ব্রিটেনের মসজিদে অব্যাহত হামলায় আতঙ্কিত মুসলমানরা

UKব্রিটেনের বিভিন্ন মসজিদে ফ্যাসিস্ট গ্রুপের অব্যাহত অভিযান, সাম্প্রদায়িক লিফলেট বিতরন, এবং মুসল্লিদের ভয়ভীতি প্রদর্শনের প্রেক্ষিতে মুসলিম কমিউনিটি নেতৃবৃন্দ এর বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন। তারা হুঁশিয়ারী উচ্চারণ করে বলেন, এ ধরনের কষ্টদায়ক কর্মকা- মুসলিম যুবকদেরকে সংঘাতের দিকে প্ররোচিত করবে।
লিউটন কেন্দ্রীয় মসজিদের প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ শাফায়াত  গত বুধবার মর্নিং স্টারকে বলেন, এসব ঘটনায় জনগণ খুবই ক্ষুব্ধ ও আতঙ্কিত।
তিনি সারা দেশে এ ধরনের দুর্ব্যবহারের শিকার লোকদের কাছে ছুটে যাচ্ছেন। বিগত সপ্তাহগুলোতে চরম ডানপন্থী বৃটেন ফার্স্ট পার্টির সদস্যরা  লন্ডন, ব্র্যাডফোর্ড, এবং গ্লাসগোর বিভিন্ন মসজিদে হামলা চালায় এবং সেখানে বাইবেল ও খৃষ্টানদের প্রচারপত্র বিলি করে।
ব্রিটিশ ন্যাশনাল পার্টির একটি শাখা হচ্ছে বৃটেন ফার্স্ট। আর তাদের প্রতিনিধিদের মতে মুসলমানদের বিরুদ্ধে প্রচারণা এবং মসজিদে অভিযান খৃষ্টান ধর্মযুদ্ধের অংশ। ঐ দলটি চলতি মাসে অনুষ্ঠেয় স্থানীয় এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের নির্বাচনেও অংশ নিচ্ছে।
খৃষ্টানদের এ ধরনের অভিযানের কারণে মুসলমানদের মধ্যে তাদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে।
চরমপন্থী বৃটেন ফার্স্ট পার্টির নেতা এবং ব্রিটিশ ন্যাশনাল পার্টির সাবেক কাউন্সিলর পল গোল্ডিংয়ের পোষ্ট করা একটি ভিডিও ক্লিপ দেখার পর শাফায়াত প্রচন্ড ক্ষুব্ধ হন , যাতে দেখা যায় তিনি তার দলবল সহ বীরবিক্রমে মসজিদে প্রবেশ করছেন সেখানকার মুসল্লীদের ভয় দেখাচ্ছেন এবং সেখানে সাম্প্রদায়িক লিফলেট ও বাইবেল বিতরণ করছেন। ভিডিও ক্লিপটির শেষাংশে মসজিদে অবস্থানরত মুসল্লীদের উদ্দেশ্য করে বলা হচ্ছেÑ “তোমরা কি অসুস্থ যে হাতের ওপর ভর করে বসে আছো কোন কাজ করছো না?”
লিউটনের ৪০ হাজারেরও বেশী মুসলমানের নেতা শাফায়াত  ঐ ভিডিও বর্ণনার জবাবে বলেন, তিনি একজন সন্ত্রাসীর মতো কাজ করছেন। সাম্প্রদায়িকতা বিরোধী সংগঠন হোপ নট হেইট-এর মুখপাত্র সিমন ক্রেজী মসজিদে খৃষ্টান অভিযানকে ন্যক্কারজনক ঘটনা হিসেবে বর্ণনা করেছেন।
ক্রেজী বলেন, এটি একটি চমৎকার ন্যক্কারজনক ঘটনা। তারা ধর্মীয় এবং জাতিগত বিরোধকে নির্মূল করতে চায় বলেও তিনি উল্লেখ করেন। লিউটন মসজিদের প্রেসিডেন্ট এ ঘটনায় দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য অনুরোধ জানিয়েছিলেন এবং বার বার পুলিশ ডেকেছিলেন কিন্তু পুলিশ কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি।
হতাশা ব্যক্ত করে শাফায়াত আরো বলেন, আমি চাই না কেউ আইন তার নিজের হাতে তুলে নিক। কে মুসলমান আর কে খৃষ্টান সেটি কোন বিবেচনার বিষয় নয়, সবাই আইনের অধীনে সে যেই হোক।
তিনি আরো বলেন, ভিডিওতে যেটা দেখানো হয়েছে সেটা তিনি করতে পারেন না। তিনি যা করেছেন অন্যান্য দলের সদস্যদেরও তা দেখানোর  জন্য ভিডিও তৈরী করেছেন। আসলে সে একজন সন্ত্রাসী। একটা কাপুরুষ। বৃটেনে বর্তমানে ২০ লাখেরও বেশী মুসলমানের বসবাস। ফিনেন্সিয়াল টাইমস-এর এক জরিপে বলা হয়েছে বৃটিশরা মুসলমানদের ব্যাপারে বেশ সন্দেহপ্রবণ জাতি। ইভিনিং স্ট্যান্ডার্ড-এর এক জরিপে দেখা যায়, লন্ডনবাসীর  একটি বড় অংশ মুসলমানদের ব্যাপারে নেতিবাচক মনোভাব পোষণ করে।

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও দেখুন...
Close
Back to top button