রিফুয়েলিং স্টেশনের কাজ শেষ পর্যায়ে
সম্ভাবনার দুয়ার খুলে দেবে সিলেট-লন্ডন এয়ার ফ্লাইট
হুমায়ূন রশিদ চৌধুরী: সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে রিফুয়েলিং স্টেশন স্থাপনের কাজ শেষ পর্যায়ে। বর্তমানে এ প্রকল্পের কাজ ৯৫ ভাগ শেষ। কয়েকদিনের মধ্যেই ‘টেস্টিং’ হবে। রিফুয়েলিং প্রকল্পের প্রজেক্ট ডাইরেক্টর ইঞ্জিনিয়ার মো. আমিনুল হক জানান, টেস্টিং কাজ শেষ হলেই সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে সরাসরি আন্তর্জাতিক রুটে যে কোন এয়ারলাইন্সের উড়োজাহাজ উড্ডয়ন করতে পারবে। আর সেই সাথে সিলেটবাসীর দীর্ঘদিনের প্রত্যাশা পূরণ হবে—এমনি আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন সংশ্লিষ্টরা।
সিলেটে রিফুয়েলিং-এর কাজ শেষ করতে যেখানে এক বছর সময় লাগার কথা ছিল, সেখানে চার বছর অনেক কাঠখড় পোড়াতে হলো। ২০১০ সালের মাঝামাঝি সময় সিলেট বিমানবন্দরের রিফুয়েলিং স্টেশন নির্মাণের সিদ্ধান্ত হয় এবং ২০১২ সালে এর কাজও শুরু হয়। কিন্তু নির্ধারিত সময়ে কাজ শেষ হয়নি। সংশ্লিষ্টরা জানান, ভূমি সংক্রান্ত জটিলতাসহ বিভিন্ন কারণে প্রকল্পের কাজ শেষ করতে দেরি হয়েছে।
২০১২ সালের এপ্রিলের শেষ দিকে পদ্মা ওয়েলের তত্ত্বাবধানে ৫১ কোটি ১৮ লক্ষ টাকা ব্যয় বরাদ্দে সিলেটের দক্ষিণ সুরমায় ও ওসমানী বিমান বন্দরের ভিতরে রিফুয়েলিং স্টেশন নির্মাণ কাজ শুরুর আদেশ হয়। ২০১৩ সালের জুন মাসে প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হয়ার কথা ছিল। যথাসময়ে প্রকল্পটি বাস্তবায়িত না হওয়ায় ২০১৪ সালের জুন পর্যন্ত প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ানো হয়। প্রকল্প ব্যয় অতিরিক্ত দু’কোটি টাকা বেড়ে ৫৩ কোটি ১৮ লাখ টাকায় গিয়ে দাঁড়ায়।
সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরের পূর্বপাশে চলমান প্রকল্পটি সরেজমিনে দেখা যায়, কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। এখানে নির্মিত হয়েছে ১২ লাখ লিটারের তিনটি রিজার্ভেশন ট্যাঙ্ক, হাইড্রেন লাইন, ডিপো রিফুয়েলার ডিসপেনসার। অন্যদিকে দক্ষিণ সুরমার পদ্মা ওয়েলের ডিপোর এক একর জায়গার উপর নির্মিত হয়েছে রিফুয়েলিং স্টেশনের রিজার্ভ স্টেশন। এখানে নির্মিত হয়েছে তিনতলা অফিস ভবন, তিনটি স্টোরেজ ট্যাঙ্ক, পাইপ লাইন, বিদ্যুত্ কেন্দ্র, রেস্ট হাউজ, গ্যারেজ, অফিসার্স রুম ও স্টাফ রুম, দুটি ডিসপেনসার ও ফিল্টারিং ব্যবস্থা।
২০১১ সালের আগে বেশ কিছুদিন সিলেট-লন্ডন ফ্লাইট চালু ছিল। ঐ সালের ১৫ ডিসেম্বর ঘন কুয়াশার অজুহাতে সিলেট-লন্ডন ফ্লাইট বন্ধ হয়ে পড়ে। ২০১২ সালের ফেব্রুয়ারিতে সরাসরি ফ্লাইট চালু হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু দীর্ঘদিনেও তা হয়নি। বর্তমানে লন্ডন থেকে সিলেটে কয়েকটি উড়োজাহাজ আসলেও সিলেট থেকে লন্ডনে সরাসরি কোন উড়োজাহাজ যাচ্ছে না। সিলেট-লন্ডন সরাসরি ফ্লাইট চালু না হওয়ায় প্রবাসীরা ভোগান্তি পোহাচ্ছেন। আশা করা হচ্ছে সিলেটে রিফুয়েলিং সিস্টেম চালু হলে সিলেটবাসীদের দীর্ঘদিনের ভোগান্তি দূর হবে।
ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বিদ্যমান সুযোগ-সুবিধা ও রিফুয়েলিং সুবিধা চালু হলে প্রবাসী অধ্যুষিত সিলেট থেকে বিভিন্ন গন্তব্যে বিদেশি বিমান সংস্থা ফ্লাইট পরিচালনা করবে—এমনই মনে করেন সিলেট প্রবাসী যাত্রীরা।
আন্তর্জাতিক ফ্লাইট পরিচালিত হলে যাত্রীদের সুবিধা বৃদ্ধিসহ ব্যবসা-বাণিজ্যের নতুন দুয়ার উন্মোচিত হবে। সরকারও বিপুল পরিমাণ রাজস্ব আয় করবে।