চীন সফরে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক দৃঢ় হয়েছে

Hasinaপ্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, চীন সফরে বাংলাদেশের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক দৃঢ় হয়েছে। অর্থনৈতিক ও সামাজিক দিক দিয়ে সার্বিকভাবে এই সফর সফল হয়েছে। শনিবার গণভবনে চীন সফর নিয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন। শেখ হাসিনা বলেন, চীন ও বাংলাদেশ মধ্যে ২০ দফা ইস্তেহার ও ৬টি দলিল সই হয়।
বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে, এগিয়ে যাবে এমন প্রত্যাশার কথা  জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ২০২১ সালের মধ্যে আমরা দেশকে মধ্যম আয়ের  দেশে পরিণত করবো। এজন্য আমরা বিদেশী বিনিয়োগ আনার জন্য কাজ করছি। দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে সবচেয়ে উন্নত ও শান্তির  দেশে পরিণত করতে চাই। আসুন যার যার অবস্থান থেকে কাজ করে যাই। আর সবাই সহযোগিতা করলে এটা বিষয় না। ২০২১ সালের মধ্যে একটি মধ্যম আয়ের দেশ ও ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত দেশ বাংলাদেশকে প্রতিষ্ঠিত করতে চাই। এই লক্ষ্য অর্জনে চীনের কাছে সহযোগিতা চেয়েছি।
তিনি বলেন, বাংলাদেশকে দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে সবচেয়ে উন্নত ও শান্তির দেশ হিসেবে গড়ে তুলতে চাই। সবার সহযোগিতা থাকলে এ কাজ কঠিন হবে বলে আমি মনে করি না। সার্বিক বিবেচনায় চীনের সাথে সব ক্ষেত্রে সহযোগিতা ও বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক হবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, চীন সফরে দ্বিপাক্ষিক, আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক সম্পর্ক নিয়ে আলোচনা হয়েছে। এছাড়া বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নতি নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে ।
এক প্রশ্নের জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, স্বাধীনতাকে অর্থবহ করতে আমার সবার সাথে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক চাই। বর্তমান সরকারের পররাষ্ট্রনীতি হল-সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব কারো সঙ্গে বৈরিতা নয়। জনগণের কল্যাণে যা প্রয়োজন তাই করবে সরকার।
সাবেক প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান হত্যাকাণ্ডের বিচারের জন্য বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও তার বড় ছেলে তারেক রহমানকে আগে রিমান্ডে নিতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
‘জিয়া হত্যার জন্য শেখ হাসিনাকে রিমান্ডে নিতে হবে’ তারেক রহমানের এমন বক্তব্যের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে প্রধানমন্ত্রী বলেন, খালেদা জিয়া ১৯৯০ সালে গুলিস্তানের এক জনসভায় জিয়ার হত্যাকাণ্ডের জন্য হঠাৎ এরশাদকে খুনি হিসেবে আখ্যায়িত করেছিলেন। কিন্তু যাকে খুনি হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন তার কাছ থেকেই দুটি বাড়ি ও গাড়ি নিয়েছেন। এছাড়া খালেদা জিয়া ও তার ছেলেকে আমি প্রশ্ন করবো, জিয়া হত্যার পর তারা কেন লাশ দেখতে যায়নি। তাই রিমান্ডে নিলে আগে মা-ছেলেকে নিতে হবে। কারণ তাদের কতটুকু সম্পৃক্ততা আছে সেটা আগে দেখতে হবে।
‘সংলাপে বসতে বিএনপি যে কোন সময় রাজি’ ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন প্রতিনিধিকে দেয়া খালেদা জিয়ার এমন বক্তব্যের বিষয়ে জানতে সাংবাদিকরা চাইলে শেখ হাসিনা বলেন, উনাকে (খালেদা জিয়া) তো আমি নিজে টেলিফোন করেছিলাম। এরপর ফোনে তিনি আমাকে যে ঝাড়ি দিয়েছেন সেটা তো আপনারা দেখেছেন। এছাড়া কাদের সাথে সংলাপে বসবো। খুনিদের সাথে। গত ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের আগে আন্দোলনে কত মানুষকে হত্যা করেছে, দেশের কি ক্ষতি করেছে। কারণ তারা একদিকে বলে সংলাপ আরেক দিকে বলে রিমান্ডে নেবে। তাদেরকেই আগে ঠিক করতে হবে তারা কি চায়।
ফলমূলে ফরমালিনের ব্যবহার নিষিদ্ধের ব্যাপারে শেখ হাসিনা বলেন, ফরমালিন আমদানি তো আর বন্ধ করা যাবে না। তবে এর ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।
উল্লেখ্য, গত ৬ জুন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চীনের প্রধানমন্ত্রী লি কেকিয়াংয়ের আমন্ত্রণে ছয়দিনের এক সরকারি সফরে ওই দেশে যান। সফরে দুই দেশের প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে আনুষ্ঠানিক আলোচনা ছাড়াও ঢাকা ও বেইজিংয়ের মধ্যে দুটি চুক্তি ও তিনটি সমঝোতা স্মারক সই রয়েছে।
চুক্তিগুলো হচ্ছে- বাংলাদেশ ও চীনের মধ্যে অর্থনৈতিক ও কারিগরি সহযোগিতা এবং পটুয়াখালীতে যৌথ উদ্যোগে কয়লাভিত্তিক গুরুত্বপূর্ণ বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রতিষ্ঠা।
সমঝোতা স্মারকগুলো হচ্ছে- চট্টগ্রামে চীনের অর্থনৈতিক ও বিনিয়োগ অঞ্চল প্রতিষ্ঠা, কর্ণফুলী নদীর তলদেশে টানেল নির্মাণ এবং মুন্সিগঞ্জ জেলার গজারিয়ায় গার্মেন্ট পল্লী প্রতিষ্ঠা।

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও দেখুন...
Close
Back to top button