টাওয়ার হ্যামলেটসে বেনিফিট ক্যাপ কার্যকর

Housingলন্ডনের অন্যতম দরিদ্র বারা টাওয়ার হ্যামলেটসে বেনিফিট ক্যাপ কার্যকর শুরু হয়েছে এই আগষ্ট মাস থেকেই। এর ফলে, যে সকল পরিবার কাজ করছে না, তাদের সাপ্তাহিক বেনিফিট পেমেন্ট সর্বোচ্চ ৫০০ পাউন্ড হবে। এই বেনিফিট ক্যাপের কারণে প্রায় ১৪শ পরিবার সপ্তাহে গড়ে ৯৬ পাউন্ড কম পাবে। টাওয়ার হ্যামলেটসের প্রায় ৪ থেকে ৫ হাজার শিশুর উপর এই বেনিফিট ক্যাপের প্রভাব পড়বে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এদিকে টাওয়ার হ্যামলেটস’ কাউন্সিল লন্ডনের অন্য যে কোন বারার তুলনায় অধিক সংখ্যক বাসিন্দাকে তাদের আর্থিক সংকটে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা প্রদান করেছে বলে সম্প্রতি এক প্রতিবেদনে জানা গেছে। লন্ডনের কাউন্সিলগুলোর আমব্রেলা সংস্থা ’লন্ডন কাউন্সিলস’’ কর্তৃক সংগৃহিত তথ্য-উপাত্তে দেখা যায় যে, টাওয়ার হ্যামলেটস’ কাউন্সিল বারার আর্থিক সংকটে থাকা ১২০০ অসহায় বাসিন্দাকে মোট ২ লাখ ৫২ হাজার পাউন্ড আপদকালীন অনুদান প্রদান করেছে। গত ১ এপ্রিল লোকাল ওয়েলফেয়ার এসিসট্যান্স স্কিমটি সরকারের কাছ থেকে স্থানীয় কর্তৃপক্ষের কাছে স্থানান্তরের পর থেকে এ পর্যন্ত প্রায় ৪ মাসে এই বিপুল সংখ্যক মানুষকে আর্থিক প্রদান করলো কাউন্সিল। লন্ডন কাউন্সিলস’ এর কাছে তথ্য প্রদানকারী কাউন্সিলগুলোর মধ্যে সর্বাধিক পরিমাণ অর্থ সহায়তা প্রদান করেছে টাওয়ার হ্যামলেটস’ কাউন্সিল। টাওয়ার হ্যামলেটস’ ছাড়া লন্ডনের ২৫ টি কাউন্সিলের গড় অনুদানের পরিমাণ হচ্ছে ৫৪ হাজার পাউন্ড। গত ১৭ জুলাই দ্যা চিলড্রেন্স সোসাইটি রিপোর্টে উল্লেখ করা হয় যে, অধিকাংশ কাউন্সিলই লকাল ওয়েলফেয়ার এসিসট্যান্স এর জন্য আবেদন পত্রে আগের তুলনায় বেশি কড়াকড়ি আরোপ করায় এই স্কীমের সহায়তা লাভের ক্ষেত্রে অনেক সংকুচিত হয়েছে এবং অনেক কাউন্সিল নগদ অর্থ সহায়তার পরিমাণও হ্রাস করেছে। টাওয়ার হ্যামলেটস’ কাউন্সিল এপ্রিল মাস থেকে প্রথম প্রান্তিকে ডিসক্রেশনারী হাউজিং পেমেন্ট খাতে প্রায় ৩ লাখ ৫০ হাজার পাউন্ড প্রদান করেছে, যার ৮৫ শতাংশ এই দেয়া হয়েছে কথিত ’বেডরুম ট্যাক্স’ এর কারণে আর্থিক চাপের মুখে পড়া পরিবারগুলোর সহায়তায়। সরকারের ওয়েলফেয়ার রিফর্ম বা সংস্কার কার্যক্রমের প্রভাবে যারা আর্থিকভাবে ক্ষতি ও চাপের মুখে পড়েছেন, তাদের জন্য গৃহিত স্থানীয় ওয়েলফেয়ার উদ্যোগের অংশ হিসেবে অতিরিক্ত এই অর্থ বরাদ্দ করা হয়েছে। আর্থিক চাপে পড়ে যাতে অসহায় বাসিন্দারা লোন শার্ক খ্যাত ঋণ প্রদানকারীদের খপ্পড়ে না পড়েন, সেজন্য কাউন্সিল বাসিন্দাদের অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনা বিষয়ক দক্ষতা বাড়াতে এবং আর্থিক প্রোডাক্ট ও সাপোর্ট সার্ভিসের সহযোগিতা নিয়ে কিভাবে ঋণ সমস্যা মোকাবেলা করা যায়, তা অবহিত করতে বিভিন্ন শিক্ষা ও সচেতনতামূলক কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। এ পর্যন্ত গোটা বারায় ৯টি অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনা বিষয়ক ইভেন্ট অনুষ্ঠিত হয়েছে, যেখানে ৭০০ জন বাসিন্দাকে প্রয়োজনীয় তথ্য ও উপাত্ত দিয়ে সহযোগিতা করা হয়। এ ছাড়া বেনিফিট ক্যাপ কার্যকর হওয়ার কারণে যারা আর্থিক চাপে পড়বেন এমন কয়েক শতাধিক বাসিন্দার ঘরে গিয়ে কাউন্সিল অফিসাররা ভবিষ্যত হাউজিং অপসন নিয়ে আলোচনা করেছেন। গত বছর প্রায় ৮ শতাধিক বাসিন্দার কর্মসংস্থান নিশ্চিত করার ক্ষেেেত্র কার্যকর ভূমিকা পালন করে কাউন্সিলের এমপ্লয়মেন্ট এন্ড স্কিলস’ সার্ভিস। এই সার্ভিস গ্রহণকারীদের সংখ্যাও লক্ষ্যনীয়ভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে। টাওয়ার হ্যামলেটসের মেয়র লুৎফুর রহমান বলেন, যাদের খুব বেশি আর্থিক সহযোগিতা দরকার, তেমন বিপুল সংখ্যক মানুষকে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা দিতে পেরে আমি গর্বিত। ওয়েলফেয়ার রিফোর্ম এর কারণে টাওয়ার হ্যামলেটসের বাসিন্দাদের ওপর যে আর্থিক চাপ পড়ছে, তা মোকাবেলায় আমাদের পক্ষ থেকে যতটুকু করা সম্ভব, আমরা তা করে যাবো। কাউন্সিলের হাউজিং বিষয়ক লীড মেম্বার, কাউন্সিলর রাবিনা খান এব্যাপারে মন্তব্য করতে গিয়ে বলেন, লন্ডনের আবাসন খাতের ওপর ক্রমবর্ধমান চাপ কমাতে সরকারকে অবিলম্বে একটি কার্যকর পদক্ষেপ নেয়া দরকার। এই চাপ হাউজিং মার্কেটকে নিয়ন্ত্রণহীন করছে। এই পরিস্থিতি ওয়েলফেয়ার রিফর্মের প্রভাবকে আরো নাজুক করে তুলছে, বিশেষ করে মহিলা ও শিশুদের ওপর এর প্রভাব পড়ছে মারাত্মকভাবে। -বাংলা টাইমস

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button