স্পেনকে ৫ গোলে বিধ্বস্ত করল নেদারল্যান্ড

Spaineরবিন ফস পার্সি এবং আরিয়েন রবেনের জোড়া গোলে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন স্পেনকে ৫-১ গোলে বিধ্বন্ত করে বিশ্বকাপে উড়ন্ত সূচনা করেছে নেদারল্যান্ড। একইসাথে ২০১০ সালের ফাইনালের মধুর প্রতিশোধও নিয়ে নিয়েছে ডাচরা। বর্তমান চ্যাম্পিয়নদের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচে কোন দলের এটাই সবচেয়ে বড় জয়।
তাছাড়া অর্ধশতকেরও বেশি সময় পরে স্প্যানিশদের সবচেয়ে বাজে ফলাফলও এটি। ১৯৬৩ সালে স্কটল্যান্ডের কাছে ৬-২ গোলে বিধ্বস্ত হওয়ার পরে স্পেন ৫১ বছর পরে গতকাল এতবড় ব্যবধানে পরাজয়ের তিক্ত অভিজ্ঞতা পেল।
ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের তারকা স্ট্রাইকার ফন পার্সি প্রথমার্ধের দূর্দান্ত হেডের মাধ্যমে গোলের সূচনা। এরপর নেদারল্যান্ডের পক্ষে চতুর্থ গোলটিও তিনি করেছেন। এছাড়া বায়ার্ন মিউনিখের তারকা রবেন দ্বিতীয়ার্ধে দুটি গোল করেন। অপর গোলটি এসেছে স্টিফেন ডি ভ্রিজের কাছ থেকে। যদিও অভিজ্ঞ মিডফিল্ডার জাবি আলোনসোর গোলে প্রথমে এগিয়ে গিয়েছিল ভিসেন্টে ডেল বস্কর দল। ব্রাজিলিয়ান বংশোদ্ভূত দিয়েগো কস্তাকে ফাউল করার অপরাধে স্পেন পেনাল্টি লাভ করলে স্পট কিক থেকে জাবি আলোনসো বর্তমান চ্যাম্পিয়নদের এগিয়ে দিয়েছিলেন। কিন্তু তারপরের গল্পটি পুরোটাই রচিত হয়েছে ডাচদের ঘিড়ে। ৪৪ মিনিটে ফন পার্সির হেড দিয়ে শুরু, এরপর তা শেষ করেছেন রবেন এবং সেন্টার ব্যাক ডি ভ্রিজ।
পুরো ম্যাচেই ফন পার্সি, রবেন এবং অভিজ্ঞ ওয়েসলি স্নেইডারকে নিয়ে সাজানো লুইস ফন গালের আক্রমনভাগ স্প্যানিশ ডিফেন্সকে দারুণ অসুবিধার মধ্যে রেখেছিল। তবে মূলত ডিফেন্ডার ড্যালে বিন্ডের লম্বা দুটি পাস থেকে নেদারল্যান্ডের প্রথম দুটি গোল আসে। প্রথম সুযোগটি অবশ্য সৃষ্টি করেছিলেন রবেন। তার পাস থেকে স্নেইডার স্প্যানিশ ডিফেন্সের পিছন থেকে জোড়ালো শট করলে স্পেনের অধিনায়ক ও গোলরক্ষক ইকার ক্যাসিয়াস গালাতাসারের এই তারকার শট আটকে দেন। লা রোজাদের পক্ষে আবারো নিজেকে মেলে ধরেছিলেন লেফট উইঙ্গার আন্দ্রেস ইনিয়েস্তা। কিন্তু সেই তুলনায় কস্তা ছিলেন কিছুটা নিশ্চুপ। প্রথম দিকে দুটি শটও তিনি নষ্ট করেন। ২৭ মিনিটে অবশ্য ডি বক্সের ভিতরে কস্তাকে ফাউল করার অপরাধে ইতালিয়ান রেফারী নিকোলা রিজোলি ডি ভ্রিজের বিপে পেনাল্টির নির্দেশ দেন। আলোনসো সহজেই স্পট কিক থেকে ডাচ গোলরক্ষক জাসপার সিলিসেনকে পরাস্ত করে বর্তমান চ্যাম্পিয়নদের এগিয়ে দেন। এর কিছুক্ষণ পরেই ডেভিড সিলভা ব্যবধান দ্বিগুন করার সুযোগ পেয়েছিলেন। কিন্তু সিলিসেন ম্যানচেস্টার সিটির এই তারকার শট তালুবন্দী করতে ভুল করেননি। ৪৪ মিনিটে বাম উইং থেকে বিন্ডের নিখুঁত একটি পাস ফন পার্সির দিকে গেলে দূর্দান্ত এক হেডে ইউনাইটেডের এই তারকা দলের পক্ষে সমতা ফেরান।
বিরতির পরপরই আবারো আয়াক্সের ডিফেন্ডার বিন্ডের অসাধারণ এক পাস গোল এরিয়র মধ্যে রবেনকে খুঁজে পায়। ৫৩ মিনিটে দুই স্প্যানিশ সেন্টার ব্যাক জেরার্ড পিকে এবং সার্জিও রামোসের মধ্য থেকে ব্যবধান দ্বিগুন করতে একটুও পিছনে ফিরে তাকাননি রবেন। ফন পার্সির একটি জোড়ালো শট ক্রসবারে না লাগলে পরমুহূর্তেই হয়ত দুই গোলে এগিয়ে যেতে পারতো ডাচরা। কিন্তু সেই সুযোগ ঠিকই কাজে লাগান ডি ভ্রিজ। ৬৪ মিনিটে স্নেইডারের একটি অসাধারণ ক্রস থেকে হেডের সাহায্যে দলের পক্ষে তৃতীয় গোল করেন এই সেন্টার ব্যাক। ৬৭ মিনিটে সিলভার আরেকটি প্রচেষ্টা সিলিসেন আটকাতে ব্যর্থ হলেও তা অফ সাইডের কারনে বাতিল হয়ে যায়। ক্যাসিয়াসের একটি ভুলের সুযোগে ৭২ মিনিটে নিজের দ্বিতীয় গোল পূর্ণ করেন ফন পার্সি। এই গোলটির জন্য পুরো দায় ক্যাসিয়াসের উপরে বর্তায়। যদিও ম্যাচে বেশ কয়েকটি গোলের সুযোগ আটকে দিয়ে তিনি ডাচদের গোলের সংখ্যা বাড়তে দেননি। ম্যাচের একেবারে শেষের দিকে ফন পার্সি তার অধিনায়কের আর্মব্যান্ড রবেনের কাছে ছেড়ে দিয়ে মাঠ ছেড়ে বাইরে যান। আর সেই সুযোগে ৮০ মিনিটে রবেন স্প্যানিশ ডিফেন্ডারদের নাঁচিয়ে দারুণ এক গোলের মাধ্যমে দলের পক্ষে পঞ্চম গোল উপহার দেন।

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও দেখুন...
Close
Back to top button