মিশরের নতুন প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ

Egyptমিশরের নতুন প্রেসিডেন্ট দেশের অভ্যন্তরে নিজের অবস্থান শক্তিশালী করার পাশাপাশি বহির্বিশ্বের সমর্থন লাভের জন্য ব্যাপক চেষ্টা চালাচ্ছে। মিশরের প্রেসিডেন্ট আব্দেল ফাত্তাহ আল-সিসি ও তার সরকারের নীতির বিরুদ্ধে দেশটির প্রভাবশালী ইসলামপন্থী সংগঠন ইখওয়ানুল মুসলিমিনের প্রতিবাদ বিক্ষোভ অব্যাহত থাকায় সিসির নেতৃত্বাধীন সরকারও সমগ্র দেশের ওপর নিজেদের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার চেষ্টা অব্যাহত রেখেছে।
ইখওয়ানের সমর্থকরা গতকাল আবারো মিশরের রাজধানী কায়রোর রাজপথে নেমে এসে নানা শ্লোগান দিয়ে প্রেসিডেন্ট সিসি ও তার সরকারের বিরুদ্ধে তাদের অবস্থানের কথা জানিয়েছে। মিশরের আল-আজহার বিশ্ব বিদ্যালয়ের ছাত্রীরাও গতকাল জেলখানায় কয়েকজন ছাত্রীকে আটক রাখার প্রতিবাদে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেছে এবং যত দ্রুত সম্ভব তাদেরকে ছেড়ে দেয়ার দাবি জানিয়েছে।
২০১৩ সালের জানুয়ারিতে সেনাবাহিনী নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট মুহাম্মদ মুরসিকে অপসারণ করার পর এর প্রতিবাদে ব্যাপক বিক্ষোভ দেখা দেয় এবং সে সময় ওই ছাত্রীদেরকে আটক করা হয়। কিন্তু এক বছর হয়ে গেলেও আটক ছাত্রীদেরকে এখনো ছেড়ে দেয়া হয়নি।
এদিকে, মিশরের সেনা সমর্থিত সরকার এক বছর আগে ইখওয়ানের বিরুদ্ধে যে তৎপরতা শুরু করেছিল এখনো তা অব্যাহত রয়েছে। ইখওয়ান বিরোধী তৎপরতার অংশ হিসেবে মিশরের আদালত গত বৃহস্পতিবার ইখওয়ান সমর্থক ১৫০ জনের বিচার শুরু করেছে। অভিযুক্তদের মধ্যে ক্ষমতাচ্যুত প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুরসির ভাইয়ের ছেলেও রয়েছে। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে থানায় অগ্নি সংযোগের অভিযোগ আনা হয়েছে।
ওদিকে, ইখওয়ানের সমর্থকদের বিচার করা হলেও মিশরের সাবেক স্বৈরশাসক হোসনি মুবারক আমলের এক মন্ত্রী দুর্নীতি ও প্রতারণার মামলা থেকে খালাস পেয়েছেন। হাবিব আল-আদলি নামের এ মন্ত্রীর বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিং এবং প্রতারণার মাধ্যমে অতিরিক্ত মুনাফা অর্জনসহ আরো কয়েকটি অভিযোগ ছিল। মুবারক আমলে এক দশকেরও বেশি সময় নিরাপত্তা সার্ভিসের দায়িত্ব পালন করেছিলেন তিনি। ২০১১ সালে মিশর বিপ্লবের সময় কয়েকশ’ মানুষ হত্যার জন্য তিনি এর আগে এক মামলায় যাবজ্জীবন সাজা পেয়েছেন। তবে, কৌশলগত কারণ দেখিয়ে এ অভিযোগও বাতিল করা হয়েছে। মিশরের জনগণের একটা বিরাট অংশ মনে করেন- সাবেক সেনাপ্রধান জেনারেল আবদেল ফাত্তাহ আল-সিসি ক্ষমতা দখল করার পর মুবারক আমলের মন্ত্রী ও ক্ষমতাধর ব্যক্তিরা বিশেষ সুবিধা পাচ্ছেন। এরই আওতায় হাবিব আদলিকে দুর্নীতির গুরুতর অভিযোগ থেকে মুক্তি দেয়া হয়েছে।
আরব লীগের আফ্রিকা বিষয়ক প্রধান সামির হোসেইনি আব্দেল ফাত্তাহ আল সিসির প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার কথা উল্লেখ করে বলেছেন, আফ্রিকান নিরাপত্তা ও শান্তি পরিষদ তাদের আগামী বৈঠকে মিশরে আফ্রিকান ইউনিয়নের কার্যক্রম শুরুর ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবে। তিনি আফ্রিকান ইউনিয়নের সদস্য পদ থেকে মিশরকে বাদ দেয়ার সিদ্ধান্তকেও ভুল আখ্যায়িত করেছেন।

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button