১৮.৭ শতাংশ)।
অনুন্নয়নসহ অন্যান্য খাতে বরাদ্ধ রাখা হয়েছে ১ লাখ ৭০ হাজার ১৯১ কোটি টাকা। বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে বরাদ্ধ রাখা হয়েছে ৮০ হাজার ৩১৫ কোটি টাকা। রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১ লাখ ৮২ হাজার ৯৫৪ কোটি টাকা।
বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে সাধ আর সাধ্যের সীমা ছাড়িয়ে আকাঙ্খা পুরনের এ বাজেট উত্থাপন করেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত। এটি ৫ জানুয়ারির একতরফা নির্বাচনপরবর্তী বর্তমান সরকারের দ্বিতীয় মেয়াদের প্রথম বাজেট। ২০১৪-১৫ অর্থবছরের জন্য প্রস্তাবিত এ বাজেট দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় বাজেট ।
প্রস্তাবিত বাজেট চলতি ২০১৩-১৪ অর্থবছরের বাজেটের চেয়ে ২৮ হাজার ১৫ কোটি টাকা বেশি। গত ২০১৩-১৪ অর্থবছরের এর আকার ছিলো দুই লাখ ২২ হাজার ৪৯১ কোটি টাকা।
৪৪তম এ বাজেট অধিবেশনে সভাপতিত্ব করছেন স্পিকার শিরিন শারমিন চৌধুরী ।
গতবারের ন্যায় এবারো উচ্চভিলাষী বাজেট ঘোষণা করেছেন অর্থমন্ত্রী। প্রস্তাবিত বাজেটে ঘাটতি রাখা হয়েছে ৬৭ হাজার ৫৫২ কোটি টাকা, যা জিডিপির ৫ শতাংশ, প্রবৃদ্ধি ধরা হয়েছে ৭.৩ শতাংশ।
ব্যক্তি ও প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ, বেসরকারি খাতের আস্থা, প্রযুক্তি খাত, সরাসরি বৈদেশিক বিনিয়োগ (এফডিআই), পদ্মা সেতু প্রকল্প, শিক্ষার মান বাড়ানো, মেট্রোরেল প্রকল্প, বুড়িগঙ্গা নদী দূষণমুক্ত করা, ডিজিটাল ভূমি জরিপ ব্যবস্থা, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ককে চার লেনে উন্নীতসহ ৩০টি খাততে গুরুত্ব দিয়ে আগামী বাজেট প্রণয়ন করা হয়েছে।
প্রস্তাবিত বাজেটে দশ জেলার নতুন উদ্যোক্তাদের জন্য বিশেষ কর সুবিধা প্রদান করা হয়েছে। জেলা গুলো হলো- রাজশাহী, খুলনা, সিলেট ও রংপুর জেলার সিটি কর্পোরেশন বহির্ভূত এলাকা এবং রাঙ্গামাটি, বান্দরবান ও খাগড়াছড়ি। তবে ঢাকা, গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ ও চট্টগ্রাম জেলার ক্ষেত্রেও এটা প্রযোজ্য হবে।
এ জেলাসমূহের নতুন উদ্যোক্তারা বাণিজ্যিকভাবে পণ্য উৎপাদনের প্রথম ১০ বছর পর্যন্ত বিশেষ কর সুবিধা পাবেন। এর মধ্যে প্রথম ২ বছর শতভাগ কর অবকাশ সুবিধা দেওয়া হবে। পরবর্তীতে তৃতীয় বছরে ৭০ শতাংশ, চতুর্থ বছরে ৫৫ শতাংশ, পঞ্চম বছরে ৪০ শতাংশ, ষষ্ঠ বছরে ২৫ শতাংশ এবং সপ্তম থেকে দশম বছর পর্যন্ত ২০ শতাংশ হারে কর অবকাশ সুবিধা পাবেন উদ্যোক্তারা।
২০১৪-১৫ অর্থবছরের প্রস্তাাবিত বাজেটে রিকন্ডিশন গাড়ির দাম কমানো হয়েছে। এ জন্য বাজেটে সিসি স্লাব পুনর্বিন্যাসসহ সম্পূরক শুল্কহার কমানোর প্রস্তাব করা হয়েছে। ফলে গাড়ির দাম ৪ থেকে ৫ লাখ টাকা কমার সম্ভাবনা রয়েছে। বাজেটে ১৫০০ সিসি পর্যন্ত মোটরগাড়ির সম্পূরক শুল্কহার নির্ধারণ করা হয়েছে ৪৫ শতাংশ। ১৫০১ থেকে ২০০০ সিসি পর্যন্ত ১০০ শতাংশ, ২০০১ থেকে ২৭৫০ সিসি পর্যন্ত ২০০ শতাংশ, ২৭৫১ সিসি থেকে ৪০০০ সিসি পর্যন্ত ৩৫০ শতাংশ ও ৪০০০ সিসির ঊর্ধ্বে গাড়ির জন্য ৫০০ শতাংশ সম্পূরক শুল্কহার ধার্য করা হয়েছে।
চলতি ২০১৩-১৪ অর্থবছরের বাজেটে রিকন্ডিশন গাড়ির ক্ষেত্রে ছয় স্তরবিশিষ্ট সিসি স্লাব ছিল। ১৫০১ থেকে ১৭৫০ সিসি পর্যন্ত ১০০ শতাংশ, ১৭৫১ থেকে ২০০০ সিসি পর্যন্ত ১৫০ শতাংশ, ২০০১ সিসি থেকে ২৭৫০ সিসি পর্যন্ত ৩৫০ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক নির্ধারিত ছিল।