ইতালিকে হারিয়ে কোস্টা রিকার ইতিহাস
প্রথম ম্যাচে দুই বারের চ্যাম্পিয়ন উরুগুয়েকে নাজেহাল করার পর চার বারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ইতালিকে হারিয়েছে কোস্টা রিকা। ব্রায়ান রুইসের একমাত্র গোলের এই জয়ে মৃত্যুকূপ ‘ডি’ গ্রুপে তিন বিশ্ব চ্যাম্পিয়নকে রেখে সবার আগে দ্বিতীয় রাউন্ডে উঠলো মধ্য আমেরিকার দেশটি।
ছয় মাস আগে বিশ্বকাপের ড্র দেখে ফুটবলবোদ্ধাদের আফসোস ছিল, ‘ডি’ গ্রুপ থেকে তিন বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের মধ্যে দু’টি কেবল পরের রাউন্ডে যাবে। কোস্টা রিকার দাপটে এখন একটি নয়, দুটি বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন দল ‘নক-আউট’ হয়ে যাচ্ছে গ্রুপ পর্ব থেকেই।
কোস্টা রিকার এই জয়ে এক ম্যাচ বাকি থাকতেই বিদায় নিল ইংল্যান্ড। আর শেষ ম্যাচে উরুগুয়ে-ইতালির ম্যাচের উপর নির্ভর করবে এই দুই দলের কোনটি সঙ্গী হবে কোস্টা রিকার, আর কোনটি সঙ্গী হবে ইংল্যান্ডের।
শুক্রবার রেসিফির আরেনা পের্নামবুকোয় প্রথম ত্রিশ মিনিট প্রতিপক্ষের শক্তি পরখ করে নিচ্ছিল ইতালি ও কোস্টা রিকা। নিজেদের রক্ষণ সামলে আক্রমণে যাওয়ার চেষ্টা করছিল দুই দলই, এই সময়ে তেমন কোনো সুযোগ তৈরি করতে পারেনি তারা।
প্রথম সত্যিকারের সুযোগটি পেয়েছিল ইতালি। ৩১তম মিনিটে আন্দ্রেয়া পিরলোর পাস থেকে বিপজ্জনক জায়গায় বল পেয়েছিলেন মারিও বালেতোল্লি। গোলরক্ষক কেইলর নাভাসের মাথার ওপর দিয়ে পাঠালেও লক্ষ্যে রাখতে পারেননি তিনি।
দুই মিনিট পর আরেকটি সুযোগ পেয়েছিলেন বালোতেল্লি। পিরলোর ক্রসে চিয়াগো মোত্তার ফ্লিক খুঁজে পেয়েছিল এসি মিলানের স্ট্রাইকারকে। এবার সরাসরি নাভাসের দিকে মেরে সুযোগটি হাতছাড়া করেন এই মেজাজি স্ট্রাইকার।
৩৭তম মিনিটে প্রথম সুযোগটি পায় কোস্টা রিকা। ক্রিস্তিয়ান বোলানোসের শট ঝাঁপিয়ে পড়ে ব্যর্থ করে দেন জানলুইজি বুফ্ফন।
৪৩তম মিনিটে কোস্টা রিকাকে পেনাল্টি থেকে বঞ্চিত করেন রেফারি এনরিকে ওসেস। বিপজ্জনক গতিতে ডি বক্সে ঢুকে পড়া হোয়েল ক্যাম্পবেলের সঙ্গে ছিলেন কেবল জর্জো কিয়েল্লিনি। ইতালির ডিফেন্ডার তাকে ফেলে দিলেও পেনাল্টি দেননি রেফারি।
তবে পরের মিনিটেই এগিয়ে যায় কোস্টা রিকা। বাঁ দিক থেকে জুনিয়র দিয়াসের বাঁকানো ক্রস থেকে ব্রায়ান রুইসের হেড ক্রসবারের নিচে লেগে গোললাইন অতিক্রম করলে উল্লাসে মেতে উঠে কোস্টা রিকা শিবির।
সমতা ফেরাতে দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে কোস্টা রিকার রক্ষণভাগের ওপর মারাত্মক চাপ তৈরি করে চেজারে প্রানদেল্লির শিষ্যরা। তার ফল পেয়ে যাচ্ছিল ইতালি, কিন্তু তাদের হতাশ করেন কোস্টা রিকার গোলরক্ষক।
৫১তম মিনিটে মাত্তেও দারমিয়ানের দূর পাল্লার শট কর্নারের বিনিময়ে রক্ষা করেন নাভাস। দুই মিনিট পর পিরলোর ফ্রি কিক ঝাঁপিয়ে ব্যর্থ করে দেন তিনি।
এগিয়ে থাকলেও রক্ষণাত্মক ফুটবল খেলেনি কোস্টা রিকা। ইতালির আক্রমণ ব্যর্থ করে দেয়ার পরক্ষণেই পাল্টা আক্রমণে যাওয়ায় নিজেদের রক্ষণও সামলাতে হচ্ছিল ইতালিকে।
উরুগুয়েকে ৩-১ গোলের হারের লজ্জায় ডোবানের পর এই অসাধারণ জয়, ব্রাজিল বিশ্বকাপে নিজেদের প্রথম দুই ম্যাচেই শীর্ষ দশের দুই দলকে হারালো কোস্টা রিকা। আর ইংল্যান্ডের সঙ্গে না খেলেই বিদায় করে দিল তাদের।